বুধবার ৬ আগস্ট ২০২৫ - ০৯:২২
ইরাকে আরবাঈন উপলক্ষে ১,০০০ জন ইমাম রেজা (আ.)-এর মাজারের খাদেম মোতায়েন

আরবাঈন উপলক্ষে ইরাকে বিপুলসংখ্যক জিয়ারতকারীর আগমনকে কেন্দ্র করে ইমাম রেজা (আ.)-এর পবিত্র মাজারের তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা আস্তানে কুদসে রাজাভি প্রায় ১,০০০ জন খাদেমকে ইরাকের বিভিন্ন শহরে মোতায়েন করেছে। তারা খাবার সরবরাহ, চিকিৎসাসেবা, আবাসনসহ নানা সেবামূলক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: আরবাঈনের সময়কে সামনে রেখে নজাফ, কারবালা, কাজেমাইন এবং সামেরা-সহ গুরুত্বপূর্ণ জিয়ারতকেন্দ্রগুলোতে এসব খাদেম "মুকিব" নামে পরিচিত শিবির স্থাপন করেছেন।

সাইয়্যেদ আলী বামাশকি, যিনি দরগার সেবাসমূহের পরিচালক, জানান— এই কর্মসূচি আরবাঈন ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং মাশহাদের গণ্ডি পেরিয়ে ইরাকের ভেতরেও ইমাম রেজা (আ.)-এর খাদেমদের সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে তিনটি সরকারি কাফেলা ও কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী দল ইরাকে পৌঁছেছে। মুকিবসমূহ পরিচালিত হচ্ছে ইমাম রেজা (আ.)-এর নামেই এবং স্থানীয় আয়োজকরা এতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন।

একটি বিশেষ দল—“দয়ালু জাতির দূত”—কে পাঠানো হয়েছে, যারা মাজারের পতাকা ও পবিত্র স্মারকসামগ্রী নিয়ে জিয়ারতপথের বিভিন্ন মুকিবে পৌঁছে দিচ্ছে।

এ পর্যন্ত দুটি কাফেলা রওনা হয়েছে, যাদের মাধ্যমে খাদেম ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১,০০০ জন ইউনিফর্মধারী খাদেম ইরাক ও ইরানের দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত এলাকায় সেবা কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন।

তাদের দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে: প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ খাবার প্রস্তুত ও বিতরণ,

জিয়ারতকারীদের আতিথেয়তা ও বিশ্রামের ব্যবস্থা,

প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা প্রদান,

ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আয়োজন পরিচালনা,

সরঞ্জাম মেরামত,

ঐতিহ্যবাহী খাদ্যপণ্য যেমন লবণ, মিষ্টি ও রুটি বিতরণ।

এই কর্মসূচি জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে শুরু হয়েছে এবং আরবাঈনের পরও কিছুদিন চলবে। এরপর খাদেমরা মাশহাদে ফিরে গিয়ে ইমাম রেজা (আ.)-এর শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

এছাড়া, কাজেমাইন শহরে মাজার জুতানবিশ (জুতা রক্ষক) দলও তাদের বার্ষিক আরবাঈন সেবাকর্মে অংশ নিয়েছে। দলপ্রধান জাফর খাইরজাদে জানান, তাঁরা মাশহাদ থেকে রেলপথে রওনা দিয়েছেন এবং আধ্যাত্মিক অনুমোদন নিয়ে এই মহৎ সেবায় অংশ নিচ্ছেন।

তাদের শিবির ৬ আগস্ট থেকে ১০ দিন কাজ করবে, যেখানে প্রতিদিন ২,০০০ জনের নাস্তা এবং ৬,০০০ জনের জন্য মধ্যাহ্ন ও রাতের খাবার পরিবেশন করা হবে। খাবার প্রস্তুতিতে ৫০ জন পুরুষ ও রুটি তৈরিতে নারী স্বেচ্ছাসেবীরা সহায়তা করছেন।

খাইরজাদে বলেন, “ঐক্য ও নিষ্ঠার সঙ্গে পরিচালিত এই খালেস ও বিনয়ী সেবার মাধ্যমে জিয়ারতকারীদের সন্তুষ্টি অর্জন এবং ইমাম রেজা (আ.) ও ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বরকত লাভ হোক—এই আমাদের কামনা।”

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha