বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর ২০২৫ - ১৪:২৩
মরহুম মির্জা নায়িনী ছিলেন জ্ঞান, তাকওয়া ও সংগ্রামের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বিশিষ্ট আলেম ও আল্লামা মির্জা নায়িনীর (রহ.) সন্তান আয়াতুল্লাহ শেইখ জাফর নায়িনী বলেছেন, মরহুম মির্জা নায়িনী সত্যিই এমন এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি জ্ঞান, কর্ম, তাকওয়া (ধর্মনিষ্ঠা) ও সংগ্রামের ক্ষেত্রে এক অনন্য আদর্শ। তাঁর জীবনধারা, চরিত্র ও রচনাসমূহ আজও হাওজায়ে ইলমিয়ার (ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্রসমূহের) জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত ও অনুপ্রেরণার উৎস।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: তিনি বৃহস্পতিবার কোম নগরীর ইমাম কাজিম (আ.) হাওজায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক “মির্জা নায়িনী কংগ্রেস”-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শহর ও হাওজা থেকে আগত বিশিষ্ট আলেম, চিন্তাবিদ ও অধ্যাপকগণ উপস্থিত ছিলেন।

আয়াতুল্লাহ জাফর নায়িনী বলেন, “আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সেই সব আয়োজক, কর্মকর্তা ও সহযোগীদের প্রতি, যারা নিষ্ঠা ও আন্তরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে এই জাতীয় মহাসম্মেলনটি সফলভাবে আয়োজন করেছেন। একই সঙ্গে আমি ধন্যবাদ জানাই হাওজায়ে ইলমিয়ার পরিচালক আয়াতুল্লাহ আলী রেজা আ’রাফি (দা.জা.)-কে, যিনি এই সম্মেলনের ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানে বিশেষ যত্ন ও আন্তরিক আগ্রহ দেখিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন শহর ও হাওজা থেকে আগত শ্রদ্ধেয় আলেম, অধ্যাপক ও অতিথিবৃন্দের উপস্থিতির জন্যও আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। এই অনুষ্ঠান মূলত এক মহান আলেম ও চিন্তাবিদের জ্ঞান, নৈতিকতা, আধ্যাত্মিকতা এবং সংগ্রামী জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার প্রকাশ।”

আয়াতুল্লাহ নায়িনী বলেন, “এমন এক সর্বগুণে গুণান্বিত ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কথা বলা সহজ নয়। মরহুম মির্জা মুহাম্মাদ হোসেইন নায়িনীর ইলমি, ফিকহি (ইসলামি আইন), নৈতিক ও সামাজিক দিকগুলো এত বিস্তৃত যে, এক সভায় তা সম্পূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। এই উপলক্ষে যে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তাঁর জীবন, চিন্তা ও রচনাসমূহের একটি অংশ সংকলিত হয়েছে। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে তাঁর জীবন ও চিন্তার বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রণীত আরও গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হবে।”

তিনি আরও যোগ করেন,
“হযরত ওয়ালিয়ে আস্‌র (আ.ফা.) এক সুপরিচিত বর্ণনায় মির্জা নায়িনীর প্রশংসা করে তাঁকে শিয়াত্বের গৌরব এবং ইসলামী সমাজের জন্য প্রশান্তির উৎস হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আমরা আশা করি, হযরত হুজ্জাত ইবনে হাসান (আ.ফা.)-এর বিশেষ অনুগ্রহে আমাদের ইসলামী দেশ শত্রুদের ষড়যন্ত্র ও প্রতারণা থেকে নিরাপদ থাকবে।”

আয়াতুল্লাহ জাফর নায়িনী বক্তব্যের শেষে বলেন,
“হাওজায়ে ইলমিয়া— বিশেষত কোম ও নাজাফের হাওজাগুলো— ইসলামি উম্মাহর দিকনির্দেশনার আলোকবর্তিকা। আশা করি, তারা হযরত ওয়ালিয়ে আস্‌র (আ.ফা.)-এর মনোযোগ ও আশীর্বাদে জ্ঞান, কর্ম ও দাওয়াতের ক্ষেত্রে আরও অগ্রসর হবে, এবং তাদের প্রভাব ইসলামী সমাজে ও বিশ্বব্যাপী প্রসার লাভ করবে।”

তিনি সমাপ্তি বক্তব্যে দোয়া করে বলেন, “আমি মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করছি— ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ নেতা, সম্মানিত মারজায়ে তাকলীদ ও আলেম সমাজকে তিনি মর্যাদাপূর্ণ ও কল্যাণময় দীর্ঘায়ু দান করুন।”

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha