মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫ - ১৮:২৫
আমরা আলোচনার ব্যাপারে অতিরিক্ত আশাবাদী বা হতাশাবাদী নই

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ী দেশের তিনটি প্রধান রাষ্ট্রীয় বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠকে অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন। নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ের এই সভায় তিনি দেশের অগ্রগতির জন্য “অনুসরণ ও মনিটরিং”-কে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে সতর্কতা জারি করেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: শনিবার ওমানে তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে প্রথম দফার পরোক্ষ আলোচনার কথা উল্লেখ করে ইসলামী বিপ্লবের নেতা বলেন, “আমরা এই আলোচনা সম্পর্কে অতিরিক্ত আশাবাদী বা অতিরিক্ত হতাশাবাদী নই! ওমান আলোচনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য কয়েক ডজন কাজের মধ্যে একটি মাত্র!” তিনি আরও বলেন, “দেশের সমস্যাগুলোকে সংলাপের সাথে আবদ্ধ করবেন না, নিজেদের সক্ষমতায় আস্থা রাখুন!”

১. আলোচনা নয়, কর্মকৌশলেই মনোযোগ: রাহবার বলেছেন, “ওমান আলোচনার ফলাফলের উপর দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল করা যাবে না। ব্রজাম চুক্তির সময় যে ভুল হয়েছিল, তা পুনরাবৃত্তি করা চলবে না।” তিনি অতিরিক্ত আশাবাদ বা হতাশা এড়িয়ে চলতে বলেছেন, পাশাপাশি ইরানের অভ্যন্তরীণ শক্তি ও উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন । 

২. শক্তিশালী উৎপাদনই সমাধান: আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী উৎপাদন খাতে বিনিয়োগকে “সর্বোত্তম প্রতিষেধক” বলে অভিহিত করে বলেন, “আমরা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, কিন্তু এর প্রভাব নিরপেক্ষ করতে পারি।” তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে জ্বালানি সাশ্রয়ের উদাহরণ সৃষ্টি করতে এবং অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বলেছেন। 

৩. ফিলিস্তিন ইস্যু ও ইসলামিক ঐক্য: বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলের হামলার নিন্দা করে তিনি বলেন, “এই নৃশংসতায় অংশ নেওয়ার জন্য চরম পাশবিকতা প্রয়োজন।” মুসলিম বিশ্বের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ঐক্যের পাশাপাশি প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপেরও ডাক দেন তিনি। 

৪. প্রশাসনিক দুর্বলতা চিহ্নিতকরণ: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা শিক্ষা, জ্বালানি ব্যবস্থাপনা ও দরিদ্রদের সহায়তায় দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের অভাবকে “অনুসরণের ঘাটতি” বলে চিহ্নিত করেন। তার মতে, ভালো আইন থাকলেও বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণের অভাবে লক্ষ্য পূরণ বাধাগ্রস্ত হয়। 

৫. আন্তর্জাতিক কূটনীতির প্রশংসা: রাষ্ট্রপতি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রচেষ্টাকে তিনি ইতিবাচক মূল্যায়ন করেন, তবে পাশাপাশি এশিয়া, আফ্রিকা ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর তাগিদ দেন। 

৬. সরকারের পরিকল্পনা প্রকাশ: বৈঠকের শুরুতে উপ-রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আলী আল-আরিফ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, কর্মসংস্থান ও শিক্ষার সমতা অর্জনে গৃহীত পদক্ষেপের বিবরণ দেন। তিনি জ্বালানি খাতের ভারসাম্য রক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের অগ্রগতির কথাও উল্লেখ করেন। 

এই সভায় আইনসভা, নির্বাহী ও বিচার বিভাগের শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন, যেখানে ২০২৫ সালের জন্য জাতীয় অগ্রাধিকারগুলো পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha