হাওজা নিউজ এজেন্সি: তিনি বলেন, “'স্মরণ' শব্দটি শুধু 'আমি ঘটনাগুলো মনে করি' এটুকু বোঝায় না। বরং এর অর্থ হলো সেই ঘটনাগুলোকে আবার অনুভব করা, জীবন্ত করে তোলা — যেন তা আমার জীবনে, আমার চেতনায় আবার বেঁচে ওঠে।”
অধ্যাপক হিউয়ারের মতে, এই স্মরণ প্রক্রিয়া হচ্ছে একটি দর্পণ, যার মাধ্যমে আমরা কারবালার তাৎপর্য আমাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে উপলব্ধি করতে পারি। তাঁর ভাষায়, এটি "দিনটিকে পবিত্র রাখার" একটি উপায়। তবে এই পবিত্রতা আনন্দময় নয়; এটি পবিত্র কারণ ঘটনাটি বিশাল নৈতিক ও আধ্যাত্মিক গুরুত্ব বহন করে।
তিনি ইমাম হুসাইন (আ.)-কে "শহীদদের রাজপুত্র" হিসেবে অভিহিত করেন, যার জীবন ও শাহাদাত পূর্ণ আত্মসমর্পণের প্রতীক। শহীদ হওয়া মানে শুধু মৃত্যুবরণ নয়; বরং ঈশ্বরের প্রতি বিনা প্রতিবাদে নিজের সমস্ত অস্তিত্ব উৎসর্গ করা।
তিনি বলেন, “আমার অস্তিত্বও তোমার হাতে। যদি তোমার ইচ্ছা হয়, আমি শত্রুর হাতে মৃত্যুও গ্রহণ করতে রাজি।”
এই আত্মসমর্পণ, অধ্যাপক হিউয়ারের মতে, মানবজাতির জন্য একটি স্মরণীয় শিক্ষা — আমাদের জীবন আমাদের নয়, বরং ঈশ্বরের। যদি ঈশ্বর কারও মৃত্যু নির্ধারণ করেন, নির্দিষ্ট সময়ে ও নির্দিষ্টভাবে, তবে সেই বান্দার উচিত তা বিনা অভিযোগে গ্রহণ করা।
“আমি কে যে অভিযোগ করব? আমি কে যে ঈশ্বরকে বলব, ‘আমি বেশি জানি’?”
এইভাবে, শহীদ হওয়া শুধুমাত্র বিশ্বাসের সাক্ষ্য নয়; এটি হল ঈশ্বরের ইচ্ছাকে সর্বান্তকরণে মেনে নেওয়ার একটি মডেল। যদিও আজকের দিনে সবাই শহীদ হওয়ার ডাক পান না, হিউয়ারের মতে, আমাদের প্রত্যেককেই জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আত্মসমর্পণের চর্চা করতে বলা হয়েছে।
কারবালাকে স্মরণ করা, তাঁর দৃষ্টিতে, মানুষের চূড়ান্ত দায়িত্ব স্মরণ করা — আর তা হলো ঈশ্বরের দাসত্ব। এই স্মরণ আমাদের আত্মসমর্পণ, বিনয় এবং আধ্যাত্মিক দায়িত্বের একটি সার্বজনীন বার্তা বহন করে।
আপনার কমেন্ট