হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ বুশেহরী “ইসলামি রিপাবলিক ব্রডকাস্টিং”-এর সাংস্কৃতিক পরিষদের অনলাইন সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাম্প্রতিক ১২ দিনের মিডিয়া যুদ্ধে জাতীয় গণমাধ্যমের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “এই যুদ্ধের সময় সেদা ও সিমার একজন নারী সংবাদকর্মী শত্রুর নির্মম বোমাবর্ষণের মধ্যেও সাহস ও ঈমান নিয়ে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন; তিনি এমনভাবে সত্যকে তুলে ধরেছেন যে, বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছে ইসলামী বিপ্লবের মকতবে গড়ে ওঠা নারীর দৃঢ়তা ও মর্যাদা কেমন এবং একইসাথে শত্রুর কদর্য মুখও প্রকাশ পেয়েছে।”
নায়েবে-রায়িসে মজলিসে খোবরেগান আরও বলেন,
“ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সেদা ও সিমা ইসলামী বিপ্লবের ইতিহাসের সংবেদনশীল সময়ে গৌরবময় ভূমিকা পালন করেছে এবং আজও ১২ দিনের মিডিয়া প্রতিরোধযুদ্ধে দৃঢ় ঈমান ও সাহসিকতার মাধ্যমে শত্রুর মুখোশ উন্মোচন করেছে।”
তিনটি ঐতিহাসিক গৌরবশিখর
আয়াতুল্লাহ বুশেহরী গণমাধ্যমের ইতিহাসে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ “শিখর” বা গৌরবময় মুহূর্তের কথা উল্লেখ করেছেন—
১. বিপ্লবের বিজয়-ঘোষণার মুহূর্ত:
তিনি বলেন, “বিপ্লবের বিজয় ঘোষণার ঐতিহাসিক মুহূর্তে জাতির কণ্ঠস্বর হিসেবে সেদা ও সিমা ইরানিদের বিজয়বার্তা প্রচার করেছিল, যা আজও জনগণের স্মৃতিতে অমলিন।”
২. পবিত্র প্রতিরক্ষা (ইরান-ইরাক যুদ্ধ) পর্ব:
“দিফা’য়ে মোকাদ্দাস” কালে সেদা ও সিমা প্রাণবন্ত গান, স্লোগান ও বীরত্বগাঁথার মাধ্যমে জাতির মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও প্রশান্তি সৃষ্টি করেছিল এবং ইরান জাতির সংগ্রামের বার্তা সারা বিশ্বে পৌঁছে দিয়েছিল—যুদ্ধক্ষেত্র থেকে শুরু করে শান্তি ও চিন্তার ময়দান পর্যন্ত।”
৩. করোনা মহামারির সময়:
“করোনার কঠিন দিনগুলোতেও সেদা ও সিমা জনগণের মানসিক স্থিরতা ও সামাজিক শান্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তখনই প্রমাণিত হয়েছে—সেদা ও সিমা দেশের সাংস্কৃতিক সদরদপ্তর। যেমন মহান নেতা বলেছেন, এটি একইসাথে একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংস্কৃতি-অভিযান কেন্দ্র।”
নতুন প্রজন্ম ও নারীদের ভূমিকা
তিনি ১২ দিনের প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নারী সাংবাদিক সাহার ইমামির মতো সাহসী কর্মীদের ভূমিকাও উল্লেখ করেছেন এবং বলেন, “সেদা ও সিমা শুধু সংবাদ প্রচারেই সীমাবদ্ধ নয়; যখন দেশ শোকাহত ছিল শহিদ কমান্ডার, বিজ্ঞানী ও সাধারণ জনগণের ক্ষয়ক্ষতির জন্য এটি জাতীয় ঐক্য ও সংহতিকে আরও গভীর করেছে।”
গণমাধ্যম: জাতির বিশ্ববিদ্যালয়
আয়াতুল্লাহ বুশেহরী ইমাম খোমেনি (রহ.)-এর বাণী উদ্ধৃত করে বলেন, “সেদা ও সিমা এমন এক সর্বজনীন বিশ্ববিদ্যালয়, যেখান থেকে সমাজের সব শ্রেণি—শিশু থেকে শুরু করে মেধাবী ও বিজ্ঞানী পর্যন্ত, দেশি-বিদেশি—জ্ঞান ও অনুপ্রেরণা লাভ করে। এই গণমাধ্যমই জাতির মুখপাত্র, যা জনগণের সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে বিপ্লবের বার্তা পৌঁছে দেয়।”
শেষে তিনি বলেন, “আজকের দিনে সেদা ও সিমার দায়িত্ব আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি ও গুরুতর। শত্রু এখন বুঝেছে—যতদিন এই গণমাধ্যম ইরান জাতির মুখপাত্র হিসেবে অবিচল থাকবে, তার কোনো যৌথ ষড়যন্ত্র বা প্রচারণা যুদ্ধ সফল হবে না।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের নেতা (রাহবারে মো’আজযমে ইনকিলাব) হচ্ছেন বিজয়ের প্রধান বর্ণনাকারী; আর রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সেদা ও সিমার মাধ্যমে সেই বিজয়গাঁথা বিশ্ববাসীর কানে পৌঁছেছে। আশা করা যায়, এই গণমাধ্যম হাওযা, রুহানিয়্যাত ও বুদ্ধিজীবী সমাজের সহযোগিতায় আহলে বাইত (আ.)-এর শিক্ষাসমূহ ও ইসলামী বিপ্লবের মূল্যবোধ প্রচারে অবিচল থেকে মানবতার মুক্তিদাতার (ইমাম মাহদী আ.ফা.) আগমনের পথ প্রস্তুত করবে।”
আপনার কমেন্ট