হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ৭ জুন ২০২৫ — ঈদুল আজহা, পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় কুমারপুর শিয়া জামে মসজিদে।
মসজিদের ইমাম সাহেব হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মুনির আব্বাস নাজাফী তার ঈদের খুতবায় বলেন, মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব, শুধুমাত্র পশু কোরবানির দিন নয়, বরং এক আত্মত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের মহান শিক্ষা বহন করে। তিনি তার খুতবায় তুলে ধরেছেন কোরবানির প্রকৃত তাৎপর্য এবং এর পেছনের ইতিহাস।
খুতবায় কোরআনের একটি বিখ্যাত আয়াত—"وَفَدَيْنَاهُ بِذِبْحٍ عَظِيمٍ" অর্থাৎ "আর আমি তার পরিবর্তে দিলাম এক মহান কোরবানি"—উল্লেখ করে বলেন, এখানে ইব্রাহিম (আ.)-এর মহান আত্মত্যাগ ও আল্লাহর পক্ষ থেকে ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে প্রেরিত পশুর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই কোরবানি আসলে ইঙ্গিত করে ভবিষ্যতের আরও বড় কোরবানির দিকে, যেটি কারবালার ময়দানে ইমাম হুসাইন (আ.) ও তার পরিবার দ্বারা সম্পন্ন হয়।
বিশিষ্ট আলেম বলেন, “প্রতিবছর ঈদে আমরা পশু কোরবানি করি ঠিকই, কিন্তু আসল কোরবানির শিক্ষা হলো নিজের ভিতরের হিংসা, রাগ, অহংকার, ও দম্ভকে কোরবানি করা।” তিনি বলেন, “এই ঈদ হতে পারে এক উপলক্ষ—নিজেকে পরিশুদ্ধ করার, সমাজে শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার।”
মাওলানা মুনির আব্বাস আরও বলেন, আদম (আ.)-এর দুই পুত্রের কোরবানির প্রসঙ্গে। হাবিল ও কাবিল—উভয়েই আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি করেছিলেন, কিন্তু কবুল হয়েছিল কেবল হাবিলের। তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, হাবিল কোরবানি করেছিলেন খালিস নিয়তে, কাবিল করেছিলেন কৃপণতা ও অহংকার থেকে। আল্লাহর নিকট কবুলযোগ্য কোরবানি সেই, যেটা আসে আত্মসমর্পণ, খাঁটি নিয়ত ও তাকওয়ার মাধ্যমে।
এই ঈদ আমাদের সামনে আবারো সেই চিরন্তন প্রশ্ন তোলে—আমাদের কোরবানি কি কেবল রূপ, না কি তার অন্তরে আছে আত্মশুদ্ধি?
আসুন, আমরা পশু কোরবানির পাশাপাশি নিজের ভেতরের খারাপ গুণগুলোও কোরবানি করি। তবেই ঈদ হবে সফল, ত্যাগ হবে পূর্ণতা-প্রাপ্ত।
আপনার কমেন্ট