সোমবার ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ - ০৯:৪৫
ডিজিটাল বিশ্ব কীভাবে ইমাম মাহদির (আ.জ.) নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হবে?

হাওজা / আজকের বিশ্বে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো একক ব্যবস্থাপনার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এটি প্রমাণ করে যে একজন ঐশী জ্ঞান ও পবিত্রতা সম্পন্ন নেতা সমগ্র বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, 

বিশ্বব্যাপী একক নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা

আজকের বিশ্বে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো একক ব্যবস্থাপনার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এটি প্রমাণ করে যে একজন ঐশী জ্ঞান ও পবিত্রতা সম্পন্ন নেতা সমগ্র বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম। যেমন রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসলামকে সুবিন্যস্তভাবে পরিচালনা করেছিলেন, তেমনি ইমাম মাহদি (আ.জ.)-এর ঐশ্বরিক বৈধতা এবং জনগণের স্বীকৃতি এই বিশ্ব ঐক্যকে বাস্তব রূপ দেবে।

বিশেষত, হাদিস অনুযায়ী, ইমাম মাহদির (আ.জ.) যুগে জ্ঞান পঁচিশ গুণ বৃদ্ধি পাবে, এবং প্রযুক্তি কেবল কয়েকটি পরাশক্তির একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে থাকবে না; বরং এটি বিশ্বব্যাপী সুবিচার প্রতিষ্ঠার একটি মাধ্যম হয়ে উঠবে।

বিশ্বব্যাপী শাসন: আধুনিক প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জের উত্তর কী?

প্রশ্ন:
কিভাবে একজন নেতা, আধুনিক প্রযুক্তির জটিলতার মধ্যেও বিশ্বব্যাপী শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন?

উত্তর:
অনেকেই প্রশ্ন করেন, "ইমাম মাহদি (আ.জ.) কীভাবে গোটা বিশ্ব শাসন করবেন?"

বর্তমানে গ্লোবালাইজেশন (বিশ্বায়ন) এবং একক ব্যবস্থাপনা আধুনিক বিশ্বের অন্যতম আলোচিত বিষয়। প্রতিটি আদর্শেই বিশ্বব্যাপী সমন্বিত নেতৃত্বের ধারণা বিদ্যমান।

আমরা একটি ঐশী নেতৃত্বের কথা বলছি

যেমন রাসুলুল্লাহ (সা.) সুবিশাল ইসলামী সমাজকে সুসংগঠিতভাবে পরিচালনা করেছিলেন, তেমনি একজন যোগ্য নেতা বিশ্ব পরিচালনা করতেই পারেন।

এটি সম্পূর্ণরূপে নেতার দক্ষতার ওপর নির্ভর করে

কেউ হয়তো শুধুমাত্র একটি ছোট দল পরিচালনা করতে সক্ষম,

কেউ হয়তো বড় একটি প্রতিষ্ঠান চালাতে পারে,

কিন্তু একজন বিশেষ গুণসম্পন্ন নেতা সমগ্র বিশ্ব পরিচালনা করতে পারেন।


ইমাম মাহদির (আ.জ.)-এর অনন্য বৈশিষ্ট্য-তাঁর অসীম জ্ঞান ও পবিত্রতা—তাঁকে বিশ্ব পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণ যোগ্য করে তোলে।

আধুনিক বিশ্বে একক নেতৃত্বের বাস্তবতা

আজকের আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো বিশ্বব্যাপী আইন প্রণয়ন, অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা তৈরি, এবং সীমান্ত বিলোপের মাধ্যমে বিশ্ব পরিচালনার চেষ্টা করছে।

যদি মানবতা একজন ঐশী নেতা তথা ইমাম মাহদির (আ.জ.) নেতৃত্ব মেনে নেয়, তাহলে তিনি সহজেই গোটা পৃথিবীকে সুবিচার ও শৃঙ্খলার পথে পরিচালিত করতে পারবেন।

তবে, মনে রাখতে হবে যে ইমাম মাহদির (আ.জ.)-এর নেতৃত্ব কেবলমাত্র ঐশী অনুমোদনপ্রাপ্তই নয়, বরং এটি জনগণের স্বীকৃতিও লাভ করবে।

প্রযুক্তির যুগে বিশ্বব্যাপী শাসন প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা

আজকের সমাজে অনেকেই প্রশ্ন করেন: "আধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বজোড়া সংযোগের যুগে কীভাবে একটি একক বিশ্ব সরকার গঠিত হবে?"

এই প্রশ্নের উত্তর রয়েছে ইমাম মাহদির (আ.জ.)-এর আগমনের সময় জ্ঞানের অভূতপূর্ব বিকাশে। যখন প্রযুক্তি একক শক্তির হাতে আবদ্ধ না থেকে সামগ্রিক কল্যাণের জন্য ব্যবহৃত হবে, তখন সত্যিকার অর্থেই একটি ন্যায়বিচারভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

ইমাম মাহদির (আ.জ.) আগমনের সময় জ্ঞান পঁচিশ গুণ বিকশিত হবে

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বর্তমান প্রযুক্তি, যদিও অনেক উন্নতি সাধন করেছে, তবে এর বহু নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, উন্নত দেশগুলোর তৈরি গ্রিনহাউস গ্যাসের ফলে ওজোন স্তরের ক্ষয়, পরিবেশ ধ্বংস, এবং মানবজীবনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব এসব প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কিছু দুঃখজনক পরিণতি।

একটি হাদিসে ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেন: "হযরত আদম (আ.)-এর সময় থেকে ইমাম মাহদির (আ.জ.) আগমনের সময় পর্যন্ত, মাত্র দুই অংশ জ্ঞান প্রকাশিত হয়েছে; কিন্তু যখন ইমাম মাহদি (আ.জ.) আবির্ভূত হবেন, তখন জ্ঞান পঁচিশ গুণ বৃদ্ধি পাবে এবং সম্পূর্ণ বিকশিত হবে।"

সেই সময়, যে জ্ঞান আজ কয়েকটি পরাশক্তির একচেটিয়া দখলে রয়েছে, তা সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে যাবে। এই বিশ্বজনীন জ্ঞান, আজকের প্রযুক্তির ধ্বংসাত্মক প্রভাব ছাড়াই, প্রমাণ করবে যে আধুনিক বিশ্বের উন্নতির জন্যও ঈশ্বরপ্রদত্ত পথপ্রদর্শক (হুজ্জত ও ওয়ালি) অপরিহার্য।

আল্লাহ তায়ালা সূরা লুকমানের ২০ নম্বর আয়াতে বলেন:
«أَلَمْ تَرَوْا أَنَّ اللَّهَ سَخَّرَ لَکُم مَّا فِی السَّمَاوَاتِ وَمَا فِی الْأَرْضِ»،

কোনো মানুষ কি দাবি করতে পারে যে আকাশ ও পৃথিবীর সবকিছু তার আয়ত্তে রয়েছে?

কুরআন আরও বলে:
"وَمَنْ أَصْدَقُ مِنَ اللَّهِ قِيلًا" ("আল্লাহর চেয়ে অধিক সত্যবাদী আর কে?")

এই আয়াতের প্রকৃত তাৎপর্য ইমাম মাহদির (আ.জ.)-এর আগমনের সময় পূর্ণতা লাভ করবে। জ্ঞান যত বৃদ্ধি পাবে, ততই মানুষের ঐশ্বরিক নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা প্রকাশ পাবে।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে মাহদবিয়াতের (ইমাম মাহদির দর্শন) বিষয়ে অধিক জ্ঞান অর্জন করার তৌফিক দিন-আমিন।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha