শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫ - ১০:৪২
ইরানের সেনাবাহিনী ও আইআরজিসি যেকোনো আগ্রাসনে আবারও পাল্টা আঘাত হানতে প্রস্তুত

ইরানের সেনাবাহিনী এবং ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘোষণা করেছেন, যদি শত্রু আবার আগ্রাসন চালায়, তবে তারা কঠোর ও নির্ভুল জবাব দেবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: বৃহস্পতিবার দেশটির সেনাবাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল আমির হাতামি এবং আইআরজিসি’র স্থলবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ পাকপুর তেহরানে এক বৈঠকে মিলিত হন।

বৈঠকে জেনারেল পাকপুর আইআরজিসি সদস্যদের উচ্চ মনোবল এবং বাহিনীগুলোর পূর্ণ প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে বলেন, “সশস্ত্র বাহিনী সম্পূর্ণ সমন্বয়ের মধ্যে রয়েছে এবং প্রয়োজনে আগের মতোই শত্রুর বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালাতে প্রস্তুত।”

তিনি শহীদ কমান্ডারদের স্মরণ করে সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানি জনগণের সাহসিকতা ও প্রতিরোধকে সশস্ত্র বাহিনীর সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, “জনগণের ঐক্যবদ্ধ সমর্থনের মাধ্যমে ইরানের ইতিহাসের অন্যতম জটিল যুদ্ধ ও ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।”

জেনারেল পাকপুর আরও বলেন, “ইরানি জাতি ও সশস্ত্র বাহিনীর দৃঢ়তা এই যুদ্ধে বিজয় এনেছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ। ইরান কখনও শত্রুর কাছে পরাজিত হয়নি।”

তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “যুদ্ধের শেষ দিনে দখলদার জায়োনিস্টরা প্রতিশ্রুত ‘জাহান্নামের দৃশ্য’ চোখে দেখেছে। আমরা আগ্রাসনকারীদের ছাড় দেব না। যুদ্ধ আবার শুরু হলে, ঠিক যেখানে শেষ হয়েছিল সেখান থেকেই তা শুরু হবে।”

সেনাপ্রধান হাতামিও শহীদ কমান্ডার, বিশেষ করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল সালামির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, আইআরজিসি ও সেনাবাহিনীর ঐক্য ও সহযোগিতা ইসলামি ইরানের শক্তিকে বহুগুণে বাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, “জায়োনিস্ট শাসনব্যবস্থা অঞ্চল ও বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য এক বড় হুমকি। মুসলিম জাতির শত্রু এই দখলদার শক্তি সুযোগ পেলে আশেপাশের অন্যান্য দেশকেও টার্গেট করবে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “সেনাবাহিনী ও আইআরজিসি এক খোদায়ী বাহিনী হিসেবে ইসলামি ইরানের মর্যাদা, নিরাপত্তা ও শক্তি রক্ষার লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করে যাবে।”

উল্লেখ্য, জায়োনিস্ট ইসরায়েল ১৩ জুন ইরানের সামরিক, পারমাণবিক ও আবাসিক স্থাপনায় টানা ১২ দিনের যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র নাটাঞ্জ, ফোর্ডো ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়।

এর জবাবে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী দ্রুত পাল্টা আঘাত হানে। আইআরজিসি’র মহাকাশ ইউনিট “সত্য প্রতিশ্রুতি ৩” (Operation True Promise III) অভিযানে দখলকৃত ফিলিস্তিনের বিভিন্ন জায়নিস্ট শহরে ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সৃষ্টি করে।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার প্রতিশোধে ইরান কাতারের ‘আল-উদেইদ’ ঘাঁটিতে—যা পশ্চিম এশিয়ার সবচেয়ে বড় মার্কিন ঘাঁটি—একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।

২৪ জুন শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি এই সংঘাত সাময়িকভাবে থামিয়ে দেয়।
 

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha