হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১৩ই জুলাই, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বকচরা গ্রামে অনুষ্ঠিত হলো ৭২ তাঁবুর শোকানুষ্ঠান, যা কারবালার করুণ ইতিহাস এবং আহলে বাইতের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে আয়োজিত হয়। এই বার্ষিক অনুষ্ঠানটি এবার পঞ্চম বর্ষে পদার্পণ করল।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে আল হুজ্জাত (আ.) একাডেমি, আর সার্বিক সহযোগিতায় ছিল আঞ্জুমানে নাসেরানে মাহদী (আ.)-এর নিবেদিত সদস্যরা। এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ফাতেমা জাহেরা (সা.)-এর পুত্র ইমাম হুসাইন (আ.) এবং তাঁর ৭১ জন সাহসী সাথীর কারবালার মরু প্রান্তরে দ্বীনের জন্য আত্মত্যাগের স্মৃতি উজ্জীবিত রাখা এবং তাঁদের মা ফাতেমা (সা.)-কে শোকের মধ্যেও সম্মান ও সান্ত্বনা জ্ঞাপন করা।
অনুষ্ঠানে কারবালার শহীদদের স্মরণে ৭২টি পৃথক তাঁবু স্থাপন করা হয় — প্রতিটি তাঁবু একটি শহীদের প্রতীক হিসেবে দাঁড় করানো হয়। এই তাঁবু গুলোতে শোকপ্রবণতা, মার্সিয়া, নওহা, জিয়ারত এবং আলোচনার মাধ্যমে হৃদয়ে জাগানো হয় আহলে বাইতের ত্যাগের স্মৃতি।
বহুজেলা থেকে আগত শোকার্ত জনতা
এই শোকানুষ্ঠানে শুধু স্থানীয় আজাদাররাই নয়, অংশগ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আশেকানে আহলে বাইত। দুই ২৪ পরগণা ছাড়াও কলকাতা, মেটিয়াব্রুজ, বীরভূম, হাওড়া ও মুর্শিদাবাদ থেকে আগত শত শত মানুষ একত্রিত হয়ে এই ঐতিহাসিক শোকানুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলেন। চারপাশে ছিল "হায় হুসাইন", "ইয়া হুসাইন" ধ্বনিতে ভেসে আসা হৃদয়ের কান্না।
প্রবীণ ও প্রজ্ঞাবান বক্তাদের আবেগঘন ভাষণ
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন:
সৈয়দ রাশাদাত আলি আল কাদেরি
প্রফেসর সৈয়দ হাসান হায়দার কাজমি সাহেব
মাওলানা কাজিম আলি
সৈয়দ হাসান আব্বাস রিজভি
সৈয়দ যাকি হাসান সাব প্রমুখ।
তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে কারবালার দর্শন, আহলে বাইতের আত্মত্যাগ, ফাতেমা জাহেরা (সা.)-এর ব্যথিত হৃদয়ের চিত্র এবং বর্তমান সময়েও কারবালার চেতনার প্রয়োজনীয়তা।
শেষ কথা
বকচরার এই ৭২ তাঁবুর শোকানুষ্ঠান শুধু একটি ধর্মীয় অনুশীলন নয়, বরং এটি একটি ইতিহাস সচেতনতা, আত্মত্যাগের চেতনা ও ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানের বার্তা। প্রতি বছর এই আয়োজন নতুন প্রজন্মকে কারবালার শিক্ষা দিয়ে যায় — “অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও, সত্যের জন্য জীবন উৎসর্গ করতেও পিছপা হইও না।”
আপনার কমেন্ট