শুক্রবার ২৪ অক্টোবর ২০২৫ - ১৯:০৯
পরিবারের ওপর জুলুম করলে কিয়ামতে তার ফল ভোগ করতে হবে

ইরানের রাজধানী তেহরানের চিজ্দারের হযরত কায়েম (আ.ফা.) মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও খ্যাতিমান নৈতিকতার শিক্ষক আয়াতুল্লাহ হাশেমি ইলিয়া বলেছেন, সন্তানদের শারীরিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষায় যে কোনও উদাসীনতা কিয়ামতে প্রভাব ফেলবে। পিতা-মাতা যদি তাদের কর্তব্য পালনে অবহেলা করে, সন্তান কিয়ামতে তার বিপরীতে ‘অপমানিত’ অবস্থায় দাঁড়াবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ ইলিয়া বলেন, মানুষ নিজেই নিজের ওপর জুলুম করে, যখন সে আল্লাহর ইবাদত ও নৈতিকতার পথ ত্যাগ করে এবং শুধুমাত্র দুনিয়ার আনন্দে ব্যস্ত থাকে। এর ফলে সততা, আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিক গুণাবলী নষ্ট হয়।

আয়াতুল্লাহ হাশেমি ইলিয়া আরও বলেন, সমাজে দেখা যায়, অবিশ্বাসী বা অনৈতিক ব্যক্তি সত্যিকারের কল্যাণ পায় না; তারা নিজেই নিজের ওপর জুলুম করেছে।

পরিবারের ওপর জুলুমের দিকেও তিনি সতর্ক করে বলেন, অনেক সময় অজ্ঞতা ও অবহেলার কারণে পিতামাতা সন্তানদের প্রতি অন্যায় ও দমনমূলক আচরণ করে। যে ব্যক্তি নিজেকে ন্যায়পন্থা ও আল্লাহর ইবাদতের পথে রাখে, তার উচিত পরিবারকেও সেই পথে পরিচালিত করা।

কোরআনের সূরা তাহরীম থেকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেকে এবং তোমার পরিবারকে আগুন থেকে রক্ষা কর।” অর্থাৎ, যেমন নিজেকে নরক থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করবে, তেমনি পরিবারের জন্যও সচেতন হতে হবে।

আয়াতুল্লাহ হাশেমি ইলিয়া বলেন, পরিবারের প্রতি জুলুম সবচেয়ে কঠোর অন্যায়ের মধ্যে একটি। এটি দুই দিকেই প্রযোজ্য—না পুরুষ স্ত্রী বা সন্তানদের প্রতি জুলুম করবে, না সন্তান ও স্ত্রী  পরিবারের কর্তার প্রতি। পরিবারে ঈমান, নৈতিকতা ও শান্তির পরিবেশ বজায় রাখা আবশ্যক।

সন্তানদের শিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি বলেন, পিতার কর্তব্য হল তাদের শারীরিক ও আধ্যাত্মিক দিক থেকে সঠিকভাবে তদারকি করা। শিশু ১০ বছরের আগে খেলাধুলার মাধ্যমে বেড়ে ওঠার স্বাধীনতা রাখে, কিন্তু ১০ বছর পর পিতাকে তাকে নমাজ ও ইবাদতে উৎসাহিত করতে হবে এবং মসজিদে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, পিতার সবচেয়ে মূল্যবান উত্তরাধিকার হচ্ছে নৈতিকতা, ভদ্রতা এবং ধর্মীয় গুণাবলি। শুধুমাত্র অর্থ দিয়ে সন্তানকে সঠিকভাবে গড়ে তোলা সম্ভব নয়, কিন্তু নৈতিক শিক্ষা কবর ও কিয়ামতে প্রভাব রাখে।

নবী (সা)-এর হাদিস উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, কিছু অধিকার আছে যা পিতাকে সন্তানের প্রতি পালন করতে হবে—শিক্ষা, সাঁতার, নিরাপদ জীবনযাপন ও ধর্মীয় দায়িত্ব নিশ্চিত করা।

পিতার কর্তব্য হলো সন্তানের জন্য বিবাহ, পেশা ও জীবন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। নাম নির্বাচনেও সতর্কতা প্রয়োজন। নবী (সা) বলেন, যে পিতা সন্তানকে ন্যায়পন্থা ও ভালোভাবে গড়ে তোলে, আল্লাহ তার প্রতি দয়া করবেন।

তিনি শেষ করেন, পিতাদের উচিত সন্তানদের জন্য সদা দোয়া করা। সন্তান কোনো ভুল করলে তাকে ক্ষমা করতে হবে এবং তার উত্তম শিক্ষার জন্য প্রার্থনা করতে হবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha