রবিবার ২০ এপ্রিল ২০২৫ - ১৮:৫৬
কান চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্র নির্বাচিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ফিলিস্তিনি ফটোগ্রাফার ফাতিমা হাসসুনা শহীদ

গাজায় ইসরাইলি বোমা হামলায় ২৫ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি ফটোগ্রাফার ফাতিমা হাসসুনা শহীদ হয়েছেন। যিনি গাজার যুদ্ধের বাস্তবতা নিজের ক্যামেরায় বন্দি করছিলেন। তাঁর সাথে পরিবারের আরও ১০ সদস্য নিহত হন। এই মর্মান্তিক খবর আসে ঠিক কয়েক ঘণ্টা পরে, যখন কান চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর জীবনীভিত্তিক তথ্যচিত্র "আপন প্রাণ হাতের মুঠোয় নিয়ে চলো" নির্বাচিত হয়।

হাওজা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজা: ২৫ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি ফটোগ্রাফার ফাতিমা হাসসুনা, যিনি গাজা যুদ্ধের করুণ ইতিহাসকে নিজের ছবিতে ধরে রাখছিলেন, ইসরাইলি বিমান হামলায় শহীদ হন। তাঁর সাথে পরিবারের ১০ জনও নিহত হন। এই ঘটনা ঘটে ঠিক তখন, যখন কান ফিল্ম ফেস্টিভালে তাঁর জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র "আপন প্রাণ হাতের মুঠোয় নিয়ে চলো" প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল।  

ফাতিমা গত দেড় বছর ধরে গাজায় চলমান যুদ্ধের সময় শুধু বোমাবর্ষণ ও ধ্বংসলীলাই নয়, বরং মানুষের আশা, সংগ্রাম ও জীবনের মুহূর্তগুলোও বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী মোহাম্মদ মুনেম তাঁর সম্পর্কে লিখেছেন:  
"যদি আমি মারা যাই, আমার মৃত্যু যেন উচ্চারিত হয়। আমি শুধু একটি সংবাদ শিরোনাম হতে চাই না। চাই আমার কাজ বেঁচে থাকুক, আমার ছবি সময়কে অতিক্রম করুক।"

ফাতিমাকে "গাজার চোখ" বলা হতো। তিনি আহতদের পাশে থাকতেন, বেদনার কাছাকাছি থাকতেন। তাঁর তোলা প্রতিটি ছবি গাজাবাসীর টিকে থাকার সাক্ষ্য হয়ে উঠত।  

ফাতিমার কাজ আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল। দ্য গার্ডিয়ান-এর মতো খ্যাতনামা সংবাদপত্র থেকে শুরু করে "গাজা, আমার প্রিয়" শীর্ষক বৈশ্বিক প্রদর্শনীতে তাঁর ছবি স্থান পেয়েছে।  

ফিলিস্তিনের সংস্কৃতি মন্ত্রণায় তাঁর শাহাদতে গভীর শোক প্রকাশ করে তাঁকে "একজন সত্যিকারের শিল্পী, লেখক ও ফটোগ্রাফার" আখ্যা দেয়। তারা বলেন, "তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মাঠে ছিলেন। তাঁর ছবির মাধ্যমে গাজাবাসীর আর্তনাদ ও যন্ত্রণা বিশ্বকে দেখিয়ে গেছেন।"

ফাতিমার শাহাদত শুধু একজন মানুষের ক্ষতি নয়, এটি একটি যুগের গল্পের অবসান, যা এখন ইতিহাসের অংশ। তাঁর ছবি চিরকাল বেঁচে থাকবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha