হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, শাবাশ বীর ইয়ামান !
মুসলিম দেশ গুলোর ওপর ধিক্কার ও নিন্দা যে তারা মযলূম গাযাবাসী ও ফিলিস্তিনীদের জন্য কিছুই করছে না। তাদের উচিত ইয়ামানের বীর হুথি আনসারুল্লাহর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে পাপিষ্ঠ আগ্রাসী গণহত্যা প্রজন্ম হত্যাকারী জাতিগত নিধন কারী মানবতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী যায়নবাদী দখলদার হানাদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
আরব দেশগুলোর অবস্থা আরো দু:খজনক ও হতাশাব্যঞ্জক। এই দেশগুলো বিশেষ করে রাজতান্ত্রিক আরব দেশগুলো মাযুরার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) করদ রাজ্যের চেয়েও হীন নীচ। এ সব দেশের শাসক চক্রকে মুসলমান বলা উচিত নয়।কারণ,এরা বিধর্মী নাসারা (খ্রীষ্টান) ও ইহুদী দের কর্তৃক ও আধিপত্য মেনে নিয়েছে যা পুরোপুরি হারাম পবিত্র কুরআনের এ আয়াতের কারণে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন:
وَ لَنْ یَّجْعَلَ اللّٰهُ لِلْکَافٌرِیْنَ عَلَی الْمُؤْمِنِیٔنَ سَبِیْلَاً
আর মহান আল্লাহ কখনোই মুমিনদের ওপর কাফিরদের (আধিপত্য বিস্তারের) পথ প্রস্তুত করে দেবেন না। ( সূরা-ই নিসা:১৪১)
এ আয়াতে মহান আল্লাহ মুমিন মুসলমানদের ওপর কাফির-মুশরিকদের আধিপত্য, কর্তৃত্ব ও প্রতিপত্তি হারাম করেছেন। তাই যে কোনো কাজ, পদক্ষেপ ও উদ্যোগ যা মুসলমানদের ওপর কাফির-মুশরিকদের আধিপত্যের পথ প্রশস্ত করে তা সর্বৈব হারাম।
তাই সকল মুসলিম উম্মাহ এবং ইসলামী দেশগুলোর ওপর ফরয ও অবশ্য কর্তব্য হচ্ছ মুসলিম দেশ ও জাতির ওপর কাফিররা (অর্থাৎ বিধর্মীরা আধিপত্য স্থাপন করলে বা করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও জিহাদ করা যাতে এই আধিপত্য খর্ব বা ধুলিসাৎ করা এবং কাফির শক্তি কবলিত মুসলিম দেশ ও জাতিকে নাজাত সম্ভব হয়। আর মুসলিম বিশ্বের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ফিলিস্তিন ও ফিলিস্তিনী জাতি যাদের অন্তর্ভুক্ত গাযাবাসী তাঁরা বর্বর পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি বর্গ বিশেষ করে মাযুরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ,যুরা (যুক্তরাজ্য) গং-এর প্রত্যক্ষ সার্বিক মদদপুষ্ট আধিপত্য কামী ও বিস্তারকারী অপরাধী ইসরাইলের যুদ্ধ,আগ্রাসন, দখলদারিত্ব, গণহত্যা, উচ্ছেদ এবং সব ধরনের বৈষম্য, বঞ্চনা,অন্যায় উৎপীড়ন, নির্যাতন,অত্যাচার,যুলুম ও অনাচারের শিকার। আর ফিলিস্তিন সমস্যা হচ্ছে মুসলিম উম্মাহ তথা বিশ্বমানবতার সকল সমস্যার মূল (উম্মুল মাসায়েল)।এ সমস্যার ন্যায্য ও সুষ্ঠু সমাধান বিশ্বের সকল সমস্যা সমাধানের চাবিকাঠি স্বরূপ।তাই এই ফিলিস্তিন সমস্যার ন্যায্য ও সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সকল মুসলিম দেশের উচিত,অবশ্যকর্তব্য ও ধর্মীয় ফরয হচ্ছে সম্মিলিত ঐক্যবদ্ধ যথার্থ কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যা ইসরাইলী দখলদারিত্ব, আগ্রাসন ও মানবতা বিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে জিহাদ ও প্রতিরোধ সংগ্রাম ছাড়া আর কিছুই নয়। মুসলিম দেশগুলোর জাতি ও সরকার সমূহ কি পবিত্র কুরআনে বর্ণিত ইহদাল হুসনায়াইনের অর্থাৎ জিহাদে বিজয় ও শাহাদাত - এ দুটো সবচেয়ে উত্তম পুরুস্কারের যে কোনো একটি অথবা উভয়টির প্রত্যাশী ও আকাঙ্খী নয ?!!! গাযাবাসী,হামাস, জিহাদ-ই ইসলামী, হিযবুল্লাহ ও ইয়ামানের আনসারুল্লাহ এই ইহদাল হুসনায়াইনের প্রত্যাশী ও আকাঙ্খী ।আর তাই তাঁরা সঠিক জিহাদ করছেন।তূফানুল আকসা (আল-আকসার তূফান বা ঝড়) অভিযানের শুরুতে আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবূ উবাইদা বলেছিলেন:
ইন্নাহু - তূফানুল আকসা - জিহাদুন ইম্মা নাসর আওয়িস্তিশহাদ্ ( নিশ্চয়ই এটা - তূফানুল আকসা অভিযান) জিহাদ হয় বিজয় নতুবা শাহাদাত।
إنه - طوفان الأقصیٰ- جهاد إما نصر أو استشهاد.
আর যারা আমাদের জন্য অর্থাৎ আমাদের
পথে জিহাদ করেছে (করে) আমরা অবশ্যই তাদেরকে আমাদের পথ সমূহ দেখাব এবং মহান আল্লাহ নিশ্চয়ই পূণ্যকারীদের সাথেই আছেন (সূরা-ই আনকাবূত:২৯)।
ইয়ামানের হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলন ইসরাইলের প্রধান বন্দরনগরী হাইফা এবং সবচেয়ে বড় বিমান বন্দর আল-লুদ্দের (বেন গুরিওন) ওপর সফল ও কার্যকর অবরোধ আরোপ করে তখন বেশ কিছু আরব ও মুসলিম দেশ ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রেখেই চলেছে যা সত্যিই গাদ্দারী, খিয়ানত (বিশ্বাসঘাতকতা) ঈমান বিরোধী, লজ্জাকর ও দু:খজনক। আবার কিছু কিছু আরব ও মুসলিম দেশ এই অপরাধী যালিম বিধর্মী ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য গোপন আলোচনায় লিপ্ত!! এরা ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিধান ফরয জিহাদ ছেড়ে দিয়েছে এবং হাদীসে বর্ণিত হয়েছে: যারা জিহাদ ত্যাগ করে মহান আল্লাহ তাদেরকে অপদস্থ ও দারিদ্র্য ক্লিষ্ট করবেন এবং তারা ধর্মচ্যুতির শিকার হবে (ফুরূউল কাফী,খ:১,পৃ:৩২৭)।
মুসলমানদের উচিত অত্যাচারিত ও ন্যায্য বৈধ অধিকারহত জাতিসমূহের মুক্তি,সম্মান ও মর্যাদা ফিরিয়ে আনার জন্য জিহাদ করা। মহানবী (সা.) বলেছেন: তোমরা জিহাদ করা তাহলে তোমরা তোমাদের সন্তান ও বংশধরদের জন্য সম্মান ও মর্যাদা উত্তরাধিকার সূত্রে রেখে যেতে পারবে (ফুরূউল কাফী,খ:১,পৃ:৩২৯)।
জিহাদের অর্থ ব্যাপক।জান-মাল দিয়ে আল্লাহর রাহে জিহাদ করতে হয় ঠিক তেমনি যালিমের সামনে হক ও ন্যায্য কথা বলা , প্রতিবাদ ও যালিমের যুলুম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লেখা এবং ইসলাম ও মানবতার শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোও জিহাদ যা জিহাদ-ই তাবয়ীন (প্রকৃত অবস্থা ও সত্য বর্ণনা করার জিহাদ) নামে পরিচিত।আর ফরয জিহাদের সবচেয়ে বড় ও উত্তম নমূনা হচ্ছে্ মহান আল্লাহর পথে মহান আল্লাহ, রাসূলুল্লাহ ,ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ ও মানবতার শত্রুদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ ও সংগ্রাম করা। পবিত্র কুরআনের বেশ কিছু আয়াতে মুসলমানদের ওপর জিহাদ ফরয করা হয়েছে। তাই কোনো ভাবেই জিহাদের ফরয বিধান উপেক্ষা ও ত্যাগ করা হারাম ও অনুচিত এবং তা অস্বীকার করলে কুফর হবে। কারণ জিহাদ ইসলাম ধর্ম ও শরিয়তের জরূরী অপরিহার্য বিষয় ও বিধানাবলীর অন্তর্ভুক্ত।
রিপোর্ট: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান
আপনার কমেন্ট