হাওজা নিউজ এজেন্সির রিপোর্ট অনুযায়ী, উরুমিয়াতে আয়োজিত আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী আকবর কোরেশির ৮০ বছরব্যাপী বৈজ্ঞানিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগ্রামের স্মরণসভায়, আয়াতুল্লাহ আলীরেজা আরাফি বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি ইমাম খোমেনির রচিত "রুহানিয়তের চার্টার" উল্লেখ করে বলেন: "ইমাম খোমেনি বিশ্ববাসীর জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন, আর ইসলামের অগ্রগতির পেছনে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। তিনি তাঁর রচনায় রুহানিয়াতকে সালাম দিয়ে শুরু করেন এবং শহীদ রুহানিয়াতদের আত্মার প্রতি দোয়া ও স্যালুট জানান। এই শহীদরাই ইসলামী বিপ্লবের গৌরব ও সম্মানের ভিত্তি বহন করেছেন।"
তিনি বলেন: "পশ্চিম আজারবাইজান (আযারবাইজান-এ-গারবি) ছিল অগ্রগামী অঞ্চল-ইসলামী বিপ্লব ও প্রতিরক্ষা যুদ্ধের সময়। আজও এটি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মাবলম্বীদের সহাবস্থানের প্রতীক এবং ইসলামী ঐক্যের প্রতিচ্ছবি। এ অঞ্চলের জনগণের অবদান ইরানের গৌরবে অপরিসীম।"
আরাফি উল্লেখ করেন: "যখন আমরা بصیر (দূরদর্শী) আলেমদের কথা বলি, তখন মনে রাখতে হবে, এরা বাসীর ও সচেতন জাতির ভেতর থেকেই উঠে এসেছেন।"
তিনি আয়াতুল্লাহ কোরেশির প্রশংসা করে বলেন: "এই ধরণের স্মরণসভাগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের উচিত জ্ঞান ও সংস্কৃতির মহাপুরুষদের সম্মান করা এবং তাঁদের অবদানকে তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় রূপে উপস্থাপন করা। আজকের দিনে আমাদের দরকার এমন এক শক্তিশালী যুবসমাজ ও নারীকুল যারা ইসলামী মর্যাদা ও গৌরব রক্ষা করবে।"
তিনি আরো বলেন: "আয়াতুল্লাহ কোরেশি হাওজা ইলমিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক ও আধ্যাত্মিক সম্পদ। তিনি ধর্মীয় জ্ঞান ও আহলে বাইতের সংস্কৃতি প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।"
আরাফি ইমাম খোমেনির ঐতিহাসিক প্রভাব উল্লেখ করে বলেন: "ইমাম খোমেনি সমকালীন ইরান, ইসলামী দুনিয়া এবং ধর্মীয় অঙ্গনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন। আজকের ইরানের সম্মান, স্বাধীনতা ও উন্নয়ন তাঁর নেতৃত্বের ফল।"
তিনি বলেন: "আজারবাইজান-এ-গারবি হলো সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও সহাবস্থানের কেন্দ্র, যা ইরানের অন্যতম গর্বিত অঞ্চল। এই অঞ্চল না থাকলে কোম ও নাজাফের হাওজা ইলমিয়ার অনেকাংশেই পতন ঘটত, কারণ এখান থেকেই বহু জ্ঞানী ও আলেম উঠে এসেছেন।"
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন: "ইরানের ঐতিহাসিক ও বিপ্লবী পরিচয় সংরক্ষণ ও ব্যাখ্যা করা আজ অত্যন্ত জরুরি। তরুণ প্রজন্মকে তাদের ইতিহাস জানতে হবে, না হলে তারা ভবিষ্যৎ গড়ার পথ হারাবে। ইতিহাসকে অবহেলা করলে পতন অনিবার্য।"
শেষে তিনি বলেন: "শত্রুরা চেষ্টা করছে ইরানি জাতির ঐতিহাসিক স্মৃতি দুর্বল করে দিতে। কিন্তু আলেম ও শহীদদের স্মরণে সংস্কৃতি গড়ে তুললে, এই হুমকিকে সুযোগে রূপান্তর করা সম্ভব। হাওজা ইলমিয়া ইসলামী দুনিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন ও গভীর প্রভাবশালী জ্ঞানকেন্দ্র-যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে চিন্তা ও জ্ঞানের উৎস। আয়াতুল্লাহ কোরেশি তার উজ্জ্বল প্রতিনিধিদের একজন এবং তাঁকে আজকের প্রজন্মের সামনে আদর্শ হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে।"
আপনার কমেন্ট