হাওজা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ কোররাই আজ দুপুরে ইসফাহান মাদ্রাসা ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের মসজিদে ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর শাহাদাত উপলক্ষে তালেব ও আলেমদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, "আমরা যে অবস্থানে দায়িত্ব পালন করি, তার মর্যাদা হলো—মাদ্রাসায় আমাদের পরিচয় ইমাম মাহদী (আ.)-এর সৈনিক। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আপনারা ইমাম মাহদী (আ.)-এরই খিদমত করছেন। এ সত্য মেনে নিতে হবে।"
তিনি যোগ করেন, "মাদ্রাসাকে কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাবলে চলবে না। এটিকে ইমাম মাহদী (আ.)-এর সেনানিবাস হিসেবে দেখতে হবে। তাহলে আমাদের দায়িত্ব স্পষ্ট হবে: আমরা কী করব? ইমাম মাহদী (আ.) কি আমাদের তাঁর কর্মকর্তা ও সৈনিক হিসেবে দেখেন? তিনি কি আমাদের থেকে খুশি?"
ধর্মীয় বিশ্লেষক বলেন: "প্রথমে নিজেকে সৈনিক ভাবতে হবে। কারণ, মাদ্রাসা ও তার প্রশাসনিক কেন্দ্রগুলোর কাজই হলো ইমাম মাহদী (আ.)-এর সৈনিক গড়ে তোলা। আমরা সৈনিক হিসেবে প্রথমে নিজেদের সৈনিক মানব, তারপর বুঝব ইমাম আমাদের কী চান। সৈনিকের কাজ সৈনিকত্ব করা। মুজতাহিদ, প্রচারক, শিক্ষক, গবেষক, জুমার ইমাম—সবাই ইমামের সৈনিক। প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট দায়িত্ব আছে।"
তিনি জোর দিয়ে বলেন: "প্রতিদিন যদি নিজেকে ইমাম মাহদী (আ.)-এর সেনানিবাসের সৈনিক ভাবি, তাহলে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। এটাকে প্রশাসনিক দায়িত্ব ভাবলে চলবে না। এমন ভাবনা ক্ষমতা, খ্যাতি ও পদমর্যাদার ফাঁদে ফেলবে। কিন্তু যদি নিজেকে সৈনিক ভাবি, অহংকার হবে না। অপমান অগ্রাহ্য হবে। আত্মম্ভরিতা দূর হবে।"
নৈতিকতা শিক্ষক বলেন: "কেউ কেউ বলেন, আলেমদের মধ্যে হিংসা থাকে। এটা ভুল কথা। জ্ঞান হলো নূর। নূরে হিংসার স্থান নেই। যারা হিংসায় জড়িত, তারা আলেম নয়—শুধু জ্ঞানী। জ্ঞান বাড়লেও আমল না করলে হিংসা ও নেতিবাচক প্রতিযোগিতা বাড়ে। স্বীকার করতেই হবে: জ্ঞানীদের মধ্যেই হিংসা থাকে।"
তিনি স্বীকার করেন: "জ্ঞানের স্তরে পৌঁছতে হলে প্রথমে বুদ্ধি প্রয়োগ করতে হবে। সব মানুষই আল্লাহর ইবাদতের জন্য সৃষ্ট। কেউ 'আবদুল্লাহ' (আল্লাহর বান্দা) হয়, কেউ 'আবদুন নফস' (নফসের দাস), কেউবা 'আবদুশ শয়তান' (শয়তানের দাস)। সবাই দাস, কিন্তু কার দাস—সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।"
আয়াতুল্লাহ কোররাই যোগ করেন: "এ সত্য বুঝলে আফসোসে ভুগব না। ক্ষমতা বা খ্যাতির ফাঁদে পড়ব না। কারণ, সম্মান শুধু আল্লাহর কাছ থেকে আসে। বিশ্বাস রাখতে হবে—সমস্ত রিজিক আল্লাহর হাত থেকেই আসে। মানুষ যেন ক্ষমতা বা খ্যাতিতে মত্ত না হয়।"
তিনি সতর্ক করেন: "সমাজে কেউ কেউ ক্ষমতার লোভে একটি দেশ বা মুসলিমদের প্রতিনিধির বিরুদ্ধেও দাঁড়ায়। এটা ক্ষমতার নেশা, যা পরিহার করতে হবে। এমন নেশা নিম্নস্তরেও আমাদের গ্রাস করতে পারে। তাই সতর্ক থাকতে হবে—যেন ক্ষমতার লালসায় আক্রান্ত না হই।"
আপনার কমেন্ট