হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলামের প্রারম্ভিক ইতিহাসে হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.)-এর আবু বকর-এর প্রতি অসন্তোষ ও ক্ষোভ এমন এক ঘটনা, যা অনেক গবেষকের মতে পরবর্তী রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটের মূল প্রেক্ষাপটকে স্পষ্ট করে।
ইসলামী ইতিহাসের বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য উৎসে উল্লেখ রয়েছে—রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাতের পর ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী, বিশেষত সাকীফার ঘটনা ও খেলাফত বিষয়ক বিরোধ, মুসলিম সমাজে গভীর বিভক্তির জন্ম দেয়।
মুসলিম সনদ অনুযায়ী, সাকীফায় খিলাফত নির্ধারণের পর আমিরুল মুমিনীন আলী (আ.)-এর বৈধ নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া, এবং ফাদাকসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতবিরোধ—এই সব মিলিয়েই হযরত ফাতিমা (সা.)-এর মনে গভীর কষ্ট ও অভিমান সৃষ্টি হয়।
ইতিহাসের বর্ণনায় পাওয়া যায়, এই মনঃক্ষুণ্ণতা সাময়িক ছিল না; বরং তা তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত স্থায়ী ছিল এবং কখনোই মীমাংসায় পৌঁছায়নি।
এ বিষয়ে সহীহ বুখারির বর্ণনাও বিশেষভাবে আলোচিত। দার ইবনে কাসীর বৈরুত সংস্করণের এক খণ্ডে, “ফারজুল খুমস” অধ্যায়ের পৃষ্ঠা ৭৬২-তে এই ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-এর আবু বকর-এর প্রতি অসন্তোষের প্রসঙ্গ স্পষ্টভাবে উঠে আসে—যা দেখায় যে বিষয়টি শুধু আবেগগত বিরোধ ছিল না; বরং রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও পারিবারিক সম্পর্কের গভীরে প্রোথিত এক বৃহৎ দ্বন্দ্ব।
গবেষকদের মতে, এই পর্যায়ের ঘটনাবলী কেবল ব্যক্তিগত মতবিরোধ নয়; মুসলিম সমাজে নেতৃত্ব, উত্তরাধিকার, নীতি এবং কর্তৃত্বের প্রশ্নে যে মতভিন্নতা জন্ম নিয়েছিল, তা পরবর্তী ইতিহাস ও মতবাদের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্লেষকরা বলেন, হযরত ফাতিমা (সা. আ.)-এর অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া বুঝতে হলে প্রাথমিক ইসলামী ইতিহাসের এই অধ্যায়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করা জরুরি। কারণ, এ ঘটনা মুসলিম উম্মাহর পরবর্তী মতবাদগত বিভাজনের অন্যতম মূল উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়।
আপনার কমেন্ট