হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হুজ্জাতুল ইসলাম মোহাম্মদ এলাহী খোরাসানী, ইসলামী বিপ্লবের পক্ষে গণমানুষের আলেমদের ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় পরিষদের সচিব, হাওযা নিউজ এজেন্সির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেন, দখলদার জায়নবাদী শাসকের ইরানে সাম্প্রতিক অপরাধমূলক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ধর্মীয় বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা এখন অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, এখন আর জটিল বিশ্লেষণের সময় নয়। আজকের সমাজ স্পষ্ট, অনুপ্রেরণাদায়ক এবং দৃঢ়ভাবে উচ্চারিত ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের কণ্ঠস্বরের প্রয়োজন অনুভব করছে।
তিনি আরও বলেন, মানুষ চায় তাদের ধর্মীয় নেতাদের কাছ থেকে এই ভয়াবহ সময়ের বিষয়ে স্পষ্ট ও কৌশলগত অবস্থান শুনতে। বিশেষ করে আলেম ও ফকীহগণ যেন সমাজের পথপ্রদর্শক হন।
তিনি বলেন, যখন ইসলামবিদ্বেষী শত্রুরা ইরানের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, তখন হাওযা ইলমিয়া (ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান) হওয়া উচিত মানুষের আশ্রয়স্থল এবং সার্বজনীন দিকনির্দেশনার কেন্দ্র।
হুজ্জাতুল ইসলাম এলাহী খোরাসানী বলেন, প্রতিরোধ ফ্রন্ট ও জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে এখন একটি অস্তিত্বের যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। ইসলামী ইরান, এই প্রতিরোধ অক্ষের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে সরাসরি এই আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু। এখনই সময় এসেছে জায়নবাদী শাসনের সঙ্গে চূড়ান্ত হিসাব-নিকাশের।
তিনি যোগ করেন, সাম্প্রতিক হামলাগুলো দেখিয়েছে, জায়নবাদী শাসক পূর্বের জবাব থেকে শিক্ষা নেয়নি। এবার তাকে এমন একটি শিক্ষা দিতে হবে যা শুধু শালীনতার নয় বরং চিরস্থায়ী শিক্ষা (درس ابد) হিসেবে ইতিহাসে অম্লান থাকবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই শিক্ষা এমন হতে হবে, যাতে ২৩ খোরদাদ ১৪০৪ সাল (১৩ জুন ২০২৫) ইতিহাসে জায়নবাদী শাসকের রাজনৈতিক ও সামরিক জীবনের পতনের সূচনার দিন হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, আজ ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এমন অবস্থানে রয়েছে যে, সে ইচ্ছা করলে জায়নবাদী শিশু হত্যাকারী শাসনের জীবনধারার চিরতরে অবসান ঘটাতে পারে ও উচিতও তাই করা।
পরবর্তীতে তিনি বলেন, এই সংকটময় সময়ে আলেম সমাজের ভূমিকা অনন্য। তারা জনগণের মধ্যে ঐক্য, সহমর্মিতা এবং স্পষ্ট দিকনির্দেশনা ছড়িয়ে দিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে মসজিদগুলো হতে হবে আলোকপ্রদর্শন, হৃদয়ের সংযুক্তি এবং জিহাদে তাবয়িন (সত্য তুলে ধরার সংগ্রাম)-এর কেন্দ্র। মসজিদগুলোকে আবার প্রতিরোধ, সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের দুর্গে পরিণত করতে হবে যেমনটি হয়েছিল পবিত্র প্রতিরক্ষা (ইরান-ইরাক যুদ্ধ) সময়কালে।
তিনি বলেন, আজ আলেমদের দায়িত্ব হলো জনগণের শক্তিকে সক্রিয় করে মসজিদগুলোকে একটি প্রেরণামূলক ও পথপ্রদর্শক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা—যেখানে শুধু ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিরোধ আন্দোলনের দিকনির্দেশনা শুরু হয়।
হুজ্জাতুল ইসলাম এলাহী খোরাসানী আরও বলেন, “আসন্ন দাহে-ই বেয়েলায়াত (ইমামতের দশক) ও মহরম মাস উপলক্ষে আমরা জীবহে রুহানিয়াত-এর পক্ষ থেকে লক্ষ্যনির্দেশক শিরোনামের অধীনে উপযুক্ত উপকরণ প্রস্তুত করেছি, যা আলবাইত ও হোসেইনি সমাবেশগুলো থেকে সর্বাধিক উপকার তোলার একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে—এই সব সমাবেশই ইতিহাস জুড়ে জাতির জাগরণ ও প্রতিরোধ সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখার কেন্দ্র হয়ে এসেছে।
আপনার কমেন্ট