হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, কোম প্রদেশের ইমাম-ই-জামাতদের সম্মেলনে, যা মাদরাসা-ই-ইলমিয়া মাসুমিয়্যাহ (আ.)-এ অনুষ্ঠিত হয়, হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন মালেকি জনগণের ধর্মীয় প্রশিক্ষণ (নৈতিক ও ধর্মীয় গঠন) মসজিদ ও ইমাম-ই-জামাতের কেন্দ্রীয় ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে বলেন: আলেম সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো মসজিদ পরিচালনা করা, এবং মসজিদ পরিচালনা ও সচল রাখার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কোনো কার্যক্রম আলেমদের জন্য নেই।
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) মদিনায় তাঁর প্রথম কার্যক্রমগুলো মসজিদকে কেন্দ্র করেই গড়ে তুলেছিলেন। তিনি আরও যোগ করেন: মসজিদ সবসময় শিক্ষা প্রদান, সন্দেহ ও প্রশ্নের জবাব দেওয়া এবং মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে দৃঢ় করার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছে; তাই আমাদের মসজিদের ঐতিহাসিক ও মূল্যবান ভূমিকা অবহেলা করা উচিত নয়।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন মালেকি অতীতের আলেম ও সেইসব নিষ্ঠাবান ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে বলেন, যারা কেবল আল্লাহ ও আহলে বাইত (আ.)-এর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদে কাজ করেছেন।
তিনি বলেন: গত ৪৭ বছরে ইসলাম ও বিপ্লবের পক্ষে জনগণের দৃঢ় অবস্থানের পেছনে ইমাম-ই-জামাত ও মসজিদকেন্দ্রিক আলেমদের প্রচেষ্টার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।
তিনি মসজিদ ও ইমাম-ই-জামাতের ভূমিকা শক্তিশালী করার বিষয়ে সর্বোচ্চ নেতার নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে বলেন: এই ভারী দায়িত্ব হাওজা ইলমিয়াগুলোর ওপর বর্তায়, যেন শিক্ষা, গবেষণা ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে এমন আলেম গড়ে তোলা হয়, যারা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মতো নিজ নিজ মসজিদ ও মহল্লায় সক্রিয় ও আদর্শ হয়ে উঠতে পারেন।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন মালেকি জনগণের সঙ্গে সরাসরি মুখোমুখি যোগাযোগের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাজ আদায়ের পর মানুষের মাঝে আসতেন, খোঁজখবর নিতেন এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতেন; আমাদেরও মসজিদকেন্দ্রিক কার্যক্রমে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।
তিনি ইমাম-ই-জামাতের নৈতিক গুণাবলির কথা উল্লেখ করে বলেন: মসজিদের ইমামকে সদাচারী, হাস্যোজ্জ্বল ও উন্মুক্ত মনোভাব নিয়ে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে এবং কখনোই কারও সঙ্গে রূঢ়তা বা অবহেলার আচরণ করা উচিত নয়।
কোমে হাওজা ইলমিয়ার উপ-পরিচালক সফল মসজিদভিত্তিক বাস্তব অভিজ্ঞতার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন: একটি মসজিদে শুরুতে মাত্র ১০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতেন, কিন্তু আজ সেখানে প্রায় ৩০০ জন মুসল্লি নামাজ পড়েন। এটি প্রমাণ করে যে সঠিক প্রচেষ্টা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে মসজিদকে একটি সক্রিয় ও কার্যকর কেন্দ্রে পরিণত করা সম্ভব।
তিনি ইমাম-ই-জামাতদের সফল অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষণের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন: সফল অভিজ্ঞতাগুলো লিখিত আকারে অন্য ইমাম-ই-জামাতদের কাছে পৌঁছে দেওয়া উচিত, যাতে মসজিদভিত্তিক কার্যক্রম বিস্তারের জন্য একটি আদর্শ তৈরি হয়।
শেষে হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন মালেকি ইমাম-ই-জামাতের মর্যাদা ও সম্মান রক্ষার ওপর জোর দিয়ে বলেন: মসজিদের ইমামতির মর্যাদা অত্যন্ত উচ্চ। মানুষের কাজে সক্রিয় অংশগ্রহণ, সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিতি, রোগীদের খোঁজখবর নেওয়া এবং মানুষের প্রয়োজনের জবাব দেওয়ার মাধ্যমে সমাজে আলেমদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করা উচিত।
আপনার কমেন্ট