হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, মেহদাবী গবেষণা ক্ষেত্রের শিক্ষক ও গবেষক উল্লেখ করেছেন: মেহদাবী বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য 'ইমাম মাহদীর হাদীসের অভিধান' মেহদাবী হাদীসের অধ্যয়ন শুরু করেছে প্রাথমিক হাদীস সূত্রগুলির বিস্তৃত অনুসন্ধান এবং তাদের মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।
তিনি আরও বলেন: আসলেই, মেহদাবী বিষয়ক গভীর অধ্যয়ন একটি সুনির্দিষ্ট গবেষণার প্রয়োজন ছিল, যা প্রথমত, মেহদাবীকে একটি বৈধ, বিশ্বাসযোগ্য এবং ঐতিহ্যগত সমস্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে এবং তারপর তার বিশ্লেষণের ভিত্তি প্রস্তুত করবে। কিন্তু যেহেতু মেহদাবী সম্পর্কিত মৌলিক সূত্রগুলির হাদীসের দিক থেকে বৈধতা পরীক্ষার জন্য ফিকহুল হাদীসের গভীর পর্যালোচনা প্রয়োজন, তাই সেগুলির বিশ্লেষণ একটি সংগঠিত ও যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতির মাধ্যমে সম্ভব ছিল। এ কারণে, মেহদাবী হাদীসগুলোকে অভিধানমূলকভাবে গবেষণা করার জন্য কুম মাদ্রাসায় এটি অধ্যয়ন করা প্রয়োজন ছিল, যাতে উৎসগত এবং সূত্রগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে সেগুলির গবেষণার পথ সহজতর হয়।

তিনি বলেন: ইমাম মাহদীর হাদীসের অভিধান' একটি সাম্প্রতিক সময়ের গবেষকদের সম্মিলিত কাজ, যা ইসলামী জ্ঞান প্রতিষ্ঠানের দ্বারা প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি ইসলামী বিপ্লব পরবর্তী মেহদাবী গবেষণার ফলস্বরূপ তৈরি হয়েছে। এই হাদীস গ্রন্থের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এটি মেহদাবী হাদীসের বিবর্তনমূলক অধ্যয়ন করার সুযোগ প্রদান করে। আসলে, এই বইটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, ব্যাপক অনুসন্ধান এবং প্রতিটি হাদীসের উৎস থেকে তার বিশ্লেষণ করা।

গবেষক আরও বলেন: হাদীসের নানা উৎস থেকে মেহদাবী বিষয়ক হাদীস সংগ্রহ ও তাদের সঠিকভাবে সাজানোর মাধ্যমে এই গ্রন্থটি তৈরি হয়েছে। তাই, 'ইমাম মাহদীর হাদীসের অভিধান' এ মেহদাবী হাদীসের বিবর্তন দেখতে এবং বিশ্লেষণ করতে পারা সম্ভব। এর মাধ্যমে, প্রামাণিক সূত্রগুলির অনুসন্ধান করে হাদীসের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে গভীরভাবে ধারণা পাওয়া যায়।

তিনি বলেন: এছাড়াও, যেহেতু এই গ্রন্থে হাদীসগুলোর বিশ্লেষণ সাধারণ মুসলিম সম্প্রদায়ের চিন্তাভাবনার ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে, তাই এটি উভয় পক্ষের (শিয়া এবং সুন্নি) মধ্যে মেহদাবী বিষয়ের তুলনামূলক বিশ্লেষণও করার সুযোগ সৃষ্টি করে।

গবেষক আরও বলেন: এটি কেবলমাত্র শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মেহদাবী মতবাদে পার্থক্যগুলোকে তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি করে না, বরং একে আরো গভীরভাবে বিশ্লেষণ করার জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করে, যা ইসলামী চিন্তাবিদদের জন্য একটি অত্যন্ত মূল্যবান গবেষণার উপকরণ।

তিনি উল্লেখ করেন: এই গ্রন্থের মাধ্যমে, মেহদাবী হাদীসের অধ্যয়ন শুধু হাদীসের বিবর্তন এবং তাদের উত্স অনুসন্ধানের ওপরেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এতে মেহদাবী সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধারণার বিশ্লেষণও করা হয়, যা ইমাম মাহদীর বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত প্রাচীনতর কিছু ভুল ধারণা এবং আপাত বিরোধগুলো দূর করতে সাহায্য করবে।

মেহদাবী বিষয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা

মেহদাবী গবেষণা ক্ষেত্রের এক সদস্য বলেন: ইসলামী বিপ্লবের পর, মেহদাবী বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটেছে, যা হল মেহদাবী গবেষণায় বৈজ্ঞানিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যক্রমের বৃদ্ধি। এই পরিবর্তনটি মেহদাবীকে একটি নির্দিষ্ট প্রশ্ন এবং গবেষণা দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে পর্যালোচনার মাধ্যমে ঘটেছে। এর ফলস্বরূপ, মেহদাবী বিষয়ে পাঠকদের চাহিদা এবং জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে।

তিনি বলেন: এই পরিবর্তনটি বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় যে, মেহদাবী বিষয়ক গ্রন্থসমূহ আর শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য নয়, বরং এটি কৌশলগত চিন্তা এবং জ্ঞানের ক্ষেত্র হিসেবেও গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে। বিপ্লবের পর, মেহদাবী গবেষণা এক বিশেষ ক্ষেত্র হিসেবে গুরুত্ব পায় এবং মাদ্রাসার গবেষণা কেন্দ্রগুলিতে একটি আলাদা বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

তিনি আরও বলেন: ইসলামী বিপ্লবের পর, কুম মাদ্রাসায় মেহদাবী গবেষণার পরিমাণ এবং গুণগতমান উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং এই বিষয়টি এক দশকের মধ্যে বিশেষ গবেষণার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

গবেষক উল্লেখ করেন: মেহদাবী গবেষণার ক্ষেত্রে এটি একটি পরিবর্তন ছিল যে, পূর্বে যেটি শুধুমাত্র একটি বিশ্বাসগত এবং কথামৃতির বিষয় ছিল, তা এখন একটি সামরিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন: এই ধরনের গবেষণা প্রক্রিয়া, মেহদাবী বিষয়ে যে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে, তা অদূর ভবিষ্যতে বৃহত্তর শ্রেণির মানুষকে মেহদাবী বিষয়টি বুঝতে সাহায্য করবে এবং এর সত্যিকারের গুরুত্ব তাদের কাছে পরিস্কার করবে।

এছাড়া, তিনি যোগ করেন: মেহদাবী গবেষণায় এই ধরনের গুণগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যে গবেষণাগুলি বিপ্লবের আগে শূন্য ছিল, তা এখন দশ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে গেছে।

তিনি বলেন: যেহেতু এই গবেষণাগুলি মেহদাবী সম্পর্কিত তথ্য এবং ধারণা পরিষ্কার করতে সাহায্য করছে, তাই আমরা এখন এমন গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারি, যেমন মেহদাবী বিষয়ক গ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠা।