হাওজা নিউজ এজেন্সি :এমনই একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গত ২৫ মার্চ। সেদিন ছিল এক শান্ত সকাল। ড্রোন বা যুদ্ধবিমানহীন আকাশে অস্থায়ী শান্তিতে গাজা শহরের শিশু মোহাম্মদ হাজিজী (৭) খেলতে বের হয়েছিল। কিন্তু মুহূর্তেই সেই আনন্দ রূপ নেয় ভয়াবহ ট্র্যাজেডিতে। হঠাৎ এক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকা। তার বাবা খালেদ হাজিজী দৌড়ে গিয়ে ছেলের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা প্রাণপণ চেষ্টা করলেও মোহাম্মদের চোখ দুটি বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এক চোখ অপারেশন করে ফেলে দিতে হয়, অন্য চোখের জন্য উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন বিদেশে।
বাবা খালেদ বলেন, “সে প্রতিদিন জিজ্ঞাসা করে, আমি আবার কখন দেখতে পাব? কিন্তু আমার কোনো উত্তর নেই।” তিনি আরও বলেন, “গাজার শিশুরা নির্দোষ। শুধু চাই, আমার ছেলে যেন শান্তিতে বাঁচতে পারে এবং আবার পৃথিবীটাকে দেখতে পারে।”
এই ঘটনা শুধু মোহাম্মদের একার নয়। ১৪ বছর বয়সি মাইসা আল-ঘান্দুর ও তার ৯ বছর বয়সি বোন ইয়ারা, শিশু মোহাম্মদ আবু মোয়াম্মার, নবজাতক মোস্তফা কাদৌরাসহ অসংখ্য শিশু হামলায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে অথবা পঙ্গু হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ধারাবাহিকতা ইঙ্গিত দেয়—শিশুদের নির্দিষ্টভাবে টার্গেট করে দৃষ্টিহীন ও অক্ষম প্রজন্ম গড়ে তোলার একটি সুপরিকল্পিত কৌশল বাস্তবায়িত হচ্ছে। যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধ আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।
২০১৬ সালে জাতিসংঘের ইউএনআরডব্লিউএ ‘ভিশন প্রকল্প’-এর মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি হারানো শিশুদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর নতুন দফার হামলায় আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা এত বেশি যে বিদ্যমান অবকাঠামো দিয়ে তা মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই বাস্তবতায় মানবিক ও কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তাৎক্ষণিক জোরালো পদক্ষেপ এখন অত্যাবশ্যক।
আপনার কমেন্ট