রবিবার ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ - ০৯:৩৮
আয়াতুল্লাহ আল-উজমা সুবহানি

হাওজা / আয়াতুল্লাহ আল-উজমা সুবহানি, ইসলামী চিন্তা ও ধর্মপ্রচারের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত কুরআন ও আহলে বায়তের শিক্ষা।

হাওজা নিউজ এজেন্সি, আয়াতুল্লাহ জাফর সুবহানি বলেছেন যে ইসলামী চিন্তা ও ধর্মপ্রচারের মূল ভিত্তি হতে হবে পবিত্র কুরআনের আয়াতসমূহ ও আহলে বায়তের শিক্ষা। তাই, কুরআনিক জ্ঞানে পারদর্শীদের উচিত নিজেদের জ্ঞানকে সুদৃঢ় করা, যেন তারা কুরআনের আলোকে সকল সন্দেহের যুক্তিপূর্ণ জবাব দিতে সক্ষম হন।

গত শুক্রবার পবিত্র মাশহাদে অনুষ্ঠিত "খাদেমিনে কুরআন" সমাবেশে আয়াতুল্লাহ সুবহানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রদান করেন। 

তাঁর বক্তব্য ছিল নিম্নরূপ—

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম
"هوالذی بعث فی الامیین رسولا منهم یتلو علیهم آیاته و یزکیهم و یعلمهم الکتاب والحکمه وان کانو من قبل لفی ضلا ل مبین"।

এই জাতীয় সমাবেশ, যা ইমাম রেজা (আ.)-এর পবিত্র মাজারের সন্নিকটে ও নবী করিম (সা.)-এর নবুওতের বরকতময় সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে, খাদেমিনে কুরআনের জন্য একটি স্বর্ণালী সুযোগ, যাতে তাঁরা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ধর্মীয় ও কুরআনিক সংস্কৃতি বিস্তারে কার্যকর কৌশল নির্ধারণ করতে পারেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওতের অন্যতম মূল লক্ষ্য ছিল আল্লাহর আয়াতসমূহের তেলাওয়াত, শরীয়তের বিধান স্পষ্ট করা, মুসলমানদের আত্মশুদ্ধি এবং কুরআন ও হিকমতের শিক্ষা প্রদান। নবুওতের আন্দোলন শুরু হয়েছিল কুরআনের আয়াতের মাধ্যমে এবং ২৩ বছরের দীর্ঘ নবুওতির সময়ে জিবরাইল (আ.)-এর মাধ্যমে ৬২৩৬টি আয়াত অবতীর্ণ হয়। এই সময়ে নবী করিম (সা.) অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন কুরআনের ব্যাখ্যা, ব্যাখ্যাসমূহের প্রচার এবং সমাজের সংস্কার সাধনে।

অতএব, এটা স্পষ্ট যে ইসলামী চিন্তা ও ধর্মপ্রচারের প্রধান ভিত্তি কুরআন ও আহলে বায়তের শিক্ষা হওয়া উচিত। তাই কুরআনিক জ্ঞানে অভিজ্ঞদের উচিত নিজেদের বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা, যেন তারা যে কোনো বিশ্বাসগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় কুরআনের দলিলের মাধ্যমে সন্দেহ দূর করতে সক্ষম হন।

তবে, নবুওতের লক্ষ্য শুধু কুরআন তেলাওয়াতের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং আত্মশুদ্ধি ও নৈতিক মূল্যবোধের পরিপূর্ণতা অর্জনও এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। একজন কুরআন শিক্ষককে অবশ্যই কুরআনের আলোয় আত্মশুদ্ধির প্রতি মনোযোগী হতে হবে, কারণ যে ব্যক্তি নিজেই মুত্তাকি ও পরহেজগার নয়, সে কখনোই প্রকৃত অর্থে কুরআনের সেবা করতে পারবে না।

প্রতি বছর "খাদেমিনে কুরআন" হিসেবে কিছু ব্যক্তিকে নির্বাচিত করা হয়, যা কুরআনিক কার্যক্রমের বিস্তারে সহায়ক হতে পারে। কুরআন ও আহলে বায়তের অবিচ্ছেদ্য সংযুক্তি খাদেমিনে কুরআনের মাঝে ধর্মের সেবার চেতনা আরও জাগ্রত করে। আমি আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করছি যে এই সম্মেলন দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ ও বরকতের উৎস হয়ে উঠুক। এটাই সর্বোত্তম মর্যাদা ও সম্মান।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha