হাওজা নিউজ এজেন্সি: আমিরুল মুমিনিন ইমাম আলী (আ.) বলেছেন,
اَلسَّیِّئُ الْخُلُقِ کَثیرُ الطَّیْشِ مُنَغَّصُ الْعَیْشِ
মন্দ ও খারাপ চরিত্রের মানুষ প্রচুর ভুল করে এবং তার জীবন তিক্ত ও দুর্বিষহ হয়ে উঠে।
[গুরারুল হিকাম, হাদীস- ১৬০৪]
প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা: ইমাম আলী (আ.) এই হাদিসে মন্দ স্বভাব বা খারাপ আচরণের মানুষের প্রকৃতি ও পরিণাম বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন—
১. “কাছিরুত তায়িশ” (প্রচুর ভুল করে):
খারাপ স্বভাবের মানুষ দ্রুত রেগে যায়, অস্থির হয় এবং হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে সে বারবার ভুল করে, যা তার পারিবারিক, সামাজিক ও আত্মিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
২. “মুনাগগাসুল আয়িশ” (জীবন তিক্ত হয়ে যায়): অন্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার ও দুর্ব্যবহারের কারণে কেউই তার সান্নিধ্যে থাকতে চায় না। সে একাকিত্ব, অশান্তি ও মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে, ফলে তার জীবন আনন্দহীন ও যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে।
প্রয়োজনীয় শিক্ষা:
১. শিষ্টাচার ও সদাচরণের গুরুত্ব: উত্তম চরিত্র ও ভালো ব্যবহার শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং পারস্পরিক সম্পর্ক রক্ষা ও মানসিক প্রশান্তির জন্য অত্যন্ত জরুরি।
২. আত্মনিয়ন্ত্রণের শিক্ষা: নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা, ধৈর্য রাখা এবং চিন্তা-ভাবনা করে কথা ও কাজ করা একজন মুমিনের বৈশিষ্ট্য। মন্দ স্বভাব আত্মনিয়ন্ত্রণ ধ্বংস করে দেয়।
২. সামাজিক সম্পর্ক রক্ষায় সদাচরণ: মানুষ একে অপরের সাথে বন্ধনে আবদ্ধ। খারাপ ব্যবহার পরিবারে, কর্মস্থলে বা সমাজে বিচ্ছিন্নতা ও সমস্যা তৈরি করে।
ইমাম আলী (আ.)’র এই হাদিস আমাদেরকে চরিত্র গঠনের প্রতি সচেতন করে তোলে। এটি শেখায় যে, যদি আমরা মন্দ স্বভাব পরিহার না করি, তবে শুধু অন্যরা নয়, নিজের জীবনও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। তাই উত্তম চরিত্র গঠন, নম্রতা ও সহনশীলতা অর্জন করা একজন প্রকৃত মুমিনের কর্তব্য।
আপনার কমেন্ট