বৃহস্পতিবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ২১:২৭
আমাদের ফিকহ অনুযায়ী সামাজিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা হারাম

ভারতে ওয়ালী ফকিহর প্রতিনিধি:

আমাদের ফিকহ অনুযায়ী সামাজিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা হারাম

 ১২ দিনের যুদ্ধের পর ভারতীয়দের নেতৃত্ব ও ইরানের প্রতি আশ্চর্যজনক আকর্ষণ বৃদ্ধি

হুজ্জাতুল ইসলাম ও মুসলিমিন হাকিম ইলাহি বলেন: শিয়া মতবাদ সবসময়ই যুক্তিবাদ ও ফিকহি ভিত্তির ওপর অগ্রসর হয় এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য রাখে। আমরা আমাদের ফিকহ অনুযায়ী সামাজিক ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাকে হারাম মনে করি; তা ইসলামী সমাজেই হোক বা অইসলামী সমাজেই হোক। সব মারাজে-ই-তাকলিদও একই রকম ফতোয়া দিয়েছেন।

হাওযা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের জন্যে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি হুজ্জাতুল ইসলাম ও মুসলিমিন আবদুল মজিদ হাকিম ইলাহি, হাওযা নিউজ এজেন্সি পরিদর্শনের সময় সংস্থাটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন: আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামী সত্য ও শিক্ষার ব্যাখ্যা করার তাওফিক দান করুন। আপনারা যে আন্তরিকতা ও প্রেরণা নিয়ে নিরলস পরিশ্রম করছেন, তার জন্যে আমি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।

তিনি বলেন: আমি সবসময় ইমাম সাদিক (আ.)-এর এই হাদিসের ব্যাখ্যা নিয়ে চিন্তা করেছি, যেখানে বলা হয়েছে: ‘জ্ঞান কোম থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে।’
আগে আমি যখন এই হাদিস পড়তাম, তখন মনে হতো এর মানে হচ্ছে আলেমরা কুমে আসবেন, এখানে পড়াশোনা করবেন এবং পরে বই ও বক্তৃতার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে জ্ঞান প্রচার করবেন। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি ও নতুন তথ্য প্রচার পদ্ধতির আবির্ভাবের পর বুঝতে পারলাম আমাদের আগের ব্যাখ্যা পূর্ণাঙ্গ ছিল না, বরং আংশিক ছিল। এর আসল ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ‘মিডিয়া’। আপনারাই এই হাদিসকে বাস্তব রূপ দিচ্ছেন, কারণ কুম থেকে আপনারা বিশ্বকে কভার করছেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈশ্বিকভাবে তথ্য প্রচার করছেন।

তথ্য প্রচারের ঐশী দায়িত্ব

হুজ্জাতুল ইসলাম ও মুসলিমিন হাকিম ইলাহি হাওযা নিউজ এজেন্সির কার্যক্রমের রিপোর্টকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন: আমি সবসময় চেষ্টা করেছি হাওযা নিউজে প্রকাশিত সংবাদ ও তথ্য অনুসরণ করতে, যাতে সর্বশেষ হাওযা-সংক্রান্ত ঘটনাবলি সম্পর্কে অবহিত থাকতে পারি। মূল বিষয় হলো-তথ্য প্রচার কেবল একটি কাজ নয়, বরং এটি একটি ঐশী দায়িত্ব।

ভারতে সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি আরও বলেন: পবিত্র কুরআনের আয়াত অনুযায়ী, আল্লাহ তাআলা ঐশী জ্ঞান ও ধর্মীয় শিক্ষার ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব নবী (সা.) ও আলেমদের ওপর অর্পণ করেছেন। সুতরাং তথ্য প্রচার হলো অনেক মু’মিন ও দাঈদের ওপর ন্যস্ত এক ঐশী অঙ্গীকার। আজকের দিনে আপনারাই এই ঐশী দায়িত্ব পালন করছেন-যে ব্যাখ্যাকে আল্লাহ কুরআনে নবীদের দায়িত্ব হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন, সেটিকেই এখন বৈশ্বিক পরিসরে প্রচার করছেন। এটি আল্লাহর এক বিশেষ তাওফিক-আল্লাহ আপনাদের জ্ঞান ও ব্যাখ্যার ক্ষমতা দিয়েছেন, আবার সে দায়িত্ব পালনের সুযোগও দিয়েছেন। এজন্য আল্লাহর শোকর আদায় করা উচিত; এমনকি যদি কিয়ামত পর্যন্ত সেজদায় থেকেও শোকর আদায় করি, তবুও এ নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা পূর্ণ হয় না।

তিনি গণমাধ্যমের গুরুত্ব প্রসঙ্গে জোর দিয়ে বলেন: কখনও আমি কিংবা অন্যরা বক্তৃতা করি, যেখানে একশো বা দেড়শো জন, সর্বোচ্চ এক হাজার মানুষ উপস্থিত থাকে। কিন্তু একই বক্তৃতা যখন মিডিয়া বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রচারিত হয়, তখন লাখো- কোটি মানুষ তা দেখে। কোথায় সম্ভব যে একজন মানুষ নিজে এতো বড় জনসমাগম ঘটাবে? কিন্তু আপনারা এই ক্ষেত্রেই ঐশী দায়িত্ব ও অঙ্গীকার সুন্দরভাবে পালন করছেন।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha