হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক এদুয়ার্দ বাইগবেদার গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে বলেন, ‘শিশুদের জীবন বাঁচাতে অবিলম্বে পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। পানি একটি মৌলিক মানবাধিকার, যা অস্বীকার করা উচিত নয়।’ তিনি আরও যোগ করেন, ইউনিসেফ ও অন্যান্য সহযোগী সংস্থাগুলো সাহায্য চেষ্টা চালালেও অবরোধ না তোলা বা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি না হলে এই সংকট কাটানো সম্ভব নয়। 

গাজায় খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। দাতব্য সংস্থাগুলো আগে হাজার হাজার মানুষকে খাদ্য সরবরাহ করলেও এখন তা বন্ধ হয়ে গেছে। রান্নার গ্যাস ও বিশুদ্ধ পানির অভাবের কারণে কমিউনিটি কিচেনগুলোও বন্ধ হতে বাধ্য হচ্ছে। গাজার এক কমিউনিটি কিচেনের কর্মী মোহাম্মদ আবু হামজা বলেন, ‘অসংখ্য বাস্তুচ্যুত পরিবারকে সাহায্য করা কমিউনিটি কিচেনগুলোই ছিল তাদের শেষ ভরসা। কিন্তু এখন আর খাবার নেই, গ্যাস নেই, কাঠ নেই—কিছুই নেই। তীব্র ক্ষুধা গোটা গাজাকে গ্রাস করছে।’ 

ইসরাইলের অবরোধ ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ফলে গাজার প্রধান পানি পরিশোধন কেন্দ্রটি দৈনিক ১৭,০০০ ঘনমিটার থেকে মাত্র ২,০০০ ঘনমিটার পানি উৎপাদন করতে পারছে। এছাড়া গত ১৬ দিন ধরে গাজায় কোনো মানবিক সাহায্য প্রবেশ করতে পারেনি। এর ফলে চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ, জ্বালানি ও রান্নার গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। 

গাজাবাসী দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার ও পানির জন্য অপেক্ষা করছে। তবে বাজারের আকাশচুম্বী দামের কারণে সাধারণ মানুষের পক্ষে কোনো কিছু কেনা সম্ভব হচ্ছে না। আল-জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজযুম জানান, ‘বাজারগুলোতে পণ্য ফুরিয়ে যাচ্ছে। আর যেটুকু আছে, সেগুলোর দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে।’ 

জাতিসংঘ কর্মকর্তারা বারবার সতর্ক করে বলেছেন, যদি দ্রুত সাহায্য প্রবেশের অনুমতি না দেওয়া হয়, তাহলে হাসপাতালগুলো ধসে পড়বে এবং পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। তবে ইসরাইল এই অমানবিক অবরোধ থেকে সরে আসছে না। উল্টো গাজা ও পশ্চিম তীরে সামরিক অভিযান ও বিমান হামলা চালিয়ে নিরীহ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের হত্যা করে চলেছে। 

এই সংকটের সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে। ইউনিসেফ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো অবরোধ তুলে নেওয়া এবং মানবিক সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য ইসরাইল ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে।