হাওজা নিউজ এজেন্সি: টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘আফতাবে শারকি’-তে অংশ নিয়ে তিনি পবিত্র রজব মাসের ফজিলত, তাৎপর্য এবং এ মাসে পালনীয় সুন্নত আমল নিয়ে বক্তব্য দেন।
আয়াতুল্লাহ হুসাইনি বলেন, পবিত্র রজব মাস একটি বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন ও বরকতময় সময়, যা আল্লাহ তায়ালা মানুষের আত্মিক উন্নতি ও নৈকট্য অর্জনের জন্য নির্ধারণ করেছেন। এই মাস আল্লাহর সঙ্গে গভীর ও আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার এক অনন্য সুযোগ।
তিনি উল্লেখ করেন, আল্লাহ তায়ালা কিছু সময় ও স্থানকে বিশেষ মর্যাদা ও বরকত দান করেছেন। যেমন সাধারণ পাথর দিয়ে নির্মিত কাবাঘর আল্লাহর বিশেষ সম্মান লাভ করেছে, তেমনি রজব মাসও আল্লাহর সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ এনে দেয়। এ মাসের শুরু, মধ্য ও শেষের দিনগুলোতে এবং বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত রয়েছে, যা মানুষের আত্মিক জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে।
ইরাকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি বলেন, ইবাদত কেবল দোয়া ও জিকিরে সীমাবদ্ধ নয়। মানুষের সেবা করা, তাদের সমস্যা লাঘব করা, আন্তরিক হাসি দেওয়া, আর্থিক বা জ্ঞানভিত্তিক সহায়তা, শিক্ষা অর্জন ও প্রদান, গবেষণা কিংবা উদ্ভাবন—সবই ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত, যদি তা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা হয়।
তিনি খাঁটি নিয়তের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা প্রতিটি কাজ অধিক ফলপ্রসূ হয় এবং মানুষের মধ্যে আস্থা, সহমর্মিতা ও সৌহার্দ্য গড়ে তোলে। প্রত্যাশাহীনভাবে ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করাই প্রকৃত ইবাদতের পরিচায়ক।
সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ প্রসঙ্গে আয়াতুল্লাহ হুসাইনি বলেন, দুঃখজনকভাবে অনেক সময় এই গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দায়িত্বকে গৌণ হিসেবে দেখা হয়, অথচ এটি সমাজ সংস্কারের একটি মৌলিক ভিত্তি। উপদেশ ও দিকনির্দেশনা এমনভাবে দিতে হবে, যাতে মানুষ সঠিক পথে পরিচালিত হয় এবং কোনোভাবেই বিভেদ বা মনক্ষুণ্নতার সৃষ্টি না হয়। এই দায়িত্ব অবশ্যই দয়া, শালীনতা ও কার্যকর প্রভাবের সঙ্গে পালন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে জিহাদে তাবইন— অর্থাৎ সত্যের যথাযথ ব্যাখ্যা ও জনসচেতনতা সৃষ্টি—অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপদেশ ও পরামর্শ হতে হবে উদ্দেশ্যপূর্ণ ও ফলপ্রসূ, যাতে মানুষ প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করতে পারে এবং বিভ্রান্তি ও বিভেদের শিকার না হয়।
তাকওয়া ও বিশুদ্ধ নিয়তের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, পবিত্র রজব মাস তাকওয়ার চর্চা, খাঁটি ইবাদত এবং মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগের এক সুবর্ণ সুযোগ। যে কোনো কাজ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হয়, তবে তার আত্মিক মূল্য ও প্রভাব নিশ্চিত।
শেষে তিনি বলেন, রজব মাস হলো ইবাদত, মানুষের সেবা ও জিহাদে তাবইনের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমাজকে আল্লাহর পথে আরও নিকটবর্তী করার এক গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই পথে তাকওয়া, শালীনতা ও বিশুদ্ধ নিয়তই সাফল্যের মূল ভিত্তি।
আপনার কমেন্ট