হাওযা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন খসরোপনাহ, সর্বোচ্চ সাংস্কৃতিক বিপ্লব পরিষদের সচিব, কুম হাওযা ইলমিয়ার শততম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর সাম্প্রতিক বার্তাকে "হাওযা ইলমিয়ার নীতিমালা" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং এটিকে "বিপ্লবী ব্যবস্থার তত্ত্ব"–এর বিস্তারিত রূপ বলে বর্ণনা করেছেন, যা 'দ্বিতীয় পদক্ষেপের ঘোষণা'র (বিয়ানিয়া গামে দওমে ইনকেলাব) অংশবিশেষ।
তিনি হাওযা নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্যাখ্যা করেন, এই বার্তা ইমাম খোমেইনির (রহ.) "রূহানিয়্যাত নীতিমালা"র ধারাবাহিকতায় এবং বিপ্লবী ব্যবস্থার তত্ত্ব অনুযায়ী প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, হাওযা ইলমিয়ার পুনঃপ্রতিষ্ঠার শতবর্ষ এবং দ্বিতীয় শতকে প্রবেশ উপলক্ষে আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর বার্তাটি মূলত হাওযা ইলমিয়ার জন্য একটি পথনির্দেশিকা। এটি ইমাম খোমেইনির রূহানিয়্যাত সংক্রান্ত নীতিমালার ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত হয়েছে। ইমাম যেমন তাঁর নীতিমালায় বিভিন্ন রূহানী ধারার উল্লেখ করে ‘মোজতাহেদি’ পদ্ধতিতে সময়োপযোগী সমস্যার সমাধানে সক্ষম বিপ্লবী রূহানিয়্যাতকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন, তেমনি বর্তমান বার্তায়ও সর্বোচ্চ নেতা পাঁচটি মূল নীতিকে ব্যাখ্যা করেছেন এবং বার্তার শেষে আটটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ তুলে ধরেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমার দৃষ্টিতে এই বার্তা ‘দ্বিতীয় পদক্ষেপের ঘোষণা’-তে উল্লিখিত বিপ্লবী ব্যবস্থার তত্ত্বের ব্যাখ্যা। যদি মনে থাকে, ঐ ঘোষণায় খামেনেয়ী সাহেব তিনটি মূল স্তম্ভ উল্লেখ করেছিলেন: আত্মগঠন, সমাজ গঠন এবং সভ্যতা নির্মাণ। এই তিনটি স্তম্ভ পরস্পর সংযুক্ত।
তিনি ব্যাখ্যা করেন: এই নীতিমালায় সর্বোচ্চ নেতা বলেন, হাওযাকে আগে নিজেকে চিনতে হবে, নিজের সক্ষমতা আবিষ্কার করতে হবে এবং ইসলামী জ্ঞানকে পুনঃসংজ্ঞায়িত করতে হবে; তবে তা এমন ‘ইজতিহাদী’ পদ্ধতিতে হতে হবে, যাতে ঐতিহ্যবাহী ফিকহ ও সময়োপযোগী ফিকহের সমন্বয় থাকে। কেবল পবিত্রতা থেকে দণ্ডবিধি পর্যন্ত আলোচনা করে হাওযা সামাজিক কাঠামো গঠনে উদাসীন থাকতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, আত্মগঠনের পর যদি সমাজ গঠনে অগ্রসর হতে হয়, তাহলে তা শুধুমাত্র ফিকহ ও সমাজবিজ্ঞানভিত্তিক দর্শনের সংযোগের মাধ্যমেই সম্ভব। এই কাঠামো গঠনে হাওযা সামাজিক হিকমত (দর্শন) ও সামাজিক ফিকহ – দুই দিক থেকেই উপকৃত হবে। আর তৃতীয় স্তরে পৌঁছনো যাবে সভ্যতা নির্মাণে।
তিনি বলেন, সভ্যতা নির্মাণ তখনই সম্ভব, যখন হাওযা হিকমত ও সামাজিক ব্যবস্থাগত ফিকহের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জন করবে। তখনই ইসলামি নবজাগরণের একটি বাস্তব রূপ গড়ে উঠবে, যা অন্য সমাজগুলোর জন্যও একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে।
সাক্ষাৎকারের শেষ অংশে তিনি বলেন: এই বার্তার শেষ অংশে থাকা আটটি পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত। এগুলো কোনো সাধারণ মন্তব্য নয়, বরং বাস্তবায়নযোগ্য দিকনির্দেশনা, যা কোম এবং অন্যান্য শহরের হাওযাগুলোর নজরে রাখা উচিত। আশা করি, দেশের সব হাওযা ইলমিয়া এই নীতিমালাকে পরিবর্তনের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করবে।
আপনার কমেন্ট