শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫ - ০০:২১
‘বাস্তবতার’ কাছে মাথা নত করলেন সিরিয়ার আল-শারা

আহমাদ আশ-শারা ( আল-জোলানী) ও তার দলবল ও সকল তাকফীরী, ওয়াহাবী সালাফী চরমপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এতকাল ধরে মেকি জিহাদ করে সিরিয়া সহ বিভিন্ন মুসলিম দেশে অন্যায়ভাবে রক্ত ঝরিয়েছে ও সে দেশগুলো ধ্বংস করেছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী,
https://share.google/dtAS2vsqQ7Eus0AF0
(( সম্প্রতি বাশার আল-আসাদকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসা আল-শারা শুরু থেকেই বলে আসছেন, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষ চায় না।

বাশারের সরকারের পতনের দিন থেকেই ইসরায়েল ইতোমধ্যেই সিরিয়ার সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করে দিয়েছে।)) ---- ইত্তেফাকের এই রিপোর্টের সর্বশেষ এই অংশটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে তথাকথিত তাকফীরী ওয়াহাবী সালাফী ইসলামপন্থী উগ্রবাদী সন্ত্রাসী হাইআত তাহরীরিশ শাম এবং এর প্রধান (ও বর্তমান অন্তর্বর্তী কালীন সিরীয় সরকার প্রধান) আহমাদ আশশারা ( আল-জোলানী) বাশার আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে তথাকথিত জিহাদ করে সিরিয়া দখল করে আসলে মহান আল্লাহ, রাসূলুল্লাহ (সা.), ইসলাম ও মুসলমানদের সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও ভয়ঙ্কর ভীষণ শত্রু ইয়াহুদী যায়নবাদী ইসরাইলকে মহা সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে দিলে ইসরাইল সিরিয়ার বিরাট অংশ ( দক্ষিণ সিরিয়া: দার'আ ও সুওয়াইদাপর্যন্ত ) জবরদখল করেছে এবং ৬০০ বার তীব্র বোমাবর্ষণ করে দেশটির সামরিক সক্ষমতা ও অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। এই আহমাদ আশ্শরা ( জোলানী) ,তার সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হাইআত তাহরীরিশ শাম ও এবং তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তুরস্ক কার মহা খেদমত ও সেবা করল ইসরাইলের নাকি ফিলিস্তীন,গাযা, লেবানন ও মুসলিম উম্মাহর? এটা কি আসলে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, খিয়ানত ও গাদ্দারী নয়?এই ধরনের শাসক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতার জন্যই তো মুসলিম উম্মাহর এহেন চরম দুর্দশা। এরা কী আসলে সাচ্চা খাটি মুসলমান নাকি মুনাফিক?!!

বাশার আল আসাদের ভালোমন্দ দোষত্রুটি ব্যর্থতা যাই থাকুক না কেন তার শাসনামলে ইসরাইল দক্ষিণ সিরিয়া দখল এবং দেশটির সামরিক সক্ষমতা ও অবকাঠামো ধ্বংস করতে পারে নি। এখন ইসরাইল তা কেন পারল ? তাহলে বাশার আল আসাদের শাসন ও সরকার ছিল আসলে ইসরাইলের চক্ষু শূল ও স্বার্থ বিরোধী। আর বর্তমান সিরীয় সরকার প্রশাসন ইসরাইলের পুরোপুরি স্বার্থসিদ্ধি করে দিয়েছে এবং ইসরাইলের উপকারে এসেছে।

মুসলিম উম্মাহর এতবড় সারে সর্বনাশ করতে পারল তুরস্ক,আসাদ বিরোধী সন্ত্রাসী উগ্র ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক সংকীর্ণ তাকফীরী,সালাফী ওয়াহাবী গোষ্ঠী সমূহ বিশেষ করে হাইআত তাহরীরিশ শাম এবং কাতারের মতো আরব দেশসমূহ!!

ইসরাইলের বিরুদ্ধে অত্র অঞ্চলে গোড়ে ওঠা ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলনের মূলে কুঠারাঘাত করার জন্যই পশ্চিমাদের আজ্ঞাবহ ভৃত্য ও গোলাম তুরস্ক ও আরব দেশগুলো সিরিয়ায় এই সরকার পরিবর্তন করেছে।ইসরাইল শুধু এখানেই থেমে থাকবে না।

মধ্যপ্রাচ্যের বড়বড় মুসলিম দেশগুলোকে ভেঙে ছোট ছোট অসংখ্য দুর্বল মুসলিম দেশে পরিণত করবে এবং ইসরাইল হবে তখন অত্র অঞ্চলের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যেটা ব্যক্ত করা হয় নতুন মধ্যপ্রাচ্য পরিকল্পনার মাধ্যমে এবং এটা করতে পারলে ইসরাইল এক পর্যায়ে এই অঞ্চলের বিশাল ভূভাগের ওপর দখল, কর্তৃত্ব ও আধিপত্য বিস্তার করে মিসরের নীল নদ থেকে ইরাকের ফুরাত ( পূর্ব পশ্চিমে) এবং উত্তর দক্ষিণে অধিকৃত ফিলিস্তিন ( বর্তমান ইসরাইল) থেকে পবিত্র মক্কা ও মদীনা সহ হিজায পর্যন্ত বৃহৎ ইসরাইল (Greater İsrael) গঠনের চরম সর্বনাশা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। আর দক্ষিণ সিরিয়াকে সিরিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন, পূর্ব সিরিয়ায় কুর্দী স্বায়ত্ত শাসিত অঞ্চল ইত্যাদি গঠন করে সিরিয়াকে কার্যত: বিভাজন ও বিভক্ত করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজতান্ত্রিক দেশগুলো।

২০১১ সাল হতে সংগঠিত সিরীয় গৃহযুদ্ধের উদ্দেশ্যই ছিল সিরিয়া সহ সকল মধ্যপ্রাচ্যীয় দেশগুলোকে ভেঙে টুকরো টুকরো করা যার ফলে ইসরাইলের মোকাবেলায় আর কোনো শক্তিশালী দেশ অত্র অঞ্চলে বিদ্যমান থাকবে না।আর এ প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে মুসলিম দেশগুলোতে বিদ্যমান পশ্চিমাদের এজেন্ট মুনাফিকদের দিয়ে।

এখন ভালো ভাবে চিনুন ও জানুন সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন ভারপ্রাপ্ত সরকার প্রধান আহমাদ আশ-শারাকে বারবার ব্যক্ত করা তার এ উক্তি থেকে:"তারা (সিরিয়ার সরকার ও জনগণ) ইসরাইলের সঙ্গে সংঘর্ষ চায় না।"এই লোক কি দক্ষিণ সিরিয়া ও গোলান মালভূমি জবরদখল কারী ইসরাইলের বিরুদ্ধে জিহাদ ও যুদ্ধ করতে পারবে?!!

ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও জিহাদ হচ্ছে মহান আল্লাহর রাহে প্রকৃত সঠিক খাঁটি ইসলামী জিহাদ এবং দ্রূয,আলাভী,সূফী,শিয়া ও অন্যান্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জিহাদ প্রকৃত ইসলীমী জিহাদ নয়।

আহমাদ আশ-শারা ( আল-জোলানী) ও তার দলবল ও সকল তাকফীরী, ওয়াহাবী সালাফী চরমপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এতকাল ধরে মেকি জিহাদ করে সিরিয়া সহ বিভিন্ন মুসলিম দেশে অন্যায়ভাবে রক্ত ঝরিয়েছে ও সে দেশগুলো ধ্বংস করেছে। আর আসল প্রকৃত ইসলামী জিহাদের সময় অর্থাৎ ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তারা ফরয জিহাদ করা থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছে যা আশ-শারার (আল-জোলানী) উপরিউক্ত উক্তি ও বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়ে যায়।

বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে ইসরাইল কাফির-ই হার্বী ( মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কাফির) এবং কাফির-ই হারবীর বিরুদ্ধে জিহাদ করা থেকে বিরত থাকা মহা পাপ ও হারাম। অতএব ইসলামের প্রকৃত দুশমন  'মুনাফিক'দের সঠিক ভাবে চিনতে হবে।


রিপোর্ট: আব্দুল কাহহার

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha