বুধবার ২৯ অক্টোবর ২০২৫ - ১১:০২
জায়নবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে কোরআনের নির্দেশিত ঈমানদারের দায়িত্ব

যখন মুসলিম জাতি অন্যায় ও আগ্রাসনের মুখোমুখি হয়, তখন কোরআন শুধু প্রতিরোধের আহ্বানই জানায় না, বরং সেই প্রতিরোধকে ঈমান, ধৈর্য ও আল্লাহর স্মরণে রূপান্তরিত করার পথও দেখায়। বিশেষ করে জায়নবাদী শত্রুর বিরুদ্ধে সংগ্রামে, কোরআনের নির্দেশনা আমাদের শেখায়—কীভাবে ঐক্য, নেতৃত্ব, আত্মসংযম ও আল্লাহর প্রতি আস্থা বজায় রেখে বিজয়ের পথে এগোতে হয়।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: পবিত্র কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা নির্দেশ দিয়েছেন, 

أَیُّهَا الَّذِینَ آمَنُوا إِذَا لَقِیتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا وَ اذْکُرُوا اللَّهَ کَثِیرًا لَعَلَّکُمْ تُفْلِحُونَ(٤٥) وَ أَطِیعُوا اللَّهَ وَ رَسُولَهُ وَ لَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَ تَذْهَبَ رِیحُکُمْ وَ اصْبِرُوا إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِینَ(٤٦)

হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা যুদ্ধের ময়দানে শত্রুদের সম্মুখীন হও, তখন দৃঢ় থাকো, ভয় পেও না। আল্লাহকে বারবার স্মরণ করো, যাতে সফলতা তোমার সঙ্গী হয়।

আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদেশ মান্য করো, নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িও না—কারণ তা তোমাদের মনোবল ভেঙে দেবে, সম্মান ও শক্তি হারিয়ে যাবে। ধৈর্য ধরো, নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।  [সূরা আনফাল, আয়াত ৪৫–৪৬]

এই আয়াতে ঈমানদারদের জন্য যুদ্ধকালীন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে:

১.দৃঢ়তা ও স্থিতিশীলতা: ভয় নয়, সাহসিকতা ও স্থিরতা।

২.আল্লাহর স্মরণ ও দোয়া: বিজয়ের মূল উৎস আল্লাহর রহমত।

৩.নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য: বিজয়ের জন্য সুশৃঙ্খল নেতৃত্ব অপরিহার্য।

৪.অভ্যন্তরীণ ঐক্য: বিভেদ নয়, ঐক্যই শক্তি।

৫.ধৈর্য ও সহনশীলতা: প্রতিকূলতার মুখে ধৈর্যই বিজয়ের চাবিকাঠি।

আরেকটি আয়াতে আল্লাহ বলেন:

فَلَمْ تَقْتُلُوهُمْ وَلَٰکِنَّ اللَّهَ قَتَلَهُمْ ۚ وَمَا رَمَیْتَ إِذْ رَمَیْتَ وَلَٰکِنَّ اللَّهَ رَمَیٰ ۚ وَلِیُبْلِیَ الْمُؤْمِنِینَ مِنْهُ بَلَاءً حَسَنًا ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِیعٌ عَلِیمٌ

তোমরা তাদের হত্যা করোনি, বরং আল্লাহ তাদের হত্যা করেছেন। তুমি যখন তীর ছুঁড়েছিলে, আসলে আল্লাহই তা ছুঁড়েছিলেন—যাতে তিনি মুমিনদেরকে এক উত্তম পরীক্ষায় ফেলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।” [সূরা আনফাল, আয়াত ১৭]

এই আয়াত আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জিহাদে তাওহীদের মূল শিক্ষা—আমরা শুধু বাহ্যিক কর্ম সম্পাদন করি, কিন্তু কার্যকারিতা ও ফলাফল নির্ধারণ করেন একমাত্র আল্লাহ। তাই বিজয়ের মুহূর্তেও অহংকার নয়, বরং কৃতজ্ঞতা ও বিনয়ই ঈমানদারের অলংকার।

অনুবাদ: হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন ড. ফারুক হুসাইন 

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha