বুধবার ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ - ২১:৫৬
মাহে রজব—বেলায়েতকে বোঝার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ

রজব মাসকে বেলায়েতের গুরুত্ব, অবস্থান ও মর্যাদা এবং তার মহিমা ও গৌরব অনুধাবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সোপান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের গবেষক ও ধর্মপ্রচারক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন তাকি আব্বাস রিজভী সাহেব বলেন—রজব মাসকে বেলায়েতের গুরুত্ব, অবস্থান ও মর্যাদা এবং তার মহিমা ও গৌরব অনুধাবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সোপান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আল্লাহ তাআলা যেন আমাদেরকে এই মাসের মর্যাদা চিনতে জানতে এবং তা থেকে সর্বোচ্চ উপকার লাভ করার তৌফিক দান করেন।

তিনি আরও বলেন, রজব মাস আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ মাসগুলোর একটি। নিষ্পাপ ইমামগণের (আ.) হাদিস ও বর্ণনায় রমজান মাসকে উম্মতের মাস, শাবান মাসকে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মাস এবং রজব মাসকে ইমামত ও বেলায়েতের মাস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই মাসেই ‘আলী’ নামধারী দুইজন নিষ্পাপ ইমামের জন্ম ও শাহাদাত সংঘটিত হয়েছে। সূরা তাওবার ৩৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

“নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট মাসের সংখ্যা বারো, আল্লাহর কিতাবে—যেদিন তিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন—এর মধ্যে চারটি সম্মানিত (হারাম) মাস। এটিই সুদৃঢ় ও সোজা দ্বীন।”

আহলে বাইত ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি মাওলানা তাকি আব্বাস রিজভী বলেন, এই আয়াতের তাফসির যখন নিষ্পাপ ইমামের (আ.) নিকট জানতে চাওয়া হয়, তখন তিনি বলেন: বারো মাস বলতে বারো জন নিষ্পাপ ইমামকে বোঝানো হয়েছে এবং চারটি সম্মানিত মাস বলতে সেই চারজন ইমামকে বোঝানো হয়েছে যাঁদের নাম ‘আলী’। লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো—এই চারজনের মধ্যে ইমাম আলী (আ.) ও ইমাম আলী নকী আল-হাদী (আ.)-এর সম্পর্ক রজব মাসের সঙ্গে। এই দুই ইমাম বেলায়েতের বিষয়ে এক একটি মাইলফলক। ইমাম আলী (আ.) নিজেই বেলায়েতে কুবরার অধিকারী এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পর প্রথম আল্লাহর ওলী, যাঁর পরে অন্যান্য নিষ্পাপ ইমামগণ আগমন করেছেন।

মাওলানা তাকি আব্বাস রিজভী বলেন, ইমাম আলী (আ.) ও ইমাম হাদী (আ.) রজব মাসে বেলায়েতের কেন্দ্রবিন্দু। আমীরুল মুমিনীন (আ.) সাইয়্যিদুল আওসিয়া (ওসিদের নেতা) ছিলেন, কিন্তু দুঃখের বিষয়—তাঁর প্রকৃত মর্যাদা মানুষ চিনতে পারেনি। প্রায় পঁচিশ বছর তিনি নিঃসঙ্গতা ও দুঃখের মধ্যে অতিবাহিত করেন। তিনি আল্লাহর ওলী হওয়া সত্ত্বেও মানুষ তাঁকে বোঝেনি। এতে কিছু মুনাফিকের ভূমিকা ছিল, যারা মানুষকে বিভ্রান্তির পথে ঠেলে দিয়েছিল।

হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন তাকি আব্বাস রিজভী সাহেব বলেন, হযরত ইমাম হাদী (আ.)-এর শাহাদাত ২৫৪ হিজরির রজব মাসের তৃতীয় তারিখে সংঘটিত হয়। তাঁর স্মরণীয় নিদর্শন হলো ‘জিয়ারাতে জামিয়া কাবীরা’, যা বেলায়েতের গুরুত্ব ও ইমামত সম্পর্কে অত্যন্ত বিস্তৃত ও পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা প্রদান করে।

রজব মাস সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য—বিশেষত নবীপরিবারের (আহলে বাইত) প্রতি ভালোবাসা পোষণকারী ও অনুসারীদের জন্য—অত্যন্ত পবিত্র, বরকতময় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। এই মাস বেলায়েতপ্রেমীদের বেলায়েতের মহান মর্যাদা অনুধাবনের সুযোগ করে দেয়। আমরা আল্লাহর নিকট দোয়া করি—তিনি যেন আমাদেরকে এই মাসের কদর করতে এবং তা থেকে আধ্যাত্মিক উপকার লাভ করার তৌফিক দান করেন।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha