বুধবার ১৯ নভেম্বর ২০২৫ - ১৫:০৭
ইবনে তায়মিয়ার উদ্ধৃতি ঘিরে নতুন বিতর্ক: ঐতিহাসিক যুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন গবেষকরা

ইবনে তায়মিয়ার উদ্ধৃতি অনুযায়ী, নবী মুহাম্মদ (সা.)–এর ইন্তিকালের পর আমীরুল মুমিনীন আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) তিনটি বড় যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ঐতিহাসিক গ্রন্থ ও ইসলামী ইতিহাস নিয়ে গবেষণার অঙ্গনে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ইবনে তায়মিয়ার একটি মন্তব্য। সম্প্রতি তার বিখ্যাত ফতোয়া-সংকলনের ৪৯৩তম পৃষ্ঠায় উদ্ধৃত একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ইতিহাসবিদ ও গবেষকদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

ইবনে তায়মিয়ার উদ্ধৃতি অনুযায়ী, নবী মুহাম্মদ (সা.)–এর ইন্তিকালের পর আমীরুল মুমিনীন আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) তিনটি বড় যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন—জামাল, সিফফিন ও নাহরওয়ান। তিনটিই সংঘটিত হয় তার খেলাফতের সময়। এসব যুদ্ধে অংশ নেন সাহাবি তলহা, যুবায়ের, মু‘আবিয়া এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। ঐতিহাসিক বর্ণনায় দেখা যায়, প্রত্যেকেই সে সময় ভিন্ন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অবস্থান থেকে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছিলেন।

গবেষকদের নতুন প্রশ্ন

এই বিষয়টি সামনে এনে কিছু গবেষক প্রশ্ন তুলছেন—
খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগে মুসলিম সেনাবাহিনী যখন পারস্য, আফ্রিকা, তাবারিস্তান বা খোরাসান অঞ্চলে অমুসলিম শক্তির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাচ্ছিল, তখন আলী (রা.) কেন এসব অভিযানে সক্রিয় ভূমিকা রাখেননি?
অন্যদিকে, নিজের খেলাফতের সময়ে কেন তিনি অভ্যন্তরীণ সংঘাতে নেতৃত্ব দিতে বাধ্য হলেন—এই প্রশ্নটিও নতুনভাবে আলোচনায় এসেছে।

ঐতিহাসিকদের ব্যাখ্যা

বিভিন্ন ইতিহাসবিদ মনে করেন, আলী (রা.) খেলাফত গ্রহণের সময় থেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রশাসনিক অচলাবস্থা এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীর চাপে আক্রান্ত ছিলেন। ফলে বাহ্যিক অভিযানে মনোযোগ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। অন্যদিকে, বিরোধপূর্ণ পক্ষগুলোও নিজেদের অবস্থানকে ধর্মীয় বা রাজনৈতিক যুক্তির ভিত্তিতে সমর্থন করেছিল।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করার আহ্বান

ঐতিহাসিকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ইসলামের প্রারম্ভিক যুগের এসব ঘটনা মূলত রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংকটের অংশ ছিল। সেগুলোকে বর্তমান সময়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা মতবিরোধে রূপ দেওয়া ইতিহাসকে বিভক্তভাবে দেখার ঝুঁকি তৈরি করে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha