হাওজা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শহীদ জেনারেল কাসেম সোলাইমানি এবং হাশদ আশ-শাবির উপপ্রধান আবু মাহদি আল-মুহানদিসের পঞ্চম বার্ষিকী আজ ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় পালিত হচ্ছে।
এক অনন্য ব্যক্তিত্ব
শহীদ জেনারেল কাসেম সোলাইমানি এমন একজন নেতা ছিলেন, যিনি তাঁর জীবনে অসংখ্য সাফল্যের উদাহরণ স্থাপন করেছেন। তাঁর আত্মত্যাগ লাখো মানুষের হৃদয়ে নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে। তিনি ২০ মার্চ ১৯৫৬ সালে ইরানের কেরমান প্রদেশের একটি ছোট গ্রাম, কানাত মালেকে জন্মগ্রহণ করেন।
আইএসআইএস বিরোধী সংগ্রামের নায়ক
শহীদ সোলাইমানি ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসআইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রধান কমান্ডারদের একজন ছিলেন। আইএসআইএস ছিল এক সন্ত্রাসী সংগঠন, যা ইরাকে সাদ্দামের পতনের পর গঠিত হয়।
২০১১ সালে শহীদ সোলাইমানির নেতৃত্বে ফাতেমিউন এবং জয়নাবিউনের মতো স্বাধীনতাকামী সংগঠনের যোদ্ধারা সিরিয়ায় তাকফিরি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে।
২০১৪ সালে, যখন আইএসআইএস মসুল দখল করেছিল, শহীদ সোলাইমানি হাশদ আশ-শাবি বাহিনীকে সংগঠিত করে ইরাক থেকে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে নির্মূল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি তাকে আইএসআইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের একজন গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে অভিহিত করেন।
এক অনন্য সম্মান
২০১৬ সালে, তিনি আলবুকামালে আইএসআইএসের পতন ঘোষণা করেন এবং সিরিয়ার পতাকা উত্তোলন করেন। ১৯ মার্চ ২০১৭ সালে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি তাকে ইরানের সর্বোচ্চ সামরিক পুরস্কার "যুলফিকার পদক" প্রদান করেন।
এক নিরহংকারী কমান্ডার
শহীদ সোলাইমানির কোনো অফিস বা চেয়ার ছিল না, তবে পুরো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ তাঁর হাতে ছিল। তিনি নিজের জন্য কিছু দাবি করেননি, কিন্তু তাঁর কাজের কারণে অসংখ্য মানুষের ভালোবাসার পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন।
শহীদ হওয়া
৩ জানুয়ারি ২০২০ সালে, বাগদাদের বিমানবন্দরের কাছে একটি মার্কিন ড্রোন হামলায় আবু মাহদি আল-মুহানদিসসহ তিনি শহীদ হন। এই ঘটনা ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় তৈরি করে এবং বিশ্বব্যাপী নতুন এক আন্দোলনের সূচনা করে।
জীবনের শিক্ষা
শহীদ কাসেম সোলাইমানির জীবন আমাদের শেখায় যে কঠোর পরিশ্রম, সংকল্প এবং আত্মত্যাগের মাধ্যমে যেকোনো লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। তিনি শুধু একজন সাহসী যোদ্ধা ছিলেন না, একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান মুজাহিদও ছিলেন। তাঁর জীবন ও দর্শন আমাদের হৃদয়ে আজও জীবন্ত। তাঁর আদর্শ আমাদের বলে, ফিলিস্তিনের বিজয় অতি সন্নিকটে। তাঁর স্মৃতি আমাদের শক্তি যোগায় এবং তাঁর জীবনের প্রতিচ্ছবি আমাদের সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজে পেতে সহায়ক হয়।
লেখা: হাসান রেজা
আপনার কমেন্ট