রবিবার ১৮ মে ২০২৫ - ১৮:১৬
ইসলামী সভ্যতা নির্মাণে হাওযা ইলমিয়াগুলোর মূল দায়িত্ব — ‘দ্বীন কায়েম করা’

জ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন আবেদীনেযাদ হাওযা ইলমিয়ার মিশন পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, হাওযার মৌলিক দায়িত্ব হলো ‘দ্বীন প্রতিষ্ঠা’।

হাওযা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, জামিআতুল মুস্তাফার গবেষণা বিভাগের সহকারী হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন আবেদীনেযাদ হাওযা ইলমিয়ার মিশন পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, হাওযার মৌলিক দায়িত্ব হলো ‘দ্বীন প্রতিষ্ঠা’। তিনি বলেন, হাওযাগুলোকে রক্ষণশীলতা থেকে দূরে থেকে বিবেক, ন্যায়বিচার এবং আধ্যাত্মিকতার ভিত্তিতে একটি সভ্যতা গঠনের পথে এগিয়ে যেতে হবে, যাতে তারা ইসলামী সভ্যতা বাস্তবায়নে নিজেদের ভূমিকা পালন করতে পারে।

হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন আবেদীনেযাদ হাওযা নিউজের এক সাংবাদিকের সাথে আলাপকালে হাওযা ইলমিয়ার ভূমিকা ও মিশন প্রসঙ্গে বলেন, কুম হাওযা ইলমিয়ার পুনঃপ্রতিষ্ঠার শতবর্ষপূর্তির প্রাক্কালে এই ধর্মীয়-শিক্ষাগত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নতুনভাবে বিশ্লেষণ করা জরুরি।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা কুম হাওযা ইলমিয়ার পুনঃপ্রতিষ্ঠার একশ বছর অতিক্রম করছি। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে হাওযার অবস্থান ও দায়িত্ব মূল্যায়ন করা গেলে, এর ভবিষ্যৎ পথ চলা আরও সুস্পষ্ট ও মসৃণ হবে। হাওযার ভূমিকাকে বিশ্লেষণ করতে গেলে, প্রথমেই এটির মূল মিশন পুনঃসংজ্ঞায়িত করা প্রয়োজন। একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো— হাওযা ইলমিয়ার প্রকৃত মিশন কী?

তিনি যোগ করেন, যেমন প্রতিটি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের মিশন অনুযায়ী মূল্যায়িত হয়, তেমনি হাওযাগুলোর বৃহত্তর দায়িত্বও মূল্যায়নের আওতায় আসা উচিত। একটি সমগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, হাওযার মূল মিশন হলো সমাজে তিনটি মৌলিক সত্য প্রতিষ্ঠা করা: আধ্যাত্মিকতা, যুক্তিবাদিতা এবং ন্যায়বিচার। এই তিন উপাদান একত্রে "দ্বীন কায়েম করা" ধারণার মধ্যেই নিহিত, এবং তাই বলা যায়, হাওযা ইলমিয়ার মূল দায়িত্ব হলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দ্বীন কায়েম করা।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ধর্মীয় ও চিন্তাশীল ঐতিহ্যে হাওযা ইলমিয়া এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যার ত্রিমাত্রিক মিশন রয়েছে: আধ্যাত্মিকতা, যুক্তিবাদিতা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। এই তিনটি স্তম্ভ পরস্পর অবিচ্ছেদ্য এবং দ্বীন কায়েমের ধারণার কেন্দ্রবিন্দু। এদের মধ্যে যেকোনো একটি বাদ পড়লে, হাওযার ঐতিহাসিক ও সভ্যতাগত দায়িত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি বলেন, যেমন ইমাম খোমেইনী (রহ.) বলেছেন: ‘ফিকহ হলো মানুষের পরিচালনার জ্ঞান।’ দর্শন, কালাম, ফিকহ, প্রাথমিক শিক্ষা, তাফসির ও অন্যান্য সকল বিদ্যাবলী হাওযার মধ্যে যুক্তিবাদিতা ও অস্তিত্ব উপলব্ধির পথে পরিচালিত হয়। আর এইসবের চূড়ান্ত মিশন হলো ‘দ্বীন কায়েম করা’— যা আল্লাহ তা'আলা ইসলামী উম্মাহ এবং বিশেষত হাওযা ইলমিয়ার ওপর অর্পণ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ন্যায়বিচার কায়েম করা ও ইসলামী ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা — অন্যভাবে বললে, ইসলামী সভ্যতা বা আদর্শিক ইসলামী সমাজ গঠন — হাওযার মৌলিক দায়িত্বগুলোর অন্যতম। বিশ্বে অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেখানে এ ধরনের দায়িত্ব নিজেদের জন্য বিবেচনা করে না, সেখানে শিয়া হাওযাগুলো ইমামত ও বেলায়েত-এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলে। এই ইমামত ও Wilayah ধারণার মধ্যেই ন্যায়বিচার, যুক্তিবাদিতা ও আধ্যাত্মিকতা— এই তিনটি মৌলিক উপাদান একত্রে বিদ্যমান।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha