হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, মহররম এবং কারবালার শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠিত আজাদারীর মজলিস মুসলিম সমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় আচার। এই মজলিস শুধু আবেগের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং তা ঈমান, তাকওয়া, ও ইলম বৃদ্ধি এবং সত্য-অসত্যের পার্থক্য বোঝানোর একটি মহান মাধ্যম। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু নতুন নিয়ম-কানুন ও উপকরণ এই মজলিসে সংযুক্ত করা হচ্ছে, যেগুলোর কারণে কখনো কখনো দ্বীনের মৌলিক শিক্ষা প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
আজাদারীর ফজিলত হাদীসে স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। সেই হাদিসগুলো সুন্দর ভাবে বর্ণনা করা দরকার।
আজাদারীতে নতুন নিয়ম চালু করার ব্যাপারে সতর্কতা
বর্তমান যুগে কিছু জায়গায় আজাদারীকে "আধুনিক" করার জন্য কিছু নতুন উপায় ও অনুষ্ঠান চালু করা হচ্ছে। যা আসলে আজাদারীর মূল আত্মাকে আঘাত করে এবং কষ্টদায়ক শহীদের স্মরণকে বিনোদনের মাধ্যমে উপস্থাপন করে ফেলতে পারে।
ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি ও দায়িত্ব
ইসলামে ইবাদতের বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সীমার বাইরে গিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করাকে “বিদ’আত” বলা হয়, যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। নবী করিম (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন:
"প্রত্যেক নতুন উদ্ভাবন (বিদ’আত) গোমরাহী এবং প্রত্যেক গোমরাহী আগুনে স্থান পাবে।"
— (সহীহ মুসলিম)
সমাধান ও দিকনির্দেশনা
১- আজাদারীর মধ্যে নতুন কিছু যুক্ত করতে হলে অবশ্যই তা কুরআন-সুন্নাহ, আহলে বাইতের শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
২- মজলিস যেন কেবল আবেগনির্ভর না হয়; বরং তার মাধ্যমে মানুষের ইলম, আখলাক, এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি পায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
৩- নতুন প্রথা চালুর আগে ইসলামী বিদ্বানদের পরামর্শ নিতে হবে।
৪- আজাদারীর মাধ্যমে সত্য ও ন্যায়ের বার্তা ছড়াতে হবে, যাতে ইমাম হুসাইনের আদর্শ সমাজে কার্যকর হয়।
আজাদারী হলো একটি পবিত্র ইবাদত, যা আমাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাগরণ ঘটায়। এই ইবাদতকে নতুন রীতিনীতি ও আবেগনির্ভর অতি উপস্থাপনার মাধ্যমে বিকৃত করা ইসলাম ও আহলে বাইতের প্রতি সুবিচার নয়।
আমরা যেন হুসাইনের মজলিসকে যথাযথ গুরুত্ব, সতর্কতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করি—এটাই সময়ের দাবি।
আপনার কমেন্ট