সোমবার ৪ আগস্ট ২০২৫ - ২১:৪২
আরবাঈনের যাত্রীরা যে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ নীতি মেনে চলবেন 

হুজ্জাতুল ইসলাম ও মুসলিমিন হোসেইনি কোহসারি এ বছরের আরবাঈনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার নীতি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছেন।

হাওযা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হুজ্জাতুল ইসলাম ও মুসলিমিন সাইয়েদ মুফিদ হোসেইনি কোহসারি, হাওযা নিউজ এজেন্সি–এর সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপচারিতায়, এ বছরের আরবাঈন এবং আরবাঈনের পদযাত্রায় আন্তঃসভ্যতামূলক সংলাপের ক্ষেত্রে যাত্রীদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও আলোচনার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেন।

আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-পরিচালকের বিস্তারিত বক্তব্য নিচে দেওয়া হলো:

আমরা এখন আরবাঈনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি এবং অসংখ্য প্রেমময় হৃদয় কারবালার দিকে, আরবাঈনের যিয়ারতের উদ্দেশ্যে, ছুটে চলেছে। আল্লাহর অনুগ্রহে, আগের বছরের মতোই, বিভিন্ন দেশের কোটি কোটি যাত্রীর অংশগ্রহণে এবং ইরাকের মহান জনগণের আতিথেয়তায় এই মহাযাত্রা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

কিছু বন্ধু জানতে চেয়েছেন, আরবাঈনের পরিবেশে বিশেষ করে যারা ভিন্ন ভাষা জানেন বা ইরাকের প্রিয় জনগণ যারা অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ ফারসি জানেন, তাদের জন্য কোন বিষয়গুলো আলোচনার জন্য বেশি উপযুক্ত। অবশ্যই, ইরান ও ইরাকের জনগণ পরিপক্ক, উচ্চ মানসিকতা, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞাসম্পন্ন, যারা নিজেরাই অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে পারেন। তবে আমরা এই বছর, বিশেষ করে সাম্প্রতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে এবং বছরের পর বছর অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে, কয়েকটি অগ্রাধিকার ও প্রস্তাব তুলে ধরছি।

আরবাঈনের আতিথেয়দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের গুরুত্ব
প্রথম যে বিষয়ে জোর দেওয়া উচিত তা হলো— ইরাকের জনগণ, সরকার, গণ্যমান্য ব্যক্তি, গোত্রপ্রধান, উপজাতি, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতা এবং বিশেষ করে আলেম ও মুজতাহিদদের আতিথেয়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ। বিশেষ করে ইরাকের মহান মারজায়ে তাকলিদ আয়াতুল্লাহ আল-উজমা সিস্তানির দিকনির্দেশনা, নেতৃত্ব ও সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো উচিত। এই কৃতজ্ঞতার ভাষা আমাদেরকে আরও বিস্তৃত করতে হবে; কেবল আগের ধন্যবাদেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। অর্থাৎ শুধু পূর্ববর্তী মুকিবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে থেমে গেলে হবে না, কারণ এই মহান, ঐতিহাসিক ও কৌশলগত ঘটনা সমস্ত আহলে বায়তের প্রেমিক, প্রতিরোধ ফ্রন্টের অনুসারী এবং মুসলমানদের হৃদয়কে ইমাম হোসেইন (আ.)–এর পতাকার নিচে একত্রিত করেছে। তাই প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— ইরাকের জনগণকে এই বিশাল শিয়া, ইসলামী ও মানবিক অনুষ্ঠানের আতিথেয়তা, ব্যবস্থাপনা ও সংগঠনের জন্য ধন্যবাদ জানানো।

অঞ্চলীয় দেশসমূহ ও প্রতিরোধ ফ্রন্টের ভাগ্য-সংযোগের ওপর গুরুত্বারোপ
দ্বিতীয় বিষয় হলো— সম্প্রতি ১২ দিনের ইসরাইলি দখলদার ও আমেরিকার চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের পর, ইরাকের জনগণ— সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ, আলেম ও মুজতাহিদ— ইরানের জনগণের প্রতি অসাধারণ সহানুভূতি ও সমর্থন দেখিয়েছেন, যার জন্য বিশেষভাবে তাঁদের ধন্যবাদ জানানো উচিত। আমাদের বিশ্বাস, এই যুদ্ধ কেবল ইরানি ও শিয়াদের ভাগ্য নির্ধারণ করেনি, বরং এটি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক ঘটনা যা ভবিষ্যতে অঞ্চল, প্রতিরোধ ফ্রন্ট এবং ইসলামী বিশ্বের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি কিছু দল ও গোষ্ঠী, যাদের কাছ থেকে আগে এতটা সহমর্মিতা আশা করা হয়নি, এই সময়ে অভূতপূর্ব ঐক্য প্রদর্শন করেছে। এই ঐক্য ও সহমর্মিতাকে মর্যাদা দিতে হবে এবং নিজেদেরকে মনে করিয়ে দিতে হবে যে এটি রক্ষা করা অপরিহার্য।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha