হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ফাতিমিয়্যার উপলক্ষে হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-এর চরিত্র ও জীবনের বিষয়ে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্বের কিছু বক্তব্য শ্রদ্ধেয় পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে।
আল্লাহর আদেশে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ
হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.আ.)-এর এমন সব আধ্যাত্মিক অবস্থান ও রূহানী মর্যাদা রয়েছে, যা আমরা সম্পূর্ণভাবে উপলব্ধি করতে সক্ষম নই। তবে তাঁর জীবনের একটি বাস্তব বৈশিষ্ট্য ছিল—
তিনি সব অবস্থায় আল্লাহর হুকুম ও আল্লাহর পথের প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পিত ছিলেন।
এই পূর্ণ আত্মসমর্পণ–ই তাঁকে ইতিহাসে তুলনাহীন এক মুজাহিদে রূপান্তর করেছে এবং তাঁর ব্যক্তিত্বকে চিরন্তনভাবে মজলুমিয়ত ও সত্যতার প্রতীক বানিয়েছে। আজও এই পতাকা উঁচু রয়েছে এবং দিন দিন তাঁর মহিমা আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠছে।
একসঙ্গে তিন দিকের সমন্বয়
ফাতিমা (সা.আ.)-এর স্বাভাবিক জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—
তিনি একই সঙ্গে তিনটি ভূমিকা পালন করেছেন:
১. একজন আদর্শ মুসলিম নারী ও গৃহিণী
স্বামী ও সন্তানদের প্রতি আদর্শ আচরণ, ঘরের দায়িত্ব পালন— এসব তিনি সর্বোচ্চ মর্যাদায় সম্পন্ন করতেন।
২. একজন দৃঢ়, সচেতন, সংগ্রামী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাতের পর যেসব গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা ঘটে, তিনি ক্লান্তিহীনভাবে জিহাদে অবতীর্ণ হন।
তিনি মসজিদে যান, ভাষণ দেন, অবস্থান ঘোষণা করেন, সত্যের পক্ষে দাঁড়ান এবং অক্লান্ত সংগ্রামী হিসেবে ভূমিকা পালন করেন।
৩. এক নিবেদিত ইবাদতকারী
তিনি রাত্রির অন্ধকারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতেন, আল্লাহর সামনে বিনম্র ও নম্র থাকতেন। তাঁর ইবাদত ছিল খোদাপ্রেমে নিমগ্ন এক আধ্যাত্মিক যাত্রা— ঠিক আল্লাহর প্রাচীন ওলিদের মতো।
এই তিন ভূমিকার একত্রে সমন্বয়— তাঁর জীবনের উজ্জ্বল বিন্দু
তিনি কখনোই ইবাদত, পরিবার ও সংগ্রামের দায়িত্বকে আলাদা মনে করেননি।
অনেকে মনে করেন:
যে ব্যক্তি ইবাদতে নিমগ্ন, সে রাজনীতি বা সমাজে ভূমিকা রাখতে পারে না;
যে ব্যক্তি রাজনৈতিক বা জিহাদি ভূমিকা পালন করে, সে ভালো মা, স্ত্রী বা গৃহিণী হতে পারে না; বা পুরুষ হলে— সে সংসারধারী মানুষ হতে পারে না।
কিন্তু ইসলামে এই ধারণা ভুল।
এই তিনটি দিক পরস্পরবিরোধী নয়— বরং একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষের চরিত্র গঠনে এগুলো একে অপরকে শক্তি জোগায়।
মানবতার শিখরে ফাতিমা (সা.আ.)
ফাতিমা যাহরা (সা.আ.) মানবতার চূড়ায় অবস্থান করেন, তাঁর চেয়ে উচ্চ কেউ নেই।
তিনি একজন মুসলিম নারী হিসেবে এমন উচ্চতায় পৌঁছানোর সুযোগ পেয়েছেন।
ইসলামে পুরুষ ও নারীর মাঝে আধ্যাত্মিক মর্যাদায় কোনো পার্থক্য নেই। সম্ভবত এই কারণেই কুরআনে ভালো ও খারাপ মানসিকতার মানুষের উদাহরণ হিসেবে দু’ক্ষেত্রেই নারীর উদাহরণ দেওয়া হয়েছে—
একদিকে ফেরাউনের স্ত্রী, অন্যদিকে নূহ ও লূতের স্ত্রী।
বক্তব্যের তারিখ: ২৫/৯/১৩৭۱ (ইরানি তারিখ অনুযায়ী)
আপনার কমেন্ট