মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫ - ০৯:২২
শহীদ রায়িসির নীতি ছিল সম্মান, প্রজ্ঞা ও কল্যাণের ওপর ভিত্তি করে

হুজ্জাতুল ইসলাম সালীম ইব্রাহিমি, মেহরান শহরের ওলি আসর (আ.জ.) হাওযা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক, ইলাম প্রদেশে হাওযা নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন: শহীদ রায়িসির সরকারের পররাষ্ট্রনীতি তিনটি মূল স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল: সম্মান, প্রজ্ঞা ও কল্যাণ।

হাওযা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হুজ্জাতুল ইসলাম সালীম ইব্রাহিমি, মেহরান শহরের ওলি আসর (আ.জ.) হাওযা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক, ইলাম প্রদেশে হাওযা নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন: শহীদ রায়িসির সরকারের পররাষ্ট্রনীতি তিনটি মূল স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল: সম্মান, প্রজ্ঞা ও কল্যাণ।
এই নীতি প্রয়োগে তাঁর সরকার ইমাম খোমেনি (রহ.) ও ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতার চিন্তাধারাকে অনুসরণ করেছে। এই সরকার একদিকে বিপ্লবের মূলনীতি থেকে বিচ্যুত হয়নি, আবার অন্যদিকে বিশ্বাসভিত্তিক বাস্তবতায় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে সক্রিয়, সচেতন ভূমিকা পালন করেছে।

তিনি যোগ করেন: চতুর্দশ সরকার পশ্চিমের প্রতি কৌশলগত নির্ভরতা কাটিয়ে উঠে আঞ্চলিক উদ্যোগ ও নেতৃত্বের মাধ্যমে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের অবস্থানকে একটি স্বতন্ত্র ও প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে সুদৃঢ় করেছে। "পূর্বমুখী দৃষ্টিভঙ্গি" ও আঞ্চলিক কূটনীতিতে গুরুত্বারোপ ছিল এই কৌশলগত পরিবর্তনের অন্যতম দৃষ্টান্ত।

হুজ্জাতুল ইসলাম ইব্রাহিমি আরও বলেন:
প্রতিরোধ আন্দোলনই ইসলামী বিপ্লবের পররাষ্ট্রনীতির প্রাণকেন্দ্র। তবে শহীদ রায়িসির সরকার এটিকে শুধুই একটি আদর্শিক আলোচনার বিষয় নয়, বরং একটি কৌশলগত সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করেছে।
এই সরকার স্পষ্টভাবে বুঝেছিল, পশ্চিম এশিয়ার ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করে— ইরানের টিকে থাকা ও শক্তির মূল ভিত্তি এই প্রতিরোধভিত্তিক ভূগোলের সঙ্গে সংযোগে নিহিত।

তিনি বলেন: লেবানন, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোর প্রতি সমর্থন কেবল নৈতিক বা ধর্মীয় দায়িত্ব নয়, বরং ইরানের নিরাপত্তার একটি বাস্তব চাহিদার জবাব। শহীদ রায়িসির সরকার এই সম্পর্কগুলোকে পুনঃসংগঠিত করে এবং শক্তিশালী করে ইরানের কৌশলগত প্রভাবকে ভূমধ্যসাগর ও লাল সাগর পর্যন্ত সম্প্রসারিত করেছে।

তিনি আরও বলেন:
প্রতিরোধ মানে কেবল লড়াই নয়, এটি এক ধরনের সম্মানজনক দৃঢ়তা এবং ক্ষমতার ভিত্তিতে আলোচনার নাম। শহীদ রায়িসির সরকার একদিকে প্রতিরোধের পক্ষে ছিল, আবার অন্যদিকে শক্তিশালী অবস্থান থেকে আলোচনার দরজাও খোলা রেখেছিল।
চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি, সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ও ব্রিকসে সদস্যপদ অর্জনের প্রয়াস, এবং লাতিন আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টাই এই বাস্তববাদী কূটনীতির প্রমাণ।

হুজ্জাতুল ইসলাম ইব্রাহিমি শেষে বলেন:
হাওযাগুলোকে আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের প্রতি আর নিষ্ক্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি রাখা চলবে না। যেমন অতীতে তামাক আন্দোলন, সংবিধান প্রণয়ন ও ইসলামী বিপ্লবে বড় বড় আলেমরা ভূমিকা রেখেছেন, তেমনিভাবে আজও সাংস্কৃতিক ও চিন্তাগত ক্ষেত্রগুলোতে অনুপ্রবেশ, বিভাজন ও প্রতিরোধ দুর্বল করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন: হাওযার ছাত্র ও আলেমদের রাজনৈতিক ও ইসলামী বিশ্লেষণ ক্ষমতা অর্জন করতে হবে এবং গণমাধ্যম, শিক্ষা, গবেষণা ও কূটনৈতিক কাঠামোর মাধ্যমে তারা যেন প্রতিরোধের ভাবধারা ও উম্মাহর কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠে— এই সময়ের দাবি।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha