হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অন্তর্গত ঢালিপাড়া গ্রামের বিশিষ্ট আলেম হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা আসাদ রেজা সাহেব, ইমাম মাহদী (আ.) এর গাইবত সম্পর্কে সুন্দর ভাবে আলোচনা করেন।
ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, ইমাম মাহদী (আ.) বর্তমানে গায়ব (অদৃশ্য) অবস্থায় আছেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় নির্ধারিত সময়ে প্রকাশিত হবেন। এই গাইবাতের যুগে মুসলমানদের জন্য তাঁর প্রতি বিশ্বাস রাখা, তাঁর প্রতীক্ষায় থাকা এবং তাঁর আদর্শকে প্রচার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গাইবাতের যুগে আমাদের করণীয়
- তাকওয়া ও নৈতিকতা বজায় রাখা
ইমাম মাহদীর (আ.) অনুসারীদের প্রধান দায়িত্ব হলো আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর বিধান মেনে চলা।
পাপ থেকে দূরে থাকা এবং ন্যায়পরায়ণ জীবনযাপন করা।
- ইমামের প্রতি আন্তরিক সম্পর্ক বজায় রাখা
ইমামের জন্য দোয়া করা, বিশেষ করে "দুয়া-ই আহদ" পাঠ করা।
ইমামের জন্য প্রস্তুত থাকা মানসিক ও আত্মিকভাবে।
- ইসলামের সঠিক জ্ঞান অর্জন করা ও প্রচার করা
কুরআন ও হাদিস অধ্যয়ন করা।
ইমামের গাইবাত সম্পর্কে ইসলামী জ্ঞান অর্জন করে তা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া।
- ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখা
মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি না করা।
ন্যায়বিচার ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা।
- জাহেলিয়াত ও বিভ্রান্তি থেকে দূরে থাকা
ভ্রান্ত বিশ্বাস ও কুসংস্কার পরিহার করা।
বিভিন্ন মিথ্যা দাবিদার ও ভ্রান্ত মতাদর্শ সম্পর্কে সতর্ক থাকা।
জনগণের সামনে ইমামের গাইবাতকে উপস্থাপনের উপায়
- ঐতিহাসিক ও হাদিসভিত্তিক আলোচনা
বিশ্বস্ত সূত্র থেকে ইমাম মাহদীর (আ.) গাইবাত ও তাঁর আগমনের লক্ষণগুলো ব্যাখ্যা করা।
নবী (সা.) ও পূর্ববর্তী ইমামদের (আ.) বক্তব্য তুলে ধরা।
- লজিক্যাল ও একাডেমিক ব্যাখ্যা প্রদান
আধুনিক দর্শন ও যুক্তির মাধ্যমে ইমামের গাইবাতের বিষয়টি ব্যাখ্যা করা।
বিভিন্ন ধর্মের প্রত্যাশিত মুক্তিদাতার ধারণার সাথে তুলনামূলক আলোচনা করা।
- সামাজিক মাধ্যমে প্রচার
ভিডিও, ব্লগ, আর্টিকেল, লাইভ আলোচনা ইত্যাদির মাধ্যমে ইমামের বার্তা প্রচার করা।
তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে আধুনিক উপস্থাপনা ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা।
- সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন
মাহফিল, সেমিনার ও বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা।
ইমামের জন্মদিন ও বিশেষ দিবসগুলোতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা।
- ব্যক্তিগত অনুপ্রেরণা ও চরিত্রের মাধ্যমে দাওয়াত দেওয়া
নিজের চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ইমামের অনুসারী হিসেবে আদর্শ স্থাপন করা।
ধৈর্য, দয়া, ন্যায়বিচার ও সততার মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে ইমামের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করা।
মূল কথা হলো, ইমাম মাহদী (আ.)-এর গাইবাতের যুগ আমাদের জন্য একটি পরীক্ষা। এই সময়ে আমাদের করণীয় হলো ধৈর্য ধারণ করা, সঠিক জ্ঞান অর্জন করা, এবং তাঁর আবির্ভাবের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করা। সমাজে ইমামের বিষয়টি তুলে ধরতে হলে যুক্তি, প্রমাণ ও আধুনিক পদ্ধতির সমন্বয় করতে হবে। অতএব, আমাদের উচিত ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের মধ্যে ইমামের আদর্শ প্রচার ও প্রসার ঘটানো, যাতে আমরা তাঁর অনুসারী হিসেবে যোগ্য হয়ে উঠতে পারি।
আপনার কমেন্ট