হাওযা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন ফাতেমি-নেজাদ শহীদ আয়াতুল্লাহ রায়িসি ও তাঁর সঙ্গীদের শহীদ হওয়ার বার্ষিকীতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, সিজদাহতম সরকারের অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও বৈদেশিক নীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অর্জন রয়েছে।
তিনি বলেন, শহীদ রায়িসি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন ইসলামী প্রজাতন্ত্র ও মহান ইরানি জাতির সেবায়, এবং তিনি একটি গৌরবময় নাম রেখে গেছেন।
ক) সিজদাহতম সরকারের সেবা ও অর্জনসমূহ:
১. অর্থনীতি:
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ: নানা চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও সরকার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতি করেছে; ১৪০০ সালের মুর্দাদের ৫৯.৩% থেকে তা ১৪۰২ সালের এসফান মাসে ৪০.২%-এ নেমে আসে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি: দেশীয় উৎপাদন ও ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে ১৪০১ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪% হয়।
দেশীয় উৎপাদনকে সহায়তা: জ্ঞানভিত্তিক কোম্পানি ও উদ্যোক্তাদের সহায়তা করে উৎপাদন খাতে অগ্রগতি আনা হয়েছে।
অবকাঠামো উন্নয়ন: সারা দেশে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।
২. বৈদেশিক নীতি:
প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন: একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতি গ্রহণ করে সরকার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে।
আন্তর্জাতিক জোটে সদস্যপদ: শাংহাই ও ব্রিকস-এর সদস্যপদ অর্জন করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা: অর্থনৈতিক কূটনীতি ও বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কমানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
৩. সংস্কৃতি:
সংস্কৃতি ক্ষেত্রে সহায়তা: সাংস্কৃতিক বাজেট বৃদ্ধি ও শিল্পীদের সহায়তা করা হয়েছে।
জাতীয় পরিচয় জোরদার: ইরানি-ইসলামি সংস্কৃতি প্রসারে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
৪. সামাজিক ন্যায়বিচার:
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই: দুর্নীতি দমন দফতর গঠন করে স্বচ্ছতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
দুর্বল শ্রেণিকে সহায়তা: আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি ও সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
প্রান্তিক অঞ্চলের উন্নয়ন: সীমান্ত ও কম সুবিধাপ্রাপ্ত এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।
খ) সমালোচনার জবাব:
মুদ্রাস্ফীতি: ১৩ সরকার একটি উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির উত্তরাধিকার পেয়েছে। যদিও অগ্রগতি হয়েছে, এখনও কাঙ্ক্ষিত স্তরে পৌঁছানো যায়নি।
জীবিকা: অর্থনৈতিক সংকট মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলেছে, এবং শহীদ রায়িসি সরকার অসহায় জনগণের জীবিকা উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা: সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে মেনে চলেছে, তবে তা যেন ধর্মীয় ও জাতীয় মূল্যবোধকে আঘাত না করে।
পশ্চিমের সঙ্গে সম্পর্ক: ১৩ সরকার সকল দেশের সঙ্গে ন্যায়সঙ্গত ও মূলনীতি ভিত্তিক সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছে।
গ) আয়াতুল্লাহ রায়িসির ব্যক্তিত্ব:
নম্রতা ও জনসম্পৃক্ততা: সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন এবং তাদের সমস্যা সরাসরি দেখভাল করতেন।
কর্মে কঠোরতা: দেশ ও জনগণের সমস্যার সমাধানে নিরবিচারে পরিশ্রম করতেন।
নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য: সর্বোচ্চ নেতার দিকনির্দেশনা তাঁর কাজের ভিত্তি ছিল।
জিহাদি চেতনা: নিরলসভাবে দেশের ও জাতির সেবায় নিয়োজিত ছিলেন।
ঘ) পথচলা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা:
হুজ্জাতুল ইসলাম ফাতেমি-নেজাদ বলেন, শহীদ রায়িসির পথ অনুসরণ করে আমাদের উচিত দেশ, বিপ্লব ও জনগণের কল্যাণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
(বিশ্লেষণ) রাহবারি ও সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে:
১. অর্থনৈতিক ও জীবিকা সূচকের উন্নতি:
রাহবর (নেতা) ১৪০০ সালের শাহরীওয়ার-এ বলেন, মানুষের জীবিকা উন্নয়ন সরকারের প্রধান দায়িত্ব। সরকার মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং এক মিলিয়নের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে কাজ করেছে।
২. ভারসাম্যপূর্ণ বৈদেশিক নীতি:
প্রতিবেশী ও অ-পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক চুক্তিগুলোতে সদস্যপদ অর্জন করে রাহবরের কূটনৈতিক রূপরেখা অনুসরণ করেছে।
৩. দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম:
রাহবর বহুবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামের গুরুত্ব দিয়েছেন। সরকার স্বচ্ছতা, তথ্য উন্মোচন এবং দুর্নীতির মামলার অনুসন্ধানে অগ্রগতি করেছে।
শেষে তিনি বলেন: ১৩ সরকারের অর্জন প্রশংসনীয় হলেও রাহবরি ও বিপ্লবের লক্ষ্যের পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য আরও প্রচেষ্টা ও পরিকল্পনার প্রয়োজন।
আপনার কমেন্ট