শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫ - ২০:২০
নানপারায় আন্তর্জাতিক শোকানুষ্ঠান: দুই দেশের মুমিনদের উপস্থিত

নানপারা ভারতের অভ্যন্তরে থাকলেও এটি নেপাল সীমান্ত থেকে মাত্র ২১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই ভৌগোলিক অবস্থানই একে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় মিলনমেলার কেন্দ্র করে তুলেছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তর প্রদেশের বহরাইচ জেলার সীমান্তবর্তী শহর নানপারা একসময় ছিল শিয়া নবাবদের বাসস্থান। আজও এই ঐতিহাসিক শহরে তাদের নির্মিত বহু পুরনো মসজিদ, হোসেনিয়া এবং দরগাহ সংরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে, যা প্রাচীন শিয়া সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে টিকে আছে। দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকা উত্তর প্রদেশের অন্যতম প্রধান শিয়া অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।

নানপারা ভারতের অভ্যন্তরে থাকলেও এটি নেপাল সীমান্ত থেকে মাত্র ২১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই ভৌগোলিক অবস্থানই একে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় মিলনমেলার কেন্দ্র করে তুলেছে।

সম্প্রতি এখানেই অনুষ্ঠিত হয়েছে একটি বিশাল শোকানুষ্ঠান, যার উদ্যোক্তা ছিলেন নেপালের শিয়া আঞ্জুমানের সভাপতি জনাব সৈয়দ আফতাব হুসেন রিজভী।
(এবং বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা জয়নুল আবেদিন সাহেব কিবলা। ) তাঁর পূর্বপুরুষদের বাড়ি এই নানপারা শহরেই অবস্থিত, এবং তিনি সেই ঐতিহ্যকে ধরে রেখেই প্রতিবছর এ ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন।

অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় আচারানুষ্ঠান নয়, বরং ভারত ও নেপালের মুমিনদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ববোধ এবং ধর্মীয় ঐক্যের এক উজ্জ্বল নিদর্শন। দুই দেশ থেকে আগত শত শত মুমিন এই শোকানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। তাজিয়া, মাতম, মজলিস এবং মারসিয়া পাঠের মধ্য দিয়ে এই শোকানুষ্ঠান পালন করা হয়, যা পুরো নানপারাকে এক আবেগঘন পরিবেশে পরিণত করে।

স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় পুরো অনুষ্ঠান অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।

এই আন্তর্জাতিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান কেবল একটি শোকানুষ্ঠান নয়, বরং দুই প্রতিবেশী দেশের শিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যগত বন্ধনের প্রতীক হয়ে উঠেছে। নানপারা আবারও প্রমাণ করেছে, ধর্মীয় সংস্কৃতি কেবল সীমান্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা হৃদয়ের মিলন ঘটাতে পারে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha