শনিবার ২২ নভেম্বর ২০২৫ - ২০:২৩
কাজ এমনভাবে করো যেন তা তোমার অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে

প্রত্যেক কাজ এমনভাবে সম্পন্ন করো যেন মনে হয় তা চিরকাল তোমার সঙ্গে থাকবে; কারণ মানুষের কর্মফল কখনোই তাকে ছেড়ে যায় না। তুমি কোন কাজ করছো তা যত না গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো—তুমি সেই কাজ ভালোবাসা, মনোযোগ ও দায়িত্ববোধ দিয়ে করছো কি না। এ পৃথিবীর জন্য এমনভাবে কাজ করো যেন তুমি এখানে চিরদিন থাকবে, আর পরকালের জন্য এমনভাবে প্রস্তুত হও যেন ঠিক এখনই তোমাকে চলে যেতে হবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইরানের বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মরহুম আল্লামা জাফরি (রহ.) তাঁর এক বক্তৃতায় “মানুষের চিরন্তন দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ ও দায়িত্ব” বিষয়ে উল্লেখযোগ্য আলোচনা করেন। তার মূল বক্তব্য নিম্নরূপ: যে কাজই তুমি করো—এমনভাবে করো যেন সেই কাজ সারাজীবন তোমার পরিচয়ের অংশ হয়ে থাকবে, তোমার চরিত্রের সঙ্গে গেঁথে যাবে।

দুনিয়ায় কোনো কাজে তুমি দৃশ্যত সফল হও বা না হও— তবুও তোমার কাজের প্রকৃত ফলাফল তার নিজস্ব স্থানে থেকে যায় এবং তা কখনোই তোমার থেকে আলাদা হয় না।

তুমি যে ক্ষেত্রেই কাজ করো— শিল্প, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, বৌদ্ধিক কর্মকাণ্ড, ব্যবসা বা উৎপাদন—সর্বক্ষেত্রেই মনে রাখতে হবে: তোমার কাজের ফল তোমার সত্তার অংশ হয়ে যায়, যা সময়ের সীমা অতিক্রম করে স্থায়ী হয়ে থাকে।

তোমার কাজের ধরন, পদ বা সামাজিক মর্যাদা কোনো বড় বিষয় নয়; আসল বিষয় হলো— তুমি সেই কাজ এমন নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা দিয়ে করছো কি না, যেন কাজটির সঙ্গে তোমার আজীবনের বন্ধন রয়েছে।

কখনো কখনো মানুষ বিস্মিত হয়— এটি দেখে যে সমাজে কিছু মানুষ তত্ত্ব বা জটিল জ্ঞান খুব বেশি জানে না, কিন্তু তারা গভীর ভালোবাসা ও আত্মনিবেদন দিয়ে তাদের কাজ করে । তাদের কাছে কাজ যেন এক প্রিয়জন— তারা কাজকে সম্মান করে, মনোযোগ দিয়ে করে, এমনকি কাজটি যদি খুব ছোট বা নিছক পার্থিবও হয়।

বাস্তব কথা হলো— যেকোনো পার্থিব কাজও যদি সঠিক নিয়ত, আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে করা হয়, তবে তা সময়-স্থান অতিক্রম করে চিরস্থায়ী মূল্য অর্জন করে।

সুতরাং— “দুনিয়ার জন্য এমনভাবে কাজ করো যেন তুমি এখানে চিরকাল অবস্থান করবে এবং পরকালের জন্য এমনভাবে প্রস্তুত হও যেন ঠিক এই মুহূর্তেই তোমার প্রস্থানের ডাক আসতে পারে।”

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha