বুধবার ২৯ অক্টোবর ২০২৫ - ১৫:৩১
হৃদয়ের অন্তর্দৃষ্টি-ই প্রকৃত জ্ঞানের উৎস: আয়াতুল্লাহিল উজমা জাওয়াদি আমুলি

আয়াতুল্লাহ জাওয়াদি আমুলি ব্যাখ্যা করেন, বাহ্যিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা মানুষকে ফকীহ বা দার্শনিক বানাতে পারে,

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী: আয়াতুল্লাহিল উজমা জাওয়াদি আমুলি বলেছেন, আল্লাহ তাআলা মানুষকে শুধু শোনা ও বোঝার দায়িত্ব দেননি, বরং তাঁকে “দেখার” ও নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন — প্রকৃত জ্ঞান বা মারেফাত কেবল পাঠ ও আলোচনা থেকে অর্জিত হয় না; বরং তা আসে হৃদয়ের চোখে দেখা অন্তর্দৃষ্টি থেকে।

আয়াতুল্লাহ জাওয়াদি আমুলি বলেন, পবিত্র কুরআন হলো আদব ও মর্যাদার গ্রন্থ — যা মানুষের সম্মান ও শ্রদ্ধার প্রতীক।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন:

«وَاتَّبِعُوا مِلَّةَ أَبِیکُمْ إِبْرَاهِیمَ»

অর্থাৎ, “তোমরা তোমাদের পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর পথ অনুসরণ করো।”

সুতরাং মানুষ যেন নিজের মর্যাদা চিনে রাখে।

কোম শহরের মসজিদে আজমে নৈতিক পাঠদানকালে তিনি আমিরুল মুমিনীন (আ.)-এর বাণী —

«مَا شَکَکْتُ فِی الْحَقِّ مُذْ أُرِیتُهُ»

(“যখন আমাকে সত্য দেখানো হয়েছে, এরপর আর কখনো তাতে সন্দেহ করিনি”)

— এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন:

ইমাম আলী (আ.)-এর এই উক্তি প্রমাণ করে যে প্রকৃত মারেফাত পাঠ ও বিতর্কের মাধ্যমে নয়, বরং “দেখা” ও “শহূদ” (অন্তর্দৃষ্টি) থেকে অর্জিত হয়। আর এই দেখা চোখ দিয়ে নয়, হৃদয়ের দৃষ্টি দিয়ে হয়।

তিনি আরও বলেন, মানুষের জন্য জ্ঞানের দুটি বিদ্যালয় রয়েছে:

১-বাহ্যিক জ্ঞান, যা গবেষণা ও শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হয়।

২-অভ্যন্তরীণ জ্ঞান, যা আত্মশুদ্ধি, পবিত্রতা ও তাকওয়ার মাধ্যমে প্রকৃত মারেফাতে পৌঁছে দেয়।

এই দুই জ্ঞানের সমন্বয়ই পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান।

আয়াতুল্লাহ জাওয়াদি আমুলি ব্যাখ্যা করেন, বাহ্যিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা মানুষকে ফকীহ বা দার্শনিক বানাতে পারে,

কিন্তু আভ্যন্তরীণ জ্ঞানই মানুষকে “আরেফ” (আল্লাহ-জ্ঞ ব্যক্তি) ও “বিনা” (অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন) করে তোলে।

যদিও প্রত্যেকেই মালাকুতের (আধ্যাত্মিক জগতের) দর্শন লাভের সৌভাগ্য পায় না,

তবুও আল্লাহ তাআলা এই পথের দ্বার সবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছেন।

তিনি শেষাংশে পবিত্র আয়াত

 «وَکَذَٰلِکَ نُرِی إِبْرَاهِیمَ مَلَکُوتَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ»

উদ্ধৃত করে বলেন: যেমন আল্লাহ তাআলা নবী ইবরাহিম (আ.)-কে আসমান ও জমিনের মালাকুত (অন্তর্লোক) দেখিয়েছিলেন, তেমনি আমাদেরকেও আহ্বান করেছেন যেন আমরা সৃষ্টির বাহ্যিক দিকের পাশাপাশি তার অন্তর্নিহিত বাস্তবতা দেখি।

এই আহ্বান আসলে মানবজাতির প্রতি আল্লাহর এক মহাসম্মান ও সর্বোচ্চ মর্যাদার প্রতীক।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha