রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫ - ১৪:৪৫
'শিয়া' বা 'সুন্নী' কোন দল নয় 

দ্বীন ইসলাম যাতে বিভক্ত না হয়, তার জন্য আল্লাহ ও তাঁর হাবিব হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) তাঁর আহলে বাইতকে দ্বীনের অধিকর্তা হিসাবে রেখে গেছেন৷ 

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, 'শিয়া' ও 'সুন্নী' এই দুটি পৃথক পৃথক শব্দ ব্যক্ত করে আপনি বলতে চায়ছেন যে, ইসলাম দুটি দলে বিভক্ত হয়েছে৷ 
কিন্তু আমি জোরালো ভাবে প্রতিবাদ করে বলতে চাইছি - এটি সম্পূর্ণ ভুল কথা৷ আপনি না জেনে মানুষের বলা নানান ভুলভাল কথার পরিবর্তে ইসলামের নামে এই মিথ্যা কথা প্রচার করছেন৷ বরং আল্লাহর প্রেরিত পবিত্র ইসলাম অবিভক্ত, ইসলামের কোন ভাগ হয়নি৷

আপনি হইতো জানেন না, তাই জেনে নিন— 
(১) 'আল্লাহর প্রেরিত ও নবী (সঃ) প্রচারিত এই মহৎ দ্বীন-ইসলামটি অবিভক্ত" 
(২) আল্লাহ যেমন এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর প্রেরিত দ্বীন-ইসলামও এক অদ্বিতীয়৷ 
(৩) আল্লাহ ও তাঁর হাবিব হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) যেমন পবিত্র, তাঁর প্রেরিত দ্বীন-ইসলামও পবিত্র৷ 
— তাই ইসলাম কখনই ভাগ হয়নি, সুধু এতটুকু নয়, বরং দ্বীন ইসলাম যাতে বিভক্ত না হয়, তার জন্য আল্লাহ ও তাঁর হাবিব হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) তাঁর আহলে বাইতকে দ্বীনের অধিকর্তা হিসাবে রেখে গেছেন৷ 

রেখে গেছেন এজন্য উন্মাত নবী পরবর্তী সময়ে নবীর ন্যায় তাঁর পবিত্র আহলে বাইতকেও সম পরিমানে ঈমানী চেতনায় মান্যতা দিয়ে তাঁদের ভালোবাসবেন এবং আহলে বাইতের নির্দ্দেশ পালনে সদা তৎপর থাকবেন৷ 
উম্মাত যাতে বিভক্ত না হয় তার জন্যই প্রিয় নবী তাঁর আহলে বাইত'কে দ্বীনের অধিকর্তা হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন আল্লাহপাকের নির্দ্দেশে৷  

কিন্তু দুঃখের বিষয়, অর্থাৎ বড় পরিতাপের কথা হলোঃ 
(১) মুসলমানরা আল্লাহর বান্দা দাবী করে নবী চলে যাবার পরই আল্লাহ'র  নির্দ্দেশ মানে নি৷ 
(২) নবীর উম্মাত দাবী করেও নবীকেই অবজ্ঞা করেছে নবীর উম্মাতেরা৷ 
— এর ফলে নবীর পরেই মুসলমান নিজেদের মধ্যে জাতি বিদ্বেষে মেতে উঠেছিল৷ নিজেদের মধ্যেই জামাল যুদ্ধ, সিফফিন যুদ্ধ বা কারবালার প্রন্থরে মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নিজেরাই দলে দলে বিভক্ত হয়েছে৷

বলা বাহিল্য  যারা নবীর  আহলে বাইতকে দ্বীনের গুরূত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে মান্যতা দেননি তারা আল্লাহর প্রেরিত  দ্বীনের মধ্যেই নেই৷ তারা কোন প্রচলিত ইসলামিক দল নয়৷
আল্লাহ ও আল্লাহর হাবিবের রেখে যাওয়া দ্বীনকে পরিত্যাগ করে তারা নিজেরা নিজের মত করে দ্বীন তৈরী করেছে ও আজও নতুন নতুন দ্বীন তৈরী করে চলেছে, তারা সম্পূর্ণ বাতিল৷

 দ্বীনের ইমাম বা খলিফা বা  নেতা বানানো কাজ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপরে অর্পন করেন নি ৷ এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নবীও তাঁর উম্মাত'কে দেন নি৷ 
বরং আল্লাহপাক নিজে দ্বীনের ইমাম বা নেতা বা খলিফা বানিয়ে তাঁর প্রেরিত সম্মানিত নবী (সঃ) দ্বারা ঘোষনা করিয়েছেন ৷ আর নবী (সঃ) অবশ্যই আল্লাহ'র মনোনীত দ্বীনের ইমাম বা নেতার দ্বীনি পরিচিতি সুস্পষ্টভাবে ঘোষনা করে দিয়ে গেছেন৷ 

কিন্তু দুঃখের বিষয় বেশির ভাগ উম্মাত নবী ঘোষিত সেই ইমামকে মানে নি৷ যারা আল্লাহ মনোনিত ইমাম মানে নি, তারা দল নয়, বরং তারা বাতিল৷ 
আসলে 'শিয়া' বা 'সুন্নী' নামের ভাষা প্রয়োগ করে নিজেদের ইসলামের নামে ইসলামের 'দল' হিসাবে পরিচিতি দেন এজন্য যে, তারা তাদের নিজেদের মনমত ধর্ম তৈরী করে নিজেদের অপকর্মের দায় পবিত্র আল্লাহ ও সম্মানিত পবিত্র নবীর নামে চাপিয়ে দিতে চান৷ 
আর একটি বড় জুলুম, এটি একটি কুফরি ৷ আল্লাহর নামে বা নবীর নামে চালানো এই মিথ্যা অপবাদ আমরা হতে দেবো না, বরং অবশেষে এটাই বলতে চাই 'শিয়া' বা 'সুন্নী' কোন দল নয়৷

রিপোর্ট:  মুস্তাক আহমদ

দ্রষ্টব্য: হাওজা নিউজে প্রকাশিত সমস্ত নিবন্ধ লেখকদের ব্যক্তিগত মতামতের উপর ভিত্তি করে। হওজা নিউজের নীতি লেখকের মতামতের সাথে একমত হওয়া জরুরী নয়।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha