হাওজা নিউজ এজেন্সি: এই দিনেই প্রায় ১৪শ বছর আগে রাসূলুল্লাহ (সা.) দিয়েছিলেন বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণ। সেই স্মৃতিবিজড়িত পবিত্র ভূমিতেই আজ হাজিরা আল্লাহর দরবারে কান্নাভেজা চোখে প্রার্থনা করছেন—ক্ষমা চাইছেন, কল্যাণ কামনা করছেন, আর চাচ্ছেন দুনিয়ার ও আখিরাতের মুক্তি।

আরাফাতের বিশাল প্রান্তরে আজকের খুতবা দিয়েছেন মসজিদুল হারামের প্রবীণ ইমাম শায়খ সালেহ বিন আবদুল্লাহ হুমাইদ। তার ভাষণ বাংলাসহ ৩৫টি ভাষায় অনুবাদ হয়েছে, যেন পুরো বিশ্বের মুসলিম হৃদয়ে পৌঁছায় ইসলামের বার্তা, ঐক্য আর করুণা।

এ বছর হজে অংশ নিয়েছেন প্রায় ১৫ লাখেরও বেশি মুসল্লি। শুধুমাত্র বাংলাদেশ থেকেই অংশ নিয়েছেন ৮৫ হাজারের বেশি হাজি। এই বিশাল স্রোতের মধ্যে প্রত্যেক হাজির হৃদয়ে আজ শুধুই এক আর্তি—হে প্রভু! ক্ষমা করো আমাদের, গ্রহণ করো আমাদের এই সাধ্যমতো নিবেদন।

তীব্র গরমে যেন কেউ কষ্ট না পান, সে জন্য সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় হাজিদের সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তাঁবুতে অবস্থানের আহ্বান জানিয়েছে। প্রায় ৫০ হাজার চিকিৎসা ও সেবাকর্মী এ বছর হজে দায়িত্ব পালন করছেন, যা পূর্ববর্তী যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

যারা অসুস্থ, তাদেরও এ দিন অ্যাম্বুলেন্সে করে আরাফাতে হাজির করা হয়েছে, কারণ আরাফাতে উপস্থিত না হলে হজ পূর্ণ হয় না। আরাফাতের এই প্রান্তরে দাঁড়িয়ে হাজারো হাত যখন একসাথে উঠে যায় আকাশের দিকে, তখন সেই দৃশ্য সত্যিই চোখে জল আনে—এ যেন এক মহাজাগতিক আরাধনা, আল্লাহর সামনে এক বিশাল মানবস্রোতের দৃষ্টি নিবদ্ধ নিবেদন।

আজকের এই দিন আত্মশুদ্ধির, অনুতাপের, ক্ষমা পাওয়ার সর্বোচ্চ সুযোগের দিন। এই দিন আমাদের শেখায়—ঐক্য, ত্যাগ আর সত্যিকার ইবাদতের মাধ্যমে কীভাবে মানুষ আল্লাহর কাছে পৌঁছাতে পারে।