শনিবার ৩১ মে ২০২৫ - ১৯:৩৫
সহজ ও সাদাসিধা বিয়ে পারিবারিক স্থিতি ও সামাজিক সুস্থতার কুরআনিক পথ

ইরানের হরমুজগান প্রদেশের মহিলা হাওযায়ে ইলমিয়ার পরিচালক খানম আব্বাসি ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে বিয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে সমাজে সহজ ও সরল বিয়ের সংস্কৃতি প্রচারের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি একে পারিবারিক বন্ধন মজবুত করার এবং সামাজিক সুস্থতা নিশ্চিত করার একটি কার্যকর কুরআনিক পথ হিসেবে অভিহিত করেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বিয়ের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় জাঁকজমক ও অতিরিক্ত খরচ এড়িয়ে, তা সহজ করা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। কুরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা সূরা নূরে বলেন,
وَأَنْکِحُوا الْأَیَامَیٰ مِنکُمْ... إِن یَکُونُوا فُقَرَاءَ یُغْنِهِمُ ٱللَّهُ مِن فَضْلِهِ
“তোমাদের মধ্যে যাদের বিবাহযোগ্য মনে করো, তাদের বিবাহ দাও... যদি তারা দরিদ্রও হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের ধনী করবেন।”

এই আয়াত প্রমাণ করে, দারিদ্র্যতা ও অতিরঞ্জিত খরচ যেন যুবকদের বিয়ের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।

তিনি আরও বলেন, আজকের সমাজে আমাদের ইসলামি জীবনাচারে ফিরে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। সহজ বিয়ের মাধ্যমে কেবল মানসিক প্রশান্তি অর্জিত হয় না, বরং তা বহু সামাজিক সমস্যারও প্রতিকার।

খানম আব্বাসি হাদিস শরিফের বরাতে বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি বিয়ে করল, সে (যেন) তার দ্বীনের অর্ধেক রক্ষা করল।”

এই হাদিস স্পষ্ট করে দেয়, ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ে শুধু সামাজিক একটি চুক্তি নয়; বরং এটি আত্মিক ও নৈতিক পরিপক্বতার একটি মাধ্যম।

তিনি পরিবার, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং সংস্কৃতি-সম্পর্কিত দায়িত্বশীলদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বিয়ের বিষয়ে ভোগবাদী দৃষ্টিভঙ্গি বজায় থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত যুবসমাজ হয় বিয়ে থেকে বিমুখ হবে, নয়তো পরে নানা সমস্যায় জর্জরিত হবে। এজন্য আমাদের দায়িত্ব হলো—সহজ, সচেতন এবং সময়োপযোগী বিয়ের পরিবেশ তৈরি করা।

খানম আব্বাসি বলেন, যৌবনকাল জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার শ্রেষ্ঠ সময়। এই বয়সে মানুষের আবেগ, প্রেরণা ও দায়িত্ববোধ—সবকিছুই নতুন জীবনের সূচনায় সহায়ক হয়। এই বয়সে বিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি দায়িত্বশীলতা অর্জনের পথও প্রশস্ত করে।

তিনি শেষ মন্তব্যে বলেন, ইসলাম বিয়েকে শুধু উৎসাহই দেয়নি, বরং এর বাস্তবায়নের জন্য সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনাও দিয়েছে। যেমন:;অপব্যয় ও অপচয় পরিহার, সংযম ও আত্মতুষ্টির চর্চা,নঅপ্রয়োজনীয় কঠোরতা এড়িয়ে চলা ইত্যাদি।

যদি আমরা এই ইসলামি নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করি, তবে বিয়ের পথে বিদ্যমান বহু বাধা সহজেই দূর হয়ে যাবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha