মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫ - ২১:০৮
শহীদ রায়িসির সেবাসমূহ ছিল জাতীয় মর্যাদা, সম্মান ও ইরানি জাতির বিশ্বাসযোগ্যতার উৎস

শহীদদের প্রশংসা ও সম্মান জানানোর মূল লক্ষ্য হল চিন্তাভাবনা ও শিক্ষা গ্রহণ।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ সকালে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ী শহীদ রায়িসি, অন্যান্য সেবক শহীদ এবং বিগত দশকগুলিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত শহীদদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, শহীদদের প্রশংসা ও সম্মান জানানোর মূল লক্ষ্য হল চিন্তাভাবনা ও শিক্ষা গ্রহণ। তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি রায়িসির হৃদয়, ভাষা ও কর্মকাণ্ডের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করে বলেন: প্রিয় রায়িসি ছিলেন এক আদর্শ ইসলামি সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি। তিনি নিরলস পরিশ্রম করে ‘জনগণ, জাতীয় সম্মান ও মর্যাদা’ রক্ষা এবং উন্নয়নে কাজ করেছেন। এটি আমাদের সকল দায়িত্বশীল, যুব সমাজ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বড় শিক্ষা।

বৈদেশিক নীতির প্রসঙ্গে, আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী মার্কিনদের অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বলেন: তাদের বক্তব্য—‘আমরা ইরানকে সমৃদ্ধকরণে অনুমতি দেব না’—একেবারে ভুল এবং অতিরিক্ত অহঙ্কারী। ইসলামি প্রজাতন্ত্র এ বিষয়ে নিজের নীতি ও পথই অনুসরণ করবে।

তিনি ৩০ উর্দিবেহেশত (২০২৪ সালের মে মাসে) শহীদ রায়িসির সঙ্গে নিহত অন্য শহীদদের—যেমন শহীদ আল হাশেম, শহীদ আমির আব্দুল্লাহিয়ান, প্রাদেশিক গভর্নর, বিমান দলের সদস্য এবং নিরাপত্তা কমান্ডারদের—স্মরণ করেন এবং বলেন:

ফেরাউনি শাসনব্যবস্থা থেকে দূরে থেকে এক আল্লাহভিত্তিক নেতৃত্বের দিকে যাত্রা করা—এটাই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার সঠিক মানদণ্ড, যা শহীদ রায়িসি পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করেছিলেন।

তিনি বলেন, শহীদ রায়িসি জনগণের মাঝে নিজেকে ছোট মনে করতেন, কখনো ক্ষমতার অহংকার করেননি, বরং মানুষের সেবাকে জীবনের মূল ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন।

তিনি যোগ করেন: তার হৃদয় ছিল বিনয়ী, ঈশ্বর-স্মরণে সদা ব্যস্ত, তার ভাষা ছিল স্পষ্ট ও সত্যনিষ্ঠ, এবং তার কাজ ছিল নিরলস ও ধারাবাহিক।

সামাজিক ও অর্থনৈতিক সেবা বিষয়ে তিনি বলেন: পানির ব্যবস্থা, রাস্তা নির্মাণ, কর্মসংস্থান তৈরি, বন্ধ হয়ে যাওয়া কল-কারখানা চালু করা এবং অসমাপ্ত প্রকল্পগুলো শেষ করার মাধ্যমে শহীদ রায়িসি জনগণকে সরাসরি সেবা দিয়েছেন। তিনি জাতীয় সম্মান এবং ইরানির আত্মমর্যাদাও বাড়িয়েছেন।

তিনি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন: যেখানে তার সরকারের শুরুতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় শূন্য, সেখানে মেয়াদ শেষে তা প্রায় ৫ শতাংশে পৌঁছেছে—এটি ইরানের গৌরব ও অগ্রগতির প্রমাণ।

তিনি জাতিসংঘে শহীদ সোলেইমানির ছবি উঁচিয়ে ধরার ঘটনাকে রায়িসির গৌরবজনক পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন।

সামগ্রিক মূল্যায়নে সর্বোচ্চ নেতা বলেন: শহীদ রায়িসির মধ্যে ছিল সেই উদ্দীপনা ও দায়বদ্ধতা, যা প্রথম দিককার শহীদদের মধ্যে দেখা যেত। এটি আমাদের বিপ্লবের ক্ষমতা ও ধারাবাহিকতা নির্দেশ করে। যারা এমন শহীদদের পরে জন্মেছে বা ছিল কিশোর, তারাও আজ সেই ধারায় চলেছে—এটাই ইসলামি বিপ্লবের শক্তি।

তিনি আরও বলেন: যে বিপ্লব এইরকম মানবগঠন ও তরুণ প্রজন্মের উদ্দীপনা তৈরি করতে পারে, তা পরাজিত হবার নয়। আমাদের এই বিপ্লব ও জাতির মহৎ যাত্রাকে সম্মান করতে হবে, সংরক্ষণ করতে হবে এবং সৃষ্টিকর্তার সাহায্য চাইতে হবে যেন এটি শুধু ইরানের জন্য নয়, গোটা মানবজাতির জন্য এক শিক্ষনীয় উদাহরণ হয়ে ওঠে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha