বুধবার ২২ অক্টোবর ২০২৫ - ১৪:৪৪
গর্ভপাত হওয়া ভ্রূণের জন্য কি গোসল ও দিয়াত (রক্তপণ) দিতে হবে?

আয়াতুল্লাহ আল উজমা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী গর্ভপাত হওয়া ভ্রূণের গোসল ও দিয়াত সংক্রান্ত একটি ফিকহি প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেছেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: চিকিৎসা ও নৈতিক জটিলতার কারণে গর্ভপাত-সংক্রান্ত বিষয়গুলো প্রায়ই সংবেদনশীল ও জটিল হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে, যখন জিনগত সমস্যার কারণে ভ্রূণ গুরুতর শারীরিক জটিলতায় ভুগছে এবং চিকিৎসকরা গর্ভপাতকে অপরিহার্য বলে বিবেচনা করেন, তখন শরিয়তের আলোকে গোসল (غُسل مَیِّت) ও দিয়তের বিধান জানা ধর্মপ্রাণ পরিবারগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।

এই প্রেক্ষাপটে আয়াতুল্লাহ আল উজমা খামেনেয়ীর কাছে উত্থাপিত একটি ইস্তেফতা (ধর্মীয় জিজ্ঞাসা)-র উত্তর এখানে উপস্থাপন করা হলো:

প্রশ্ন: জিনগত সমস্যার কারণে ভ্রূণ পানিশূন্যতা ও অচল অবস্থায় পড়েছিল। মায়ের সব চেষ্টা ও চিকিৎসা সত্ত্বেও অবশেষে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে গর্ভপাত করতে বাধ্য হতে হয়েছে।
এই অবস্থায় জানতে চাই—

১. মায়ের ওপর কি মাস্যে মাইয়্যাতের গোসল (غُسل مَسِّ مَیِّت) ওয়াজিব হবে?

২. পিতা-মাতার ওপর কি কোনো দিয়াত বা অন্য কোনো ধর্মীয় দায়িত্ব বর্তাবে?

উত্তর:

১. যদি ভ্রূণের বয়স কমপক্ষে চার মাস হয়ে থাকে এবং সে মৃত অবস্থায় গর্ভপাত হয়, তবে গোসলে মাস্যে মায়্যিত (মৃতদেহ স্পর্শের গোসল) ওয়াজিব হবে।

কিন্তু যদি সে গর্ভপাতের পর জীবিত অবস্থায় জন্মে এবং তারপর মৃত্যু ঘটে, তবে গোসল মাসে মায়্যিত ওয়াজিব নয়।

২. যদি ভ্রূণের মধ্যে রুহ (আত্মা) প্রবেশ করে থাকে, তাহলে ইহতিয়াতি ওয়াজিব (সতর্কতামূলকভাবে অবশ্যকর্তব্য) হিসেবে দিয়ত (রক্তপণ) প্রদান করতে হবে।

এবং এই দিয়াতের দায়িত্ব সেই ব্যক্তির ওপর বর্তাবে যিনি গর্ভপাতের কাজটি সম্পাদন করেছেন। তবে যদি ভ্রূণ মৃত অবস্থায় গর্ভপাত হয়, তাহলে তার জন্য কোনো দিয়াত প্রযোজ্য নয়।

সারসংক্ষেপ:
• চার মাস পূর্ণ হওয়ার পর মৃত অবস্থায় গর্ভপাত হলে গোসল মাস্যে মাইয়্যাত ওয়াজিব।
• যদি ভ্রূণ জীবিত অবস্থায় গর্ভপাত হয়ে পরবর্তীতে মারা যায়, তবে গোসল মাসে মায়্যিত ওয়াজিব নয়।
• আত্মাসহ (রুহ ফুঁকা হওয়ার পর) গর্ভপাত ঘটলে দিয়াত প্রদান করতে হবে, যা গর্ভপাতকারীর ওপর বর্তাবে।
• মৃত অবস্থায় গর্ভপাত ঘটলে কোনো দিয়াত প্রযোজ্য নয়।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha