বুধবার ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১৪:৫৭
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পরে কি মুসলমানরা কাফির হয়ে গিয়েছিল?

বিভিন্ন প্রাচীন ঐতিহাসিক ও হাদিসভিত্তিক গ্রন্থে এমন কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়, যেগুলোতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকালের পর মুসলিম সমাজের অবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, এই প্রশ্নটি ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বিতর্কিত বিষয়। বিভিন্ন প্রাচীন ঐতিহাসিক ও হাদিসভিত্তিক গ্রন্থে এমন কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়, যেগুলোতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকালের পর মুসলিম সমাজের অবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

ঐতিহাসিক গ্রন্থসমূহে বর্ণিত বক্তব্য

১. আহলে সুন্নাতের কিছু গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকালের পর আবু বকর মসজিদে এসে বলেন, সমগ্র ভূ-পৃষ্ঠ কাফির হয়ে গেছে।

২. আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া এবং তারিখে তাবারি গ্রন্থে এসেছে, “কাফারাতিল আরদ”
অর্থাৎ, পৃথিবী কুফরে পতিত হয়েছে।

৩. কাঞ্জুল উম্মাল গ্রন্থে ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, আরবরা ধর্মত্যাগ করল এবং অনারবরাও ধর্মত্যাগ করল।

৪. আহকামুল কুরআন গ্রন্থে বলা হয়েছে, সমস্ত আরবই ধর্মত্যাগ করেছিল।

৫. ফাওয়ায়েদে গাইলানিয়াত (শাফেয়ি) গ্রন্থে উল্লেখ আছে, সমস্ত আরব একযোগে ধর্মত্যাগ করেছিল।

৬. বিশিষ্ট মুহাদ্দিস শাইখ আল-আলবানি আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন, যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) ইন্তেকাল করেন, তখন সমস্ত আরব ধর্মত্যাগ করে।

আল-আলবানির মন্তব্য

শাইখ আল-আলবানি আরও বলেন, যদি শিয়ারা এর এক-দশমাংশ কথাও বলত, তবে সব শিয়াকেই তরবারির মুখে ফেলে দেওয়া হতো।

এই বর্ণনাগুলো ইসলামের প্রথম যুগের রাজনৈতিক, সামাজিক ও আকিদাগত সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে। তবে এগুলোর ব্যাখ্যা, প্রেক্ষাপট এবং উদ্দেশ্য নিয়ে আলেমদের মধ্যে ব্যাপক মতভেদ রয়েছে। তাই বিষয়টি বুঝতে হলে আবেগ নয়, বরং জ্ঞান, ইতিহাস ও নিরপেক্ষ বিশ্লেষণের মাধ্যমে তা অধ্যয়ন করা জরুরি।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha