শুক্রবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১০:৫০
ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানে চারজনের মৃত্যুদণ্ড

ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি ও গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি বিপ্লবী আদালত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশের প্রধান বিচারপতি নাসের আতাবাতি এক বিবৃতিতে জানান, অভিযুক্তরা দেশের সংবেদনশীল স্থাপনা ও কেন্দ্রগুলোর ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে সেগুলো জায়োনিস্ট শাসনের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছিল।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, তারা মোসাদ এজেন্টদের সঙ্গে জরুরি যোগাযোগের জন্য বিশেষ মোবাইল ফোন ও সিমকার্ড সংগ্রহ করেছিল। এছাড়া রাজধানী তেহরান, উরুমিয়া, শাহরুদ ও ইসফাহানসহ বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগ ঘটানোর দায়ও তাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে।

এ চারজন সামরিক ঘাঁটি, প্রতিরক্ষা স্থাপনা এবং অন্যান্য সংবেদনশীল কেন্দ্র শনাক্তকরণের কাজে সক্রিয় ছিল। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের বিনিময়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে অর্থ প্রদান করেছিল।

বিচার বিভাগের নথি-প্রমাণে মোসাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ও সহযোগিতার প্রমাণ মেলার পর উরুমিয়ার বিপ্লবী আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণা করে। এ রায় “জায়োনিস্ট শাসনের শান্তি ও নিরাপত্তা বিরোধী শত্রুতামূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন”-এর ৬ নং ধারা অনুসারে দেওয়া হয়েছে।

আতাবাতি বলেন, ইরানের বিচার বিভাগ জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা বিপন্নকারীদের বিরুদ্ধে দৃঢ় ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেবে এবং শত্রুদের এজেন্ডা অগ্রসর করার সব ধরনের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবে। তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, ইসলামি বিপ্লবের অর্জন ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় বিচার বিভাগ কোনো আপস করবে না।

গত কয়েক মাসে ইরানি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ইসরায়েলি মোসাদের হয়ে কাজ করা বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এসব ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে ঘটছে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে অবৈধ সামরিক হামলা চালায়, যাতে বহু জ্যেষ্ঠ কমান্ডার, পরমাণু বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক শহীদ হন। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মাধ্যমে পাল্টা জবাব দেয় এবং “ট্রু প্রমিজ–৩” অভিযানের অধীনে ধারাবাহিক সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে প্রবেশ করে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। এর জবাবে ইরান আত্মরক্ষার অংশ হিসেবে কাতারে অবস্থিত পশ্চিম এশিয়ার বৃহত্তম মার্কিন ঘাঁটি আল-উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

অবশেষে ২৪ জুন ইসরায়েল একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha