হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, তালেবে ইলম (ধর্মীয় শিক্ষার্থী) ভর্তি প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা আদতে ধর্মীয় জ্ঞানার্জনে কোনো বাধা তৈরি করে না, বরং ধর্মীয় শিক্ষার জন্য এখনো নানা পথ উন্মুক্ত রয়েছে।
আয়াতুল্লাহ হায়রি ইয়াযদির দ্বারা পুনর্গঠনের শতবর্ষপূর্তির প্রাক্কালে ক্বোমের হাওযা ইলমিয়া একটি নতুন যুগে প্রবেশ করছে। এই উপলক্ষে হাওজার কাঠামোগত রূপান্তর এবং ঐতিহ্য রক্ষার সাথে সাথে আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর উপস্থাপন করা হচ্ছে।
প্রশ্ন:
হাওজা ইলমিয়া দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চ পরিষদ গঠনের মাধ্যমে এক ধরনের দাপ্তরিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে রূপ নিচ্ছে। তালেবে গ্রহণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত কিছু শর্ত হাওযার মূল আদর্শের সাথে সাংঘর্ষিক নয় কি?
উত্তর:
যেকোনো প্রতিষ্ঠান যেমন একটি কার্যকর কাঠামো প্রয়োজন, তেমনি হাওজা ইলমিয়াও এর ব্যতিক্রম নয়। যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজের ক্ষেত্র ও প্রভাব বিস্তৃত হয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই এর সংগঠনিক কাঠামোও বৃহৎ হয়। ইসলামি বিপ্লবের পর হাওযার কার্যক্রম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিস্তৃত হওয়ায় এ ধরনের প্রশাসনিক কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
ক্বোম হাওজা ইলমিয়া-র ব্যবস্থাপনা পরিষদ এবং হাওযা ইলমিয়া সমূহের উচ্চ পরিষদের গঠন, এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা তারই ফলাফল। তাই হাওযা-র প্রশাসনিক কাঠামো থাকা মানেই এটি শুধুই একটি দপ্তরে পরিণত হয়েছে, এমনটা বলা যায় না। তবে সতর্ক থাকা জরুরি যেন এই প্রক্রিয়ায় হাওজার ঐতিহ্য ও মূল লক্ষ্য ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
যেকোনো প্রতিষ্ঠান যখন নতুন সদস্য গ্রহণ করে, তখন কিছু শর্ত নির্ধারণ করে থাকে। হাওজা যেহেতু ধর্ম, নৈতিকতা ও মানুষের বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত, তাই এর ক্ষেত্রে এই শর্তাবলী আরও গুরুত্ব পায়।
তালেবে ইলম গ্রহণের এই শর্তগুলো দুই ভাগে বিভক্ত:
সাধারণ শর্ত, যেমন নৈতিক যোগ্যতা;
বিশেষ শর্ত, যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা, ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ও সাক্ষাৎকারে সফলতা।
এই শর্তের মানে এই নয় যে যাদের এগুলো নেই তারা ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারবে না। বরং, যেসব ব্যক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে হাওযা ব্যবস্থাপনার অধীনে পড়াশোনা করতে চান, তাদের জন্য এই শর্তগুলি প্রযোজ্য।
তবে “হাওজা ইলমিয়া” বলতে শুধু প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার অধীন প্রতিষ্ঠানগুলো বোঝায় না। বর্তমানে এমন বহু হাওযা রয়েছে যারা স্বাধীনভাবে কাজ করছে—তাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা, পাঠ্যসূচি, প্রশাসনিক ও ভর্তি প্রক্রিয়া—সবকিছু স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয়।
অতএব, যারা মূল হাওজা ব্যবস্থাপনার অধীনে ভর্তি হতে পারছে না, তারা এই স্বাধীন হাওযাগুলোতে পড়াশোনা করতে পারে। যেমন, বয়স্ক কেউ যদি ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী হন, তাহলে তারা মুক্ত ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং পরে আনুষ্ঠানিকতা অর্জনের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে।
সুতরাং, ধর্মীয় জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই; নির্ধারিত শর্তগুলো কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিক ভর্তি ও পাঠদানের জন্য প্রযোজ্য।
উৎস: কোম হাওজা ইলমিয়া-র সন্দেহসমূহের জবাব ও গবেষণা কেন্দ্র
আপনার কমেন্ট