হাওযা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ আরাফি (দেশের হাওযা সমূহের পরিচালক) কোম হাওযার শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি পরিষদ ও সম্মানিত আলেমদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে এই কথা বলেন। বৈঠকটি হাওযা প্রধানের দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তিনি পবিত্র ফাতিমা মাসুমা (সা.)-এর ক্বোমে আগমনের বার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন: আমরা দোয়া করি যেন নতুন শিক্ষাবর্ষ ইমাম মাহদী (আ.)-এর বরকতে হাওযা ও ইসলামী সমাজের জন্য সমৃদ্ধ হয়।
তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি পরিষদের সেবাকে “অমূল্য” বলে উল্লেখ করেন এবং তাদের কর্মতৎপরতা, সময়োপযোগী অবস্থান গ্রহণ এবং সক্রিয় উপস্থিতির প্রশংসা করেন। তাঁর মতে, আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি মূল্যবান পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রথম গুরুত্বপূর্ণ দিক
এ বছর প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মের ১৫০০ বছর পূর্তি। এ উপলক্ষে শিক্ষামূলক, গবেষণামূলক ও দাওয়াতি কার্যক্রমগুলোতে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। তিনি জানান, আলাদা দল গঠন করা হয়েছে যাতে হাওযা সমাজকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে গভীরভাবে পরিচিত করা যায় এবং এ জ্ঞান সাধারণ মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া যায়। প্রতিনিধি পরিষদকেও এ বিষয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিক
সর্বোচ্চ নেতা এ বছরের সাংস্কৃতিক স্লোগান হিসেবে “নাহজুল বালাগা”-এর প্রতি মনোযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এজন্য হাওযায় বিশেষ কমিটি গঠন হয়েছে, যারা পাঠ্যক্রম, গবেষণা ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম উন্নয়নে কাজ করছে। প্রতিনিধি পরিষদকে এ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কথোপকথন গঠন ও প্রসারে সক্রিয় হতে হবে।
তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিক
আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেন: সর্বোচ্চ নেতার উত্থাপিত “অগ্রগামী ও শ্রেষ্ঠ হাওযা” বার্তাটি কোম হাওযার জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ক্বোম হাওযার ইতিহাসকে তিনি দুই ভাগে ভাগ করেন—একশো বছরের পূর্বে ও পরের ইতিহাস।
পূর্ববর্তী যুগে ছয়টি ধাপ ছিল, যেখানে উত্থান-পতন সত্ত্বেও ধারাবাহিকতা বজায় ছিল।
পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর (আয়াতুল্লাহ শাইখ আবদুল করিম হায়েরি ইয়াজদী (রহ.) দ্বারা):
১. হায়েরি থেকে শুরু করে “আয়াতুল্লাহ সালাস” পর্যন্ত যুগ।
২. আয়াতুল্লাহ বোরুজেরদীর ১৭ বছরের সময়কাল।
৩. ইমাম খোমেইনীর (রহ.) আন্দোলন ও নির্বাসনকাল।
৪. ইমাম খোমেইনীর (রহ.) নেতৃত্বকাল।
৫. ইসলামী বিপ্লব থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ নেতা ও মারাজে আজমার যুগ।
৬. নতুন যুগ—যা সর্বোচ্চ নেতার “অগ্রগামী ও শ্রেষ্ঠ হাওযা” বার্তার মাধ্যমে শুরু হয়েছে।
বার্তার বৈশিষ্ট্য
হাওযার বিভিন্ন পরিকল্পনা, নীতি ও সংস্কারমূলক দিকনির্দেশনা আসলে সর্বোচ্চ নেতার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অনুপ্রাণিত। এ বার্তাটি গভীর, সভ্যতামূলক ও বিপ্লবী চেতনায় পূর্ণ। এখানে পাঁচটি মূল অক্ষ এবং হাওযার ঐতিহাসিক বিবর্তন নিয়ে সর্বোচ্চ নেতার দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে।
এটি বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক, প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন গোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণে কথোপকথন গঠন অপরিহার্য।
আহ্বান
শেষে আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেন: শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি পরিষদকে এ গুরুত্বপূর্ণ বার্তার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে এবং দুটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে—
১. কথোপকথন গঠন (ডিসকোর্স-মেকিং)
২. বার্তার বিভিন্ন দিক ও মূল বিষয়ের বিশ্লেষণ।
বৈঠকের শুরুতে হুজ্জাতুল ইসলাম ও মুসলিমীন রেজভি মেহর (প্রতিনিধি পরিষদের সভাপতি) তাদের কার্যক্রমের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
আপনার কমেন্ট