হাওজা নিউজ এজেন্সি: সাইয়্যেদ হাসান হাশেমি বলেন, “হিজাব একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐশী মূল্যবোধ, যা নারীর মর্যাদা সংরক্ষণ করে এবং সমাজের ভোগবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তাকে রক্ষা করে। এটি নারীকে বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, বরং তার চিন্তাশক্তি, মেধা ও নৈতিকতা দিয়ে মূল্যায়নের সুযোগ দেয়।”
হাশেমি বলেন, “একজন নারী যখন হিজাব গ্রহণ করেন, তখন তা তার আত্মবিশ্বাস ও আত্মপরিচয়কে দৃঢ় করে। হিজাব নারীর জন্য মানসিক প্রশান্তি ও নিরাপত্তার উৎস, যা তাকে বাহ্যিক তুলনা ও অতি-ভোগবাদী সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “হিজাব শুধু বাহ্যিক পোশাক নয়, বরং তা তাকওয়ার প্রতীক ও একজন নারীর ইলাহি মূল্যবোধের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রকাশ। সচেতনভাবে হিজাব গ্রহণের মাধ্যমে একজন নারী অন্তরের শান্তি ও প্রকৃত আত্মসম্মান লাভ করেন।”
সমাজে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ তৈরিতে হিজাবের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “হিজাব নারী-পুরুষের মধ্যে সুস্থ, সম্মানপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে, যা নারীর আত্মমর্যাদাকে প্রতিষ্ঠা করে এবং তাকে একটি স্বাধীন সত্তা হিসেবে উপস্থাপন করে।”
পরিবার কাঠামো রক্ষায় হিজাবের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “হিজাব শুধু ব্যক্তিক নয়, বরং সামাজিক ও পারিবারিক নিরাপত্তারও প্রতীক। একজন নারী যখন হিজাব পরিধান করে সমাজে চলেন, তখন তিনি নিজের পাশাপাশি পরিবারের মর্যাদাকেও রক্ষা করেন।”
তিনি আরও বলেন, “আজ শত্রুরা সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমে হিজাবের মতো একটি ইসলামী মূল্যবোধকে দুর্বল করতে চাচ্ছে। কিন্তু আমাদের সচেতন ও বিশ্বাসী নারীরা হিজাবকে রক্ষা করে এই ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করছেন এবং বিশ্ববাসীর সামনে একজন মর্যাদাবান মুসলিম নারীর উদাহরণ তুলে ধরছেন।”
তরুণদের মধ্যে হিজাবের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে উল্লেখ করে হাশেমি বলেন, “বর্তমান প্রজন্ম চিন্তাশীল ও অনুসন্ধিৎসু। তারা গবেষণা করে হিজাবের প্রকৃত তাৎপর্য অনুধাবন করছে এবং বুঝছে- হিজাব কোনো সীমাবদ্ধতা নয়, বরং আত্মপ্রকাশ, আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতার পথ।”
তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাওযাগুলোর ভূমিকার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “শিক্ষা ও গবেষণাকেন্দ্রগুলোর দায়িত্ব হিজাবের দর্শন ও সৌন্দর্য তরুণদের সামনে তুলে ধরা। হাওযাগুলো এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”
হুজ্জাতুল ইসলাম হাশেমি বলেন, “হিজাব শুধু স্থানীয় পরিচয়ের নয়, বরং তা গোটা ইসলামী উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক। বিশ্বে যেখানেই একজন নারী হিজাব পরিধান করেন, তিনি তার ইসলামী পরিচয় ঘোষণা করেন এবং এর মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বে ঐক্য ও সংহতির ক্ষেত্র তৈরি হয়।”
আপনার কমেন্ট